মুখোমুখি: জোকোভিচের পথে কি কাঁটা হবেন চিচিপাস? ফাইল চিত্র
এক জনের সামনে ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের নজির ছোঁয়ার হাতছানি। নোভাক জোকোভিচ। আর এক জনের সামনে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার সুযোগ। স্টেফানোস চিচিপাস। শুধু তাই নয়, রবিবারের অস্ট্রেলীয় ওপেনের ফাইনালে এই দু’জনের মধ্যে যে জিতবে, বিশ্ব ক্রম পর্যায়ে উঠে আসবে শীর্ষে। বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের খেতাবি লড়াইয়ে এই দুটো লক্ষ্যই স্পর্শ করতে নিশ্চিত ভাবে মরিয়া হয়ে থাকবে দু’জন।
জোকোভিচ যে রকম দাপট দেখিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে, তাতে চিচিপাসের পক্ষে ওকে আটকানো খুব কঠিন। অনায়াসেই সব প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছে সার্বিয়ার চ্যাম্পিয়ন। তা ছাড়া ফাইনালে জোকোভিচ কখনও হারেনি অস্ট্রেলীয় ওপেনে। ন’বার ফাইনালে উঠে ন’বারই জিতেছে। ইন্টারনেটে দেখছিলাম, চলতি বছরেও জোকোভিচের জয়-হারের পরিসংখ্যান ১১-০। শুধু তাই নয়, মুখোমুখি লড়াইয়েও জোকোভিচ ১০-২ ফলে এগিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে ২০২১ ফরাসি ওপেনের ফাইনালে দুই সেট পিছিয়ে পড়েও চিচিপাসকে হারিয়েছিল জোকোভিচ। গ্র্যান্ড স্ল্যামে সেই প্রথম দু’সেট পিছিয়ে পড়ে কোনও ম্যাচ জিতেছিল ও।
তবে এটাও কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে, জোকোভিচ এই প্রতিযোগিতায় এখনও পর্যন্ত সে ভাবে বড় পরীক্ষার মুখে পড়েনি। গত ছ’টা ম্যাচের মধ্যে শুধু একটাই চার সেট লড়তে হয়েছে। তাও দ্বিতীয় রাউন্ডে। বাকি পাঁচটা ম্যাচই জিতেছে তিন সেটে। আর আগের থেকে চিচিপাসের খেলার ধরনও কিন্তু পাল্টেছে। এখন অনেক বেশি নেটে উঠে আসে গ্রিসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের স্বপ্ন দেখানো চিচিপাস। মানসিকতাও পাল্টেছে ওর। চতুর্থ রাউন্ডে ইটালির ইয়ানিক সিনারের বিরুদ্ধে দুরন্ত ভাবে ফিরে এসে পাঁচ সেটে জিতেছে। তাই এই চিচিপাসকে কিন্তু সহজে হার মানানো কঠিন। জোকোভিচও সেটা জানে তাই ওকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘গত কয়েক বছরে স্টেফানোস অনেক উন্নতি করেছে। রবিবার যে বেশি ভাল খেলবে সেই যেন জেতে।’’ তবে দু’জনের ফরাসি ওপেনের সেই ফাইনালের প্রসঙ্গ উঠলে আবার জোকোভিচ বলেছে, ‘‘ম্যাচটা যেহেতু আমি জিতেছিলাম, তাই ইতিবাচক সব স্মৃতিই রয়েছে এই লড়াইয়ের। শুধু শারীরিক নয়, মানসিক আর আবেগের দিক থেকেই লড়তে হয়। স্টেফানোস এমনই এক জন প্রতিপক্ষ।’’
চিচিপাসও জানে এমন সুযোগ সহজে আসবে না। তাও আবার মেলবোর্নে। যেখানে প্রচুর গ্রিসের সমর্থক থাকেন। তাই জোকোভিচের যতই সমর্থক থাকুক না কেন, চিচিপাসের হয়েও গলা ফাটানোর জন্য ভক্তের অভাব হবে না। এ জন্যই হয়তো ও ফাইনালের আগে বলেছে, ‘‘বিশ্বের এক নম্বর হওয়াটা আমার ছোটবেলার স্বপ্ন। এত কাছে এসে গিয়েছি। অস্ট্রেলিয়াতে সুযোগটা আসায় বেশি খুশি।’’
কৌশলগত দিক থেকে জোকোভিচকে দীর্ঘক্ষণ ম্যাচটা খেলতে বাধ্য করতে পারে চিচিপাস। আর ম্যাচটা বেশি সময় ধরে চললে জোকোভিচের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট। বয়েসের পার্থক্যও তো অনেকটাই দু’জনের। প্রায় এগারো বছর। জোকোভিচের বয়স ৩৫। চিচিপাসের ২৪। ফলে তারুণ্য না অভিজ্ঞতা, কে কাকে টেক্কা দিতে পারে সেটা দেখার আগ্রহ থাকবে।
সব মিলিয়ে জোকোভিচের শৈল্পিক টেনিস ও কঠিন পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতা বনাম চিচিপাসের শক্তি ও গতি নির্ভর টেনিসের লড়াই দেখার অপেক্ষায় মুখিয়ে আছি।