স্মৃতি: চুনীর প্রয়াণে এখনও শোকাচ্ছন্ন সতীর্থেরা। ফাইল চিত্র
লকডাউনের জন্য কিংবদন্তি ফুটবলার চুনী গোস্বামীর শেষ যাত্রায় ভিড় উপচে পড়েনি। ইচ্ছে থাকলেও যোধপুর পার্কের বাড়ি, হাসপাতাল বা বৃহস্পতিবার রাতের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় যোগ দিতে পারেনি অনেকেই। কিন্তু বাড়িতে বসেই ভারতীয় ফুটবলের সোনার ছেলের জন্য শোকে বিহ্বল হয়েছেন তাঁর এক সময়ের সতীর্থ থেকে প্রতিপক্ষের ফুটবলারেরা। সাউথ ক্লাবে প্রায় প্রত্যেক দিনের সান্ধ্য আড্ডায় চুনীর সঙ্গে যাঁর দীর্ঘ সময় কাটত সেই সুনীল (লাল্টু) ভট্টাচার্য থেকে ১৯৬২-র জাকার্তা এশিয়ান গেমসের সোনা জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ফ্রাঙ্কো ফরচুনাটো—সবাই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তুলে এনেছেন প্রয়াত ফুটবলারের নানা দিক। ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে যিনি চুনীর বিরুদ্ধে তিন বছর খেলেছেন, সেই লাল্টুবাবু বলছিলেন, “বল পায়ে তো গতি নিয়ে অনেকেই ড্রিবল করে। কিন্তু ডেড বল পায়ে নিয়ে সামনে থাকা ডিফেন্ডারকে ধোঁকা দেওয়া, ওটা চুনীদার পক্ষেই সম্ভব ছিল।” আর মারগাও থেকে ফ্রাঙ্কোর মন্তব্য, “ভারতীয় ফুটবলের ‘গোল্ডেন’ বয় ছিল চুনী। আমাদের সবার ডার্লিং। ন’বছর একসঙ্গে ভারতীয় দলে খেলেছি। ওর অধিনায়কোচিত ব্যক্তিত্ব দেখে বারবার অবাক হয়েছি।”
ফ্রাঙ্কো তাঁর প্রিয় সতীর্থের মৃত্যুর খবর শুনে গোয়া থেকে ফোন করেছিলেন চুনী-পুত্র সুদীপ্তকে। কেঁদেছেন ফোনের ও প্রান্ত থেকে। সুদীপ্ত জানালেন, “উনি বারবার কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন আমার ক্যাপ্টেন চলে গেল।” আর চুনীর বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বালিগঞ্জের বাড়িতে বসে ছটফট করেছেন লাল্টু, শেষযাত্রার সঙ্গী হতে পারেননি বলে। বলছিলেন, “যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু গাড়ি বার করতে গেলে পুলিশের অনুমতি লাগবে। তাই যেতে পারিনি। মনটা খুব খারাপ।’’
ফ্রাঙ্কোর মন্তব্য, “চুনীর মতো ব্যাক্তিত্ব ফুটবল মাঠে আমি কম দেখেছি। আমাদের জাতীয় দলের তখনকার কোচ রহিম সাহেবের মতো কড়া মানুষও বহুবার চুনীর কথায় নিজের সিদ্ধান্ত বদল করেছেন। এশিয়ান গেমস ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে আমি, পিকে, চুনী, বলরাম সবাই বহুবার আলোচনা করেছি। মনে আছে চুনী বলেছিল, ‘কোরিয়া যতই শক্তিশালী হোক, এত দূর এসেছি যখন, খালি হাতে ফিরব না।’ শেষ পর্যন্ত আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।”
আরও পড়ুন: স্মিথের চেয়ে কোহালিকে এগিয়ে রাখছেন চ্যাপেল