হতাশ:চোখে জল নাসিমের। সান্ত্বনা শাহিনের। ছবি: পিটিআই।
একটা সময় বল প্রতি জয়ের রানের লক্ষ্যমাত্রা কম ছিল। সম্প্রচারকারী চ্যানেলে দেখানো হচ্ছিল ভারতের জয়ের সম্ভাবনা ৮ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ৯২ শতাংশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেতা ম্যাচ মাঠেই ফেলে এল পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পরিসংখ্যান দাঁড়াল ভারতের পক্ষে ৭-১।
শুধু পাকিস্তানের আমজনতা নয়, ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন প্রাক্তনীরাও। ম্যাচের পরে চোখের জল ফেলতে দেখা যায় নাসিম শাহকে। বল হাতে তিনি তিন উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। এই একটা ছবিই যেন স্পষ্ট করে দিল সারা পাকিস্তানের হতাশার চিত্রটা। শোয়েব আখতার সমাজমাধ্যমে বলেন, “ম্যাচ দেখে হতাশ ও দুঃখিত। সারা দেশ মর্মাহত। দেশের জার্সি পরে নামা মানে দেশকে গর্বিত করার সুযোগ পাওয়া। এই সুযোগ হেলায় হারাল পাকিস্তান।” আরও বলেন, “জয়ের জন্য নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে হয়। আমার মনে হয় পাকিস্তান জেতার যোগ্য দলই নয়।”
আরেক প্রাক্তন তারকা ওয়াকার ইউনিসও রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তবে তিনি মুক্তকন্ঠে প্রশংসা করেছেন যশপ্রীত বুমরার। বলেন, “বুমরা সত্যিকারের কিংবদন্তি। গত বছর ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে আমদাবাদের মাটিতে ও একই জায়গায় নিখুঁত বল রেখেছিল। মাঠ পাল্টে গেলেও ওর সেই অভ্যাস পাল্টায়নি। এখানেও নিখুঁত লাইন লেংথে বল রেখে হারিয়ে দিল।”
পাক অধিনায়ক বাবর আজ়ম হারের জন্য দায়ী করছেন ব্যাটসম্যানদের অতিরিক্ত ডট বল (যে বলে রান হয় না) খেলাকে। তিনি বলেছেন, “আমরা বোলিং ভাল করেছি। ব্যাটিংয়ের সময় নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়েছি এবং অতিরিক্ত ডট বল খেলেছি। নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারিনি।”
তাঁদের রণনীতি কী ছিল? বাবরের কথায়, “আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে চেয়েছিলাম। স্ট্রাইক পরিবর্তন করা এবং মাঝে মাঝে বাউন্ডারি তুলে নেওয়া। কিন্তু মাঝের ওভারগুলিতে সেই স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারিনি। অতিরিক্ত ডট বল খেলেছি। প্রথম ছয় ওভারে পাওয়ার-প্লেতেও যথেষ্ট রান তুলে পারিনি।”
ড্রপ-ইন পিচে বল পড়ে ঠিক মতো ব্যাটে আসছিল না। যার ফল ভুগতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। একমাত্র মহম্মদ রিজ়ওয়ান ছাড়া কোনও ব্যাটসম্যান ২০ রানের গন্ডি পার করেননি। বাবরের কথায়, “পিচ ভালই ছিল। কয়েকটি বল পড়ে মন্থর গতিতে আসছিল।” পাকিস্তানের গ্রুপ পর্বে বাকি আর দু’টি ম্যাচ। প্রতিপক্ষ কানাডা এবং আয়ারল্যান্ড। সেই দু’টি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিততে হবে। সেই সঙ্গে আমেরিকাকেও আয়ারল্যান্ড এবং ভারতের বিরুদ্ধে বাকি দু’টি ম্যাচে হারতে হবে। ফলে অঙ্কের বিচারে এখনও আশা বেঁচে বাবরদের। কিন্তু পথ যে অনেকটাই কঠিন তা বলাই বাহুল্য।