রোহিত শর্মা। — ফাইল চিত্র।
রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে ভারত। প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছে তারা। পাকিস্তান হেরেছে আমেরিকার কাছে। মহারণে নামার আগে রোহিত শর্মাদের তাড়া করছে বেশ কিছু সমস্যা। তা মিটিয়ে না নিলে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে দলকে। সে রকমই পাঁচটি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করল আনন্দবাজার অনলাইন।
খারাপ মাঠ
নিউ ইয়র্কের আইজেনহাওয়ার পার্কের পড়ে থাকা সবুজ জমিকে রাতারাতি স্টেডিয়াম বানিয়ে তোলা হয়েছে। মাত্র চার মাস আগে থেকে শুরু হয়েছিল স্টেডিয়াম তৈরির কাজ। কোনও মতে তা শেষ করা হয়েছে। প্রতিযোগিতা শেষ হলেই স্টেডিয়াম হয়তো ভেঙে ফেলা হবে। এই অবস্থায় সেই স্টেডিয়াম যে আন্তর্জাতিক মানের হবে তা আশা করাই ভুল। সেটাই হয়েছে। নাসাউ কাউন্টির আউটফিল্ডের নীচে রয়েছে বালি। ফলে তা খুবই মন্থর। দৌড়তে গেলে পায়ে টান ধরে চোট লাগতে পারে। আউটফিল্ডে স্যাঁতসেঁতে ভাব রয়েছে। বৃষ্টি হলে জল বার করা শক্ত। বোর্ডের একটি ভিডিয়োয় আউটফিল্ড ও পিচ সম্পর্কে কোচ দ্রাবিড় বলেছিলেন, “মাঠটা এখনও বেশ নরম। তাই খেলোয়াড়দের হ্যামস্ট্রিং এবং কাফ মাস্লে চাপ পড়তে পারে। আমাদের এটা নিয়ে আলাদা করে কাজ করতে হবে। খেলোয়াড়েরা যাতে নিজেদের খেয়াল রাখে, সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব। পিচ দেখেও বেশ স্যাঁতসেঁতে মনে হয়েছে।”
ড্রপ-ইন পিচ
যে কোনও ক্রিকেটেই ড্রপ-ইন পিচ বেশ সমস্যার। অস্ট্রেলিয়ায় এই জিনিস হামেশাই দেখা যায়। সে দেশের প্রায় প্রতিটি মাঠেই ড্রপ-ইন পিচ। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় যে ভাবে পিচের রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় তা আমেরিকাতে আশা করা যায় না। প্রতিযোগিতা শুরুর কয়েক মাস আগে থেকে অস্ট্রেলিয়ার কিউরেটর এনে তৈরি করা হয়েছে ড্রপ-ইন পিচ। প্রথম ক’দিনেই সেই পিচ খলনায়ক। প্রায় প্রতিটি দলই অভিযোগ করেছে। প্রাক্তন ক্রিকেটার অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার জানিয়েছেন, পিচের সঙ্গে আউটফিল্ডের সংযোগস্থল যেখানে, সেটি বিপজ্জনক ভাবে উঁচু হয়ে রয়েছে। সেখান দিয়ে দৌড়নো কঠিন। বল পিচে পড়ে মন্থর হয়ে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টির মতো মারকুটে শট খেলা সম্ভবই হচ্ছে না।
আইপিএলের ক্লান্তি
টানা দু’মাস আইপিএল খেলে আমেরিকায় গিয়েছেন রোহিতেরা। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে সে ভাবে পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নিজেদের সেরাটা না দিলে জেতা অসম্ভব। যতই পাকিস্তান আমেরিকার কাছে হেরে যাক। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের গুরুত্ব সব সময়েই বেশি। আমেরিকার কাছে হারার পর পাকিস্তানের ক্রিকেটারেরা আরও বেশি তেতে থাকবেন। দু’মাস টি-টোয়েন্টি খেলার ক্লান্তি ভারতীয় ক্রিকেটারদের উপরে প্রভাব ফেলে কি না, সেটাই দেখার।
সকালে ম্যাচ
অতীতে কবে ভারত সাতসকালে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে তা কেউই মনে করতে পারছেন না। টি-টোয়েন্টি বিনোদনমূলক খেলা। রঙিন জার্সি আলোর নীচে আরও জ্বলজ্বলে হয়ে ওঠে। ভারতীয় সমর্থকদের কথা মাথায় রেখে সাতসকালে রোহিতদের খেলতে নামানো হচ্ছে। সাধারণত টেস্ট ক্রিকেট যে সময় শুরু হয় তখন নামতে হচ্ছে টি-টোয়েন্টি খেলতে। দিনের আলোয় সাদা বল দেখাতেও সমস্যা হতে পারে। এই চ্যালেঞ্জও পাকিস্তান ম্যাচে সামলাতে হবে রোহিতদের।
খারাপ পরিষেবা
আমেরিকায় ক্রিকেটীয় পরিষেবা প্রায় নেই-ই। ফলে বিশ্বকাপে যে রকম সুযোগ-সুবিধা পেয়ে রোহিতেরা অভ্যস্ত, তা হচ্ছে না। অনুশীলন করতে যেতে হচ্ছে দেড় ঘণ্টা দূরের একটি পার্কে। নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে বাকি দু’টি ম্যাচ খেলবে ভারত। স্টেডিয়ামের কাছেই হোটেলে রয়েছে দল। কিন্তু অনুশীলন করতে প্রায় ৫ মাইল দূরে কান্টিয়াজ পার্কে যেতে হচ্ছে রোহিতদের। আমেরিকায় মাঠের সংখ্যা কম। প্রতি দিনই খেলা থাকায় সেখানে অনুশীলন সম্ভব নয়। তাই বিভিন্ন পার্কে অনুশীলনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তেমনই এই পার্ক। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেছিলেন, “পার্কে অনুশীলন করতে হচ্ছে বলে সত্যিই একটু অবাক হচ্ছি। অবশ্য মজাও হচ্ছে। দেশে তো আর এই ঘটনা ঘটে না। বিশ্বকাপেও বড় বড় স্টেডিয়াম থাকে। সেখানেই অনুশীলন হয়। কিন্তু এখানে পরিস্থিতি আলাদা। পার্কেই অনুশীলন করছি আমরা।”