অভিযুক্ত কোচ সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।
দিনের পর দিন ধরে যৌন হেনস্থা করেছেন কোচ। বাংলার প্রতিশ্রুতিমান কিশোরী সাঁতারুর বিস্ফোরক অভিযোগে আলোড়িত দেশের ক্রীড়া মহল। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু অভিযুক্ত কোচ সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির নিদান দিয়েছেন।
আজ, বৃহস্পতিবার একাধিক কড়া টুইট করে রিজিজু জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বাংলার কোচ যেন কোথাও চাকরি না পান। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি কড়া পদক্ষেপ করেছি। গোয়া সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন ওই কোচ সুরজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। সুইমিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছি, সুরজিৎ যেন দেশের কোথাও চাকরি না পায়। সমস্ত ফেডারেশন এবং সর্ব ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য।’’ এখানেই থেমে থাকেননি রিজিজু।
আর এক প্রস্থ টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে ওর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথমত, এটা ঘৃণ্য অপরাধ। তাই কোচের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আমি দাবি করেছি।’’
আরও পড়ুন: দিনের পর দিন যৌন হেনস্থা, গোয়ায় কোচের দুষ্কর্মের ভিডিয়ো তুলল বাংলার কিশোরী সাঁতারু
রিজিজুর টুইটের আগেই অবশ্য গোয়া সাঁতার সংস্থা সুরজিতের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার গোয়া সাঁতার সংস্থার সচিব আব্দুল মজিদ আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আমরা এই ধরনের কোচের সঙ্গে কাজ করতে চাই না। ওঁকে আমরা বরখাস্ত করেছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো দেখার পরেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিই।’’
বছর দুয়েক আগে অভিভাবকদের অনুরোধেই সুরজিৎকে কোচ করে আনে গোয়া সাঁতার সংস্থা। কোনও দিন বাংলার কোচের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ শোনেননি তাঁরা। কিন্তু, বুধবার কিশোরী সাঁতারুর পোস্ট করা ভিডিয়ো দেখার পরে স্তম্ভিত হয়ে যান তাঁরা। আব্দুল মজিদ বলছিলেন, ‘‘ভিডিয়োটি আমাদের নজরে আসার পরেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি এই কোচকে বরখাস্ত করা হবে।’’
ওই কিশোরীর তোলা ভিডিয়ো এবং অভিযোগ নিয়ে বুধবার আনন্দবাজার ডিজিটাল খবর করার পর সুইমিং ফেডারেশনের সিইও বীরেন্দ্র নানাবতী এ দিন বলেন, ‘‘আমি তো বাচ্চা মেয়েটার কথা ভাবছি। এই অল্প বয়সেই ওকে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’’ তার পরেই সুরজিৎ সম্পর্কে নানাবতী বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা দেশের সমস্ত সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়ে আমরা জানাচ্ছি ওঁর সঙ্গে যেন কোনও সংস্রব রাখা না হয়। আইন আইনের পথে চলুক।’’
এ দিন সকালেই রিষড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া ওই কিশোরীর পরিবার। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে বলে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে।