সুশীলের নতুন কীর্তি, সিম ছাড়াই ফোন ব্যবহার করেতেন, চাঞ্চল্যকর দাবি ক্রাইম ব্রাঞ্চের। ফাইল চিত্র
যত দিন যাচ্ছে ২৩ বছরের সাগর রানা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সুশীল কুমারের নিত্য নতুন কীর্তি সামনে আসছে। অলিম্পিক্সে জোড়া পদকজয়ী কুস্তিগীরের বিরুদ্ধে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। পুলিশের নতুন দাবি গত ৪ মে ছত্রসাল কান্ডের পর থেকে পালিয়ে থাকার সময় সিম ছাড়া ফোন ব্যবহার করতেন সুশীল। এই ফোনের মাধ্যমে পরিবার, বন্ধু ও সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তিনি। সুশীলের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযোগ হল তিনি তাঁর দুটো মোবাইল ফোন, খুনের সময় ব্যবহার করা জামাকাপড় নষ্ট করে ফেলেছেন।
সুশীলের সঙ্গে যে অন্ধকার জগতের যোগাযোগ আছে, এর প্রমাণ তদন্তকারীরা আগেই পেয়েছিলেন। তবে এখন পুলিশ দুই পক্ষের সম্পর্কের গভীরতাকে আরও বিষদে জানার চেষ্টা করছে। ছত্রসাল স্টেডিয়াম কাণ্ডের পর থেকে দুই সপ্তাহেরও বেশি ফেরার ছিলেন সুশীল। পুলিশের দাবি ওই সময়ের মধ্যে সুশীল প্রায় সাত থেকে আটটি জায়গায় গা ঢাকা দিয়েছিলেন। প্রশাসনের নাগাল থেকে দূরে থাকার জন্য এই কুস্তিগীর সেই সময় সিম ছাড়া ফোন ব্যবহার করতেন। অপরাধ দমন শাখার আধিকারিকদের দাবি ইন্টারনেট ডঙ্গেল ব্যবহার করে টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে অভিযুক্ত পরিবার, বন্ধু ও সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলে জানানো হয়েছে। জেরায় সুশীল এই বিষয়টা স্বীকার করেছেন, দাবি করছে পুলিশ। তবে দুটো মোবাইল ফোন ও খুনের সময় ব্যবহার করা জামা-কাপড় তিনি কোথায় রেখেছেন, সেটা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি এই অভিযুক্ত। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।
সাগর রানার হত্যার পর হরিদ্বার ও হৃষিকেশের আশ্রমে কয়েক দিন ছিলেন সুশীল। তাই দুটো মোবাইল ফোন ও খুনের সময় ব্যবহার করা জামা-কাপড়ের খোঁজ করতে এই কুস্তিগীরকে নিয়ে দুই জায়গায় যায় পুলিশ। ছত্রসাল স্টেডিয়ামে গিয়েও খুনের ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হয়েছিল। যদিও সুশীলের বিরুদ্ধে তদন্তে সহযোগিতা না করার অভিযোগ বারবার তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া সুশীলের সঙ্গে তাঁর সহযোগীদের বয়ানের আকাশ-পাতাল তফাত রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
তবে সুশীল তদন্তে অসহযোগিতা করলেও পুলিশের দাবি এই মামলা প্রাক্তন অলিম্পিয়ানের বিরুদ্ধেই যাবে। ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া সুশীলের সহযোগী প্রিন্স ইতিমধ্যেই রাজসাক্ষী হতে চেয়েছেন। অন্য গ্রেফতার হওয়া সহযোগী বীজেন্দ্র জানিয়েছেন যে খুনের সময় বাকিদের সুশীল প্রভাবিত করেন। এমনকি তাঁর নির্দেশেই সাগর রানাকে পেটানোর ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছিল। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে এখন পুলিশের হাতে। তাই দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার দাবি সুশীলের পরবর্তী ঠিকানা জেলের গারদ।