বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা দলের সদস্য থেকে বাসচালক। এই নাটকীয় ঘটনাই সত্যি হয়েছে সুরজ রণদিভের জীবনে। শ্রীলঙ্কার এই প্রাক্তন ক্রিকেটার এখন অস্ট্রেলিয়ার রাজপথে বাস চালান। তাঁর পাশাপাশি আরও দুই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারকে দেখা গিয়েছে এই পেশায়। তাঁরা হলেন শ্রীলঙ্কার চিনথাকা জয়সিংহে এবং জিম্বাবোয়ের ওয়াডিংটন মাওয়েঙ্গা।
তাঁরা তিন জনেই চাকরি করেন ফরাসি সংস্থা ‘ত্রান্সদেব’-এ। তবে ক্রিকেট সম্পূর্ণ বিদায় নেয়নি তাঁদের জীবন থেকে। তিন জনেই ক্লাব ক্রিকেট খেলেন। তার পরেও বাধ্য হয়েছেন বাস চালানোর মতো কাজ করতে।
রণদিভের জন্ম ১৯৮৫ সালের ৩০ জানুয়ারি। সব ধরনের ক্রিকেটই খেলেছেন তিনি। রাহুলা কলেজের এই প্রাক্তনী প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে।
ডান হাতি এই অফস্পিনারের অনূর্ধ্ব ১৫ এবং অনূর্ধ্ব ১৯ স্তরে পারফরম্যান্স সবসময়েই ছিল প্রথম সারিতে। ২০০৯ সালে তিনি মুথাইয়া মুরলীধরনের জায়গায় ভারতের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলে জায়গা পান। নাগপুরে সিরিজের দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে তাঁর অভিষেক হয়। তাঁর ৫১ রানে ৩ উইকেট শিকারের সুবাদে শ্রীলঙ্কা ওই ম্যাচে জয়ী হয়েছিল ৩ উইকেটে।
২০১১ সালের বিশ্বকাপ দলে তিনি প্রথমে জায়গা পাননি। পরে আহত অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের বদলে তিনি ডাক পান। খেলেছিলেন ভারতের বিরুদ্ধে ফাইনালেও।
রণদিভের টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ২০১০ সালের ২৬ জুলাই, ভারতের বিরুদ্ধে। শেষ টেস্ট খেলেন ২ বছর পরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে শেষ বার শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ান ডে খেলেছিলেন। প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড।
১২টি টেস্টে তাঁর মোট উইকেটের সংখ্যা ৪৩। গড় ৩৭.৫১। সেরা পারফরম্যান্স ৮২ রানে ৫ উইকেট। রান করেছেন ১৪৭। ৩১টি ওয়ানডে-তে উইকেট পেয়েছেন ৩৬টি। গড় ৩৩.৭২। সেরা পারফরম্যান্স ৪২ রানে ৫ উইকেট। মোট রান করেছেন ২৮০।
২০১১ সালের আইপিএল-এ তিনি সুযোগ পান চেন্নাই সুপার কিংসে। খেলেছিলেন দু’টি মরসুম। ২০১২ সালে তাঁকে আইপিএল-এর পঞ্চম মরসুমের আগে ছেড়ে দেয় চেন্নাই। এর পর তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়েও ক্লাব ক্রিকেট খেলেন।
এর পর তিনি অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দেন। সেখানে জেলাস্তরে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। ভিক্টোরিয়া প্রিমিয়ার ক্রিকেটে তিনি ডান্ডেনং ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেন। গত বছর ডিসেম্বরে বর্ডার গাওস্কর ট্রফির সময় তিনি ডাক পেয়েছিলেন নেটে বোলিং করার জন্য।
তাঁর সঙ্গে আরও যে দু’জন ক্রিকেটার বাসচালকের কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যে চিন্তকে নমস্তে শ্রীলঙ্কার হয়ে মাত্র ৫ টি টি-২০ ম্যাচে খেলেছেন। করেছেন ৪৯ রান।
অন্য দিকে জিম্বাবোয়ের ওয়াডিংটন মাওয়েঙ্গার অভিষেক হয়েছিল ২০০২ সালে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচে। এর পর ২০০৪ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে তিনি ৩টি ওয়ানডে ম্যাচে খেলেছিলেন। কেরিয়ারের ১টি মাত্র টেস্ট খেলেছেন ভারতের বিরুদ্ধে।