বিধ্বংসী: সিপিএলে ওপেন করে নারাইনের ২৮ বলে ৫০। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনব্যাগো নাইট রাইডার্স (টিকেআর) দলের সদস্য তিনি। গত বার আইপিএলে ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। কিন্ত সে ভাবে সুযোগ না পাওয়ায় এ বার কোনও দল পাননি। আইপিএল না খেললেও সিপিএল-এ তাঁর বিধ্বংসী রূপ দেখার অপেক্ষায় ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটপ্রেমীরা। তিনি নিউজ়িল্যান্ড ও টিকেআর-এর কলিন মুনরো। ক্রিকেটবিশ্বে জনপ্রিয় ‘পাওয়ার হিটার’ হিসেবে শুরুতেই আক্রমণাত্মক শট খেলে বিপক্ষকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে সিদ্ধহস্ত।
অথচ বিস্ময় স্পিনার সুনীল নারাইনের সামনে তিনি কখনওই স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে পারেন না। টিকেআর দলের সতীর্থ হওয়ার সুবাদে নারাইনকে নেটে খেলে নিজেকে তৈরি করছেন মুনরো। কিন্তু বিস্ময় স্পিনারের বল এখনও বুঝে উঠতে পারেননি। গত বারের চেয়েও এ বারে আরও নাকি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন নারাইন। যার প্রভাব দেখা গিয়েছে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচেই। মঙ্গলবার গায়ানা ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে ১৯ রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নেন নারাইন। ২৮ বলে বিধ্বংসী হাফসেঞ্চুরি করে টিকেআর-এর জয়ের নায়ক তিনিই। ১৭ রান করেন মুনরোও।
জ়ুম কলের মাধ্যমে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে মুনরো বললেন, ‘‘গত বারের চেয়ে নারাইন যেন আরও পরিণত স্পিনার হয়ে উঠেছে। হতে পারে এত দিনের বিশ্রাম ওকে আরও তরতাজা করে তুলেছে। নেটে ওর অফস্পিন খেলতে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু লেগস্পিন ও ক্যারম বলের রহস্য ভেদ করা সত্যি কঠিন। আশা করি, এই ছন্দেই সিপিএল ও আইপিএল-এ পারফর্ম করবে নারাইন।’’
কেকেআর-এর মতো টিকেআর-এর হয়েও ইনিংস ওপেন করেন নারাইন। তিন বারের সিপিএল চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য শুরুতেই বিপক্ষের উপরে চাপ সৃষ্টি করেন। যেমনটা তিনি করলেন মঙ্গলবার। দু’টি চার চারটি ছয়ের সৌজন্যে বিপক্ষের মেরুদণ্ডে আঘাত করেন নারাইন। মুনরো গত বার পর্যন্ত ওপেন করলেও এ বার নামছেন তিন নম্বরে। মুনরো বলছিলেন, ‘‘শুরুতেই নারাইন বিপক্ষের উপরে যে চাপ সৃষ্টি করে, তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি তিন নম্বরে নামব। ডাগআউটে বসে ওর ব্যাটিং দেখতে অপূর্ব লাগে। সত্যিই উপভোগ্য দৃশ্য।’’
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনটি সেঞ্চুরির মালিক মুনরো। সিপিএলে প্রথম বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম সেঞ্চুরি আসে তাঁরই ব্যাট থেকে। পেসারদের বিরুদ্ধে বরাবরই তিনি সাবলীল। ছোটবেলা থেকে অকল্যান্ডের হয়ে খেলতেন তিনি আর লকি ফার্গুসন। জুনিয়র স্তর থেকেই নাইট পেসারের সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব তাঁর। কলিন জানিয়েছেন, লকির বিরুদ্ধে খেলার পরে আর কোনও পেসারকেই ভয়ঙ্কর মনে হয় না। গত বার বিশ্বকাপ দলেও ছিলেন মুনরো। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে সেই হৃদয়বিদারক মুহূর্তের সাক্ষী। ভারতের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয়ের সেই মুহূর্তেও ড্রেসিংরুমে ছিলেন। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও রবীন্দ্র জাডেজা ব্যাট করার সময় নিউজ়িল্যান্ড ড্রেসিংরুম বিশ্বাস করতে পেরেছিল এই ম্যাচ তারা জিতবে? কলিন স্বীকার করে নেন, ‘‘না।’’