মহড়া: সাফে সফল হতে মরিয়া সুনীল। শনিবার। এআইএফএফ
ভারতের হয়ে দু’বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন সুনীল ছেত্রী। তৃতীয় বার খেতাব জয়ের লক্ষ্যে মরিয়া ভারত অধিনায়কের কাছে এই প্রতিযোগিতার সব ম্যাচই যেন যুদ্ধ!
শনিবার দুপুরে অনুশীলনের পরে টিম হোটেলে ফিরে মলদ্বীপ থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন সুনীল। সঙ্গে ছিলেন কোচ ইগর স্তিমাচ ও সতীর্থ গুরপ্রীত সিংহ সাঁধু।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৪ অক্টোবর। কেমন চলছে প্রস্তুতি? সুনীল বললেন, ‘‘আমার কাছে প্রত্যেকটি ম্যাচই যুদ্ধের মতো। তাই শেষে মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যেতে হবে। ৯০ নয়, আমাদের ১০০ শতাংশ উজাড় করে দিতে হবে। কোনও ম্যাচই সহজ নয়।’’
গুণগত মানে ভারত এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশকে নিয়ে সতর্ক সুনীল। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাদেশ সম্প্রতি কোচ পরিবর্তন করেছে। প্রতিপক্ষ হিসেবে ওরা খুবই শক্তিশালী। গত তিন-চার মাসে আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলেছি। কঠিন লড়াই হয়েছিল।’’ ভারত অধিনায়ক যোগ করেছেন, ‘‘সব দলই উন্নতি করেছে। আমরা ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই। এখন শুধু বাংলাদেশকে নিয়েই ভাবছি।’’ গুরপ্রীতও বললেন, ‘‘এই প্রতিযোগিতার মান অনেক উন্নত হয়েছে। তাই কোনও ম্যাচই সহজ নয়।’’ মাসখানেক আগে নেপালের বিরুদ্ধে দু’টি আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি খেলেছিল ভারতীয় দল। প্রথম ম্যাচে ড্র করেছিলেন সুনীলরা। দ্বিতীয় ম্যাচে জিতেছিল ভারত। শুক্রবার মলদ্বীপকে ১-০ হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপাল যাত্রা শুরু করেছে। সুনীল বললেন, ‘‘নেপালের বিরুদ্ধে আগের দু’টি ম্যাচের ভুলভ্রান্তি শুধরে কী ভাবে উন্নতি করতে হবে তা কোচ আমাদের বুঝিয়েছেন।’’
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় দলের রণকৌশল কী হবে? ইগর খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘আমাদের পাখির চোখ ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়া। তাই জয়ের জন্য যে ভাবে খেলা উচিত, সেটাই করব।’’ শুক্রবার নেপাল বনাম মলদ্বীপ ম্যাচের উদাহরণ দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, সুন্দর ফুটবলের চেয়েও তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জেতা। বললেন, ‘‘মলদ্বীপ একাধিক সুযোগ পেয়েও সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। নেপাল একবারই প্রতিআক্রমণে উঠেছিল। এবং গোল পেয়েছিল। বাংলাদেশও হাস্যকর পেনাল্টি থেকে গোল করে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল। সুতরাং, ম্যাচ জেতাটাই আসল। কী ভাবে জিতলাম, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’’
কোচের সঙ্গে একমত সুনীল। ভারত অধিনায়কের কথায়, ‘‘দেশের হয়ে যখনই মাঠে নামি, জেতা ছাড়া অন্য কিছু ভাবি না। প্রতিপক্ষ কে, আমার কাছে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’’
রক্ষণে সন্দেশ জিঙ্ঘনের অনুপস্থিতি যে অস্বস্তি বাড়িয়েছে, মেনে নিলেন ইগর। বললেন, ‘‘অস্বীকার করার জায়গা নেই, সন্দেশের অভাব অনুভব করছি। তবে ও একা নয়, রওলিন বর্জেস, আশিক কুরুনিয়নকেও পাচ্ছি না। আশা করছি, দলের বাকি ফুটবলাররা ওদের শূন্যস্থান পূরণ করবে।’’
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য প্রস্তুতি শিবির না হওয়ার হতাশাও গোপন করেননি ইগর। বললেন, ‘‘ফিফা নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ের বাইরে গিয়ে এএফসি ও সাফ এই প্রতিযোগিতা করছে। তা ছাড়া ক্লাবগুলিও ফুটবলার ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এই সমস্যা দূর করার জন্য আমরা একাধিকবার আলোচনা করেছি এফএসডিএল ও আইএসএলের ক্লাবগুলির সঙ্গে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ কেন? ইগর বললেন, ‘‘আইএসএলের প্রস্তুতির জন্য ক্লাবগুলির কোচেরাও ফুটবলারদের চাইছিলেন। বাধ্য হয়েই শিবির করার পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে।’’ মলদ্বীপেও পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুশীলন করাতে না পারলেও দাবি করলেন, একেবারেই চাপে নেই তিনি। ইগর বললেন, ‘‘আমি কখনও চাপ অনুভব করি না। ফুটবলারদেরও চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করি। এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের জন্য প্রস্তুতি হিসেবেই এই প্রতিযোগিতাকে দেখছি।”