বিশ্বের দুরন্ত পেসাররা নিশ্চয়ই তাঁকে ক্রিজে দাঁড়াতে দেখে উৎসাহী হয়ে পড়তেন আগে। পেয়ে গিয়েছি এ বার আমাদের শিকারকে। এ রকম তেরছা স্টান্স। তার ওপর আবার আড়াআড়ি ‘শাফল’ করেন। ভিতরের দিকে বল কাট করে এলেই এলবিডব্লিউ পেতে কতক্ষণ!
বোলাররা ভেবেছেন আর স্টিভন স্মিথ ও রকম হাঁটতে হাঁটতেই মনের সুখে তাঁদের পিটিয়েছেন। কেউ কুলকিনারা করতে পারেননি, এ রমক অদ্ভুত স্টান্স নিয়েও কী করে এমন ব্র্যাডম্যানীয় প্রদর্শন ঘটিয়ে চলেছেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। অসাধারণ সব কীর্তি ভারতের মাটিতে স্পর্শ করছেন স্মিথ। টেস্টে ৫,০০০ রান পূর্ণ করলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ গড় নিয়ে। ডন ব্র্যাডম্যান ৫,০০০ রানে পৌঁছেছিলেন ৯৭.৯৪ গড় নিয়ে। ওয়ালি হ্যামন্ডের ছিল ৬১.৬১। আর স্মিথ একই সংখ্যক রানে পৌঁছলেন ৬০.৭৩ গড় নিয়ে। ভারতে এসে একই টেস্ট সিরিজে দু’টি সেঞ্চুরি করা তৃতীয় বিদেশি তিনি। আগের দু’জন ক্লাইভ লয়েড এবং অ্যালেস্টেয়ার কুক। অস্ট্রেলীয়দের মধ্যে দ্রুততম ৫,০০০-এর তালিকায় তিনি তৃতীয়। স্মিথ নিলেন ৯৭ ইনিংস। তাঁর আগে শুধু ব্র্যাডম্যান (৫৭ ইনিংস) ও ম্যাথু হেডেন (৯৫ ইনিংস)।
তবু সংখ্যার খেলায় নানা মণিমুক্তোর চেয়েও স্মিথের ব্যাটিং ভঙ্গি বেশি করে শিরোনামে। তাঁকে দেখে ব্যাটিংয়ের প্রাথমিক পাঠই সেরা ব্যাকরণ বলে মনে হচ্ছে অনেকের। বলকে দেখো, বলের কাছে ব্যাটকে নিয়ে যাও, ভাল বলকে ডিফেন্ড করো। বাজে বলকে মেরে তাড়াও। ভারতে এসে স্পিনারদের খেলার ব্যাপারেও দুঃসাহসিক মনোভাব দেখাচ্ছেন স্মিথ। পুণেতে খারাপ পিচ দেখে অশ্বিন-জাডেজাকে আক্রমণ করলেন। সুইপ, রিভার্স সুইপ মারতেও ছাড়েননি। আবার রাঁচীতে প্রথম দিনে ভাল উইকেট আছে দেখে অনেক হিসেবী ব্যাটিং করলেন।
গালি থেকে ব্যাট আসে অথচ বলের লাইন মিস করেন না। আড়াআড়ি হেঁটে আসেন তবুও টেস্টে ৯৭ ইনিংসে এলবিডব্লিউ হয়েছেন মাত্র পাঁচ বার। স্টিভন স্মিথ এখন বিশ্বব্যাপী বোলারদের বিরাট ধাঁধা।