বিস্ফোরক স্টিভন, পিছু হটলেন রাতে

রবিবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে স্টিভন বলেছেন, ‘‘অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের সময় ভারতীয় দলকে নিয়ে মাতামাতি করার কোনও কারণ ছিল না। মনে রাখতে হবে, ভারত কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করেনি। আয়োজক দেশ হিসেবে খেলার সুযোগ পেয়েছিল। তা ছাড়া আমরা একটাও ম্যাচ জিততে পারিনি।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৪:১৮
Share:

স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতি শিবির শুরু হওয়ার আগেই সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন কর্তাদের সঙ্গে স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের দূরত্ব প্রকাশ্যে। রবিবার বিকেলে নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে জাতীয় কোচ অভিযোগ করেন, ভারতের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ দলকে নিয়ে অকারণে মাতামাতি করা হয়েছে! সঙ্গে সঙ্গেই তোলপাড় পড়ে যায় ভারতীয় ফুটবলের অন্দরমহলে। সাংবাদিক বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেডারেশনের তরফে ই-মেল করে জানানো হয়, জাতীয় কোচের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে!

Advertisement

রবিবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে স্টিভন বলেছেন, ‘‘অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের সময় ভারতীয় দলকে নিয়ে মাতামাতি করার কোনও কারণ ছিল না। মনে রাখতে হবে, ভারত কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করেনি। আয়োজক দেশ হিসেবে খেলার সুযোগ পেয়েছিল। তা ছাড়া আমরা একটাও ম্যাচ জিততে পারিনি।’’

ফেডারেশন সচিব কুশল দাসকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। কিন্তু রাতের দিকে ফেডারেশের তরফে ই-মেলে পাঠানো স্টিভনের বয়ান, ‘‘আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রসঙ্গটা ছিল, অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের গোলরক্ষক ধীরজ সিংহের গত ছ’মাস ধরে মাঠের বাইরে থাকা নিয়ে। আমি বলতে চেয়েছি, ধীরজের কোনও ভুল নেই। আমাদের সবার দায়িত্ব যুব ফুটবলারদের উন্নতিতে সাহায্য করা। তাই অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ বা আই লিগে ফল অপ্রাসঙ্গিক।’’ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, জাতীয় কোচের বিস্ফোরক অভিযোগের পরেই নড়েচড়ে বসেন ফেডারেশন কর্তারা। পরিস্থিতি সামলাতে বাধ্য করা হয়েছে স্টিভনকে বয়ান পরিবর্তন করতে।

Advertisement

সাংবাদিক বৈঠকে এ দিন স্টিভন শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। সুনীল ছেত্রীদের এশিয়ান গেমস খেলার ছাড়পত্র না দেওয়া নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ভারতের অলিম্পিক সংস্থা (আইওএ)-এর বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, ‘‘এশিয়ান গেমসে খেলতে না পারাটা কতটা হতাশাজনক, বলে বোঝানো অসম্ভব।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘চার বছর অন্তর এশিয়ান গেমস হয়। গত চার বছরে ভারতীয় ফুটবলের ছবিটাই বদলে গিয়েছে। আগের এশিয়ান গেমসে যে দলটা খেলেছিল, তার সঙ্গে এই দলের পার্থক্য অনেক।’’ স্টিভনের দাবি, ‘‘এশিয়ান গেমসে নক-আউট পর্বে যোগ্যতা অর্জনের ব্যাপারে আমি শুধু আশাবাদী নই, দারুণ আত্মবিশ্বাসীও ছিলাম। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে প্রস্তুতি শিবির করার ব্যাপারটাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। অথচ এশিয়ান গেমসে খেলার অনুমতিই দেওয়া হল না। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক কিছু হতে পারে না।’’

স্টিভন ক্ষুব্ধ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য জাতীয় দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায়। গত মরসুমে আই লিগ ও আইএসএলের খুব বেশি ম্যাচে তাঁকে দেখা যায়নি স্টেডিয়ামে। ভুবনেশ্বরে সুপার কাপও দেখতে যাননি তিনি। তা হলে কী ভাবে জাতীয় দলের জন্য ফুটবলার বাছলেন? স্টিভনের জবাব, ‘‘একটা মরসুমে ২০০টি ম্যাচ দেখা কখনওই সম্ভব নয় আমার একার পক্ষে। ভারতে থাকলে ১৫-২০টা ম্যাচ দেখেছি। তবে আমাদের স্কাউটিং দলের সদস্যেরা সব ম্যাচই দেখেছেন।’’ এর পরেই মেজাজ হারান জাতীয় কোচ। বলে দেন, ‘‘স্টেডিয়ামে বসে কটা ম্যাচ দেখলাম, তার কোনও ব্যাখ্যা আমি দেব না।’’ স্টিভন স্পষ্ট করে দেন, তাঁর কাছে যোগ্যতাই শেষ কথা। আই লিগ বা আইএসএলে কারা খেলছেন তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি সেই সব ফুটবলারদের নিয়েই আগ্রহী, যারা দৌড়তে পারে। লড়াই করতে পারে। আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে সক্ষম। তাই সন্তোষ ট্রফিতে খেলা ফুটবলারকেও ডেকেছি।’’

তবে বেঙ্গালুরু এফসি জাতীয় শিবিরের জন্য উদান্ত সিংহ ও নিশু কুমারকে না ছাড়া প্রসঙ্গে আশ্চর্যজনক ভাবে শান্ত থাকলেন স্টিভন। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এএফসি কাপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছে বেঙ্গালুরু। তাই ওদের দুই ফুটবলারকে ছেড়ে দেওয়ার মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। ভারতের অন্য কোনও ক্লাবও যদি এএফসি খেলত, একই কাজ করতাম।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘বেঙ্গালুরু এর আগে সব সময়ই জাতীয় দলের জন্য ফুটবলার ছেড়েছে। কখনও সমস্যা হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement