ফাইনালের পর বান্ধবী ডোনার আলিঙ্গনে। ছবি: এএফপি
স্কুলে ফাইনাল পরীক্ষার দিন ভোরে অভিজ্ঞতাটা অনেকের হয়। দারুণ প্রস্তুতি, তবু কিচ্ছু পারব না ভেবে হাত-পা অবশ, পেটের মধ্যে মোচড়, মাথাটা পুরো ফাঁকা লাগা। শেষমেষ চরম স্নায়ুর চাপে কান্না।
ফাইনালে নামার আগে লকার রুমে ঠিক এমনই স্নায়ু-আক্রমণে কাবু হয়ে কেঁদে ভাসান যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের নতুন চ্যাম্পিয়ন স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কা!
টেনিস মহলের আদরের ‘স্ট্যান দ্য ম্যান’ পরে ট্রফি হাতে নিজেই সেই কান্নার গল্প শোনানোর সময় তাঁর মুখে চওড়া হাসি। ফ্লাশিং মেডোয় বিশ্বের এক নম্বর নোভাক জকোভিচকে সদ্য চুরমার করে জিতেছেন নিজের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব। একত্রিশ বছরের সুইস চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘‘আজ সকাল থেকেই অসম্ভব নার্ভাস ছিলাম। লকার রুমে কোচ ম্যাগনাস নরম্যানের সঙ্গে শেষ মুহূর্তের কিছু আলোচনা সারছিলাম। ম্যাচ শুরু হতে তখনও মিনিট পাঁচেক বাকি। হঠাৎ নিজের উপর সব নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ি। এমন কাঁন্না যে থরথর করে কাঁপতে থাকি।’’
এই প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যাও রয়েছে গত বছর রোলাঁ গারোয় জকোভিচকেই হারিয়ে ফরাসি ওপেন জেতা সুইসের। বলেছেন, ‘‘অনুভূতিটা কিছুটা ফরাসি ওপেন ফাইনালের মতো। আসলে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে কোর্টে নেমে আমি কিছুতেই হারতে চাই না। ট্রফির এত কাছে এসে হারা খুব কষ্টের। আমার মনে হয় কাঁদার এটাই একমাত্র কারণ।’’ আজ পর্যন্ত কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে পৌঁছে হারেনওনি। ২০১৪ অস্ট্রেলীয় ওপেন জেতেন সেরা ফর্মের রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে। ২০১৫ ফরাসি ওপেন ও এ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ট্রফি বিশ্বের এক নম্বর এবং শীর্ষ বাছাই জকোভিচকে হারিয়ে। ওয়ারিঙ্কা জানিয়েছেন, আগের দুই ফাইনালের চাপের চেয়ে এ বারটা ছিল একটু অন্য রকম। তাঁর কথায়, ‘‘সেমিফাইনাল জিতে দারুণ খুশি ছিলাম। নার্ভাস লাগা শুরু হল আজ সকাল থেকে।’’ লকার রুমে কান্না মুছে তৈরি হতে নিজেই উদ্বুদ্ধ করেন নিজেকে। ‘‘মনে মনে বলি, তুমি সেরা খেলাটা খেলছ, ফিটনেসও দারুণ। স্রেফ কোর্টে নেমে লড়াই করো। তা হলেই জেতার সুযোগ থাকবে। নিজের লাগামটা ধরো।’’