ইডেনে বিরাট কোহালি একেবারে ঠিক সময়েই ডিক্লেয়ার দিয়েছিল। ভারতকে জিততে দিল না প্রকৃতি। অকালবৃষ্টিতে প্রথম দু’দিনের খেলার বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় টেস্টের মীমাংসা হল না।
টেস্টের শেষ দিন প্রায় পুরোই শ্রীলঙ্কা ব্যাট করে দেওয়ায় ভারতের আর জেতা হল না। বিরাটের পেসাররা তো বিপক্ষকে প্রায় শেষ করেই দিয়েছিল। আর একটু সময় পাওয়া গেলে ম্যাচের শেষটা হয়তো বেশ টানটান হতো।
ইডেনের কিউরেটর ও তার দলের সদস্যদের ধন্যবাদ দিতেই হবে। এমন একটা উইকেট তৈরি করেছে ওরা, যা পুরো পাঁচ দিন একই রকম ছিল প্রায়। এমনকী, পঞ্চম দিনেও পেসাররা উইকেট থেকে বেশ সাহায্য পেয়েছে। ওদের বলে ব্যাটসম্যানদের ভুগতে হয়েছে যথেষ্ট। এবার থেকে ইডেনে এ রকম উইকেট দেখা যাবে। এই উইকেটে মাটি আর ঘাস পেসারদের সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: এক মুঠো স্বপ্ন নিয়ে ফুটবলে বিশ বীরাঙ্গনা
যে কোনও পরিবেশে দেশের সেরা বোলার ভুবনেশ্বর কুমার। ও বুঝিয়ে দিল নিজেকে কতটা উন্নত করে তুলেছে। ছেলেটা এখন ভারতীয় ক্রিকেটের সম্পদ। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় সবুজ পিচে অসাধারণ ব্যাটিং করে নিজেদের জাত চিনিয়ে দিল বিরাট কোহালি ও চেতেশ্বর পূজারা। পূজারা প্রতিকূল পরিবেশে ব্যাট করে। আর বিরাট এমন একটা সময়ে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায়, যখন দলের তাঁকে প্রয়োজন। ওই সময় ও ক্রিজে না থাকলে দলও বিপদে পড়ত। পূজারাই সেরা তিন নম্বর ব্যাটসম্যান। ও পুরো চাপটা নিজে নিয়ে বিপক্ষকে ক্লান্ত করে তোলে। আর পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক, বিরাট লড়ে যাবেই। সাতটা উইকেট যে পড়ে যাবে, এমন আশা করে হয়তো ডিক্লেয়ার দেয়নি বিরাট। কিন্তু সিরিজে এগোবার আগে শ্রীলঙ্কাকে পাল্টা চাপে ফেলার এই যে উদ্যোগ, এটাই খুব প্রশংসনীয়। প্রতি মরসুমে নিজেকে আরও উন্নত করে তুলছে বিরাট। ক্রিকেটার হিসেবে যেমন, ক্যাপ্টেন হিসেবেও। ৫০তম সেঞ্চুরির পরে যে ও বলেছে, এটা একটা সংখ্যা মাত্র, এতে পুরো সায় আছে আমার। ফিট ও ফর্মে থাকলে এমন সেঞ্চুরি ও আরও অনেক করবে।
শুক্রবার থেকে নাগপুরে টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের কথা ভেবে এই সিরিজে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট সবুজ উইকেট চাইছে। ইডেনের মতো না হলেও নাগপুরেও তাই উইকেটে কিছু ঘাস থাকবেই। ভারতীয় পেসাররা এখন ফর্মের যে উচ্চতায় রয়েছে, তাতে ওদের দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য পরখ করে দেখার এটাই সেরা সময়। স্পিনাররাও বুঝে নিতে পারবে, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে তাদের কী ভাবে বোলিং করতে হবে। ওরাও নিশ্চয়ই বাউন্সে ভরা পিচে বল করতে চাইবে ওখানে গিয়ে। দেশের বাইরে গিয়ে কী ভাবে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে, সেটাও বুঝে নিতে পারবে আমাদের ব্যাটসম্যানরা। মানসিক ভাবেও নিজেদের তৈরি করে নিতে পারবে।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে বোধহয় কাজটা আরও কঠিন হয়ে উঠতে চলেছে। ওদের আক্রমণ বিভাগকে আরও তৈরি হতে হবে। সবুজ উইকেটে সুরঙ্গা লাকমলকে সাহায্য করার মতো বোলার চাই ওদের। ভারতকে দু’বার আউট করতে হলে এ ছাড়া কোনও উপায় নেই। ওদের মনে রাখা দরকার, ঘরের মাঠে ভারতের ব্যাটসম্যানরা কিন্তু বারবার ভুল করবে না।