ইস্টবেঙ্গল ১ (র্যান্টি মার্টিন্স) মোহনবাগান ১ (কর্নেল গ্লেন)
ড্র হল। ডার্বিও শেষ হল শান্তিতে। কিন্তু ভাল ফুটবলটা খুঁজে পাওয়া গেল না। ডার্বি সব সময়ই নতুন তারকার জন্ম দেয়। এদিন সেটাও হল না। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল বল পজিশনে এগিয়ে থাকল। দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফিরল মোহনবাগান। যতটুকু যা খেলা হল দ্বিতীয়ার্ধেই। বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হওয়া যুবভারতীতে এটাই আপাতত শেষ ম্যাচ। পরের ডার্বি চলে যেতে পারে কটক বা শিলিগুড়িতে। কলকাতার দর্শকদের জন্য ছিল এই মরশুমের এটাই শেষ ডার্বি। কিন্তু কোনও গ্যালারিতেই আলো জ্বলল না খারাপ ফুটবলের জন্য। তৈরি হল না নতুন কবিতাও। ছন্দহীন ফুটবলের ধাক্কায় তাল ঠুকে গান বাঁধতে গিয়ে সুর হারালেন সমর্থকরাই। গলাগলি করেই বাড়ির পথ ধরলেন ইস্ট-মোহন দু’পক্ষই।
র্যান্টির গোল ৬৪ মিনিটে বিকাশ জাইরুর ক্রস থেকে। বক্সের মধ্যেই চলতি বলে তাঁর ভলি চলে গেল গোলে। মোহনবাগান গোলকিপার দেবজিৎ গোল লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বলের জন্য ঝাঁপানোরও সুযোগ পেলেন না। প্রথম গোলের পর মশাল জ্বললেও দ্বিতীয় গোলেই থেমে গেল ইস্টবেঙ্গল গ্যালারির উচ্ছ্বাস। জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের তখন গোল করে থামিয়ে দিয়েছেন কর্নেল গ্লেন। এই ম্যাচের বিচারে সেরা গোল এটাই। সনি বলটা সাজিয়ে দিয়েছিলেন বক্সের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া গ্লেনকে লক্ষ্য করে। সুযোগ সন্ধানী গ্লেনও ভুল করেননি। উড়ে আসা বলে মাথা ছুঁইয়ে ইস্টবেঙ্গলের গোলে বল পাঠালেন তিনি। উচ্ছ্বাস তখন উল্টো দিকের গ্যালারিতে। নৌকো ভাসল সমর্থকদের হাতে হাতে। দুই দলের মাঝমাঠ থেকে এদিন তেমনভাবে খেলাটাই তৈরি হল না। ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের ভরসা মেহতাব হোসেনকে খুঁজেই পাওয়া গেল না। বরং বিকাশ জাইরুকে দেখা গেল বেশ কয়েকবার। র্যান্টির গোলের বলটি বাড়ালেন তিনিই। উল্টোদিকে, সাহস দেখালেন মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন। ম্যাচ যখন ১-১ তখন রক্ষণ সামলানোর বদলে তিন স্ট্রাইকারে চলে গেলেন তিনি। সৌভিকের বদলে জেজেকে নামিয়ে দিলেন। কিন্তু জয়ের গোল এল না।
প্রথমার্ধের অনেকটা সময়ই লং বলেই নির্ভর করতে দেখা গেল দু’দলের ফুটবলারদের। যেন একে অপরকে মেপে নেওয়ার পালা। মেপেও কিছু লাভ হল না। কেউ কাউকে ছাপিয়ে যেতে পারল না। দুই দলের দুই অনূর্ধ্ব-২২ ফুটবলারের মধ্যে অবিনাশের ৬৫ মিনিট পর্যন্ত খেলার সৌভাগ্য হলেও মোহনবাগানের আজহারউদ্দিন খেলতে পারলেন মাত্র ১২ মিনিট। এমন নিয়মের কি মানে সেটা ফে়ডারেশনের আরও একবার ভেবে দেখার সময় এসেছে।
অনেকদিন পর উত্তেজনাহীন ডার্বি দেখল যুবভারতী। সমর্থক থেকে ফুটবলার সবাই ভাবলেশহীন অবস্থাতেই মাঠ ছাড়লেন। তার মধ্যেই পতাকা উড়ল দু’দলেরই। শেষ বেলায় স্টেডিয়ামের মেন গেটের বাইরে জমে থাকা সমর্থকদের শুধু আবদার একটু নিজের নিজের দলের হিরোদের ছুঁয়ে দেখা। যাতে রীতিমতো নাস্তানাবুদ অবস্থা প্লেয়ারদের। কিন্তু সমর্থকদের এই ভালবাসার জন্যই তো ফুটবল খেলা। সেই আবেগে গা ভাসিয়েই বাড়ির পথ ধরলেন গ্লেন-র্যান্টিরা।
আরও দেখুন
মণীশের ব্যাটে সিরিজে প্রথম জয় পেল ভারত