সুইং খেলতে ভারতীয়দের নেটে বিশেষ বল

বিরাট কোহালিদের অনুশীলনে মঙ্গলবার নতুন এক অতিথিকে দেখা গেল। কী সেটা? না, গোলাপি রংয়ের এক ধরনের সফ্‌ট বল।

Advertisement

সুমিত ঘোষ 

সাউদাম্পটন শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৬:৪৯
Share:

বৈঠক: কোচের ক্লাসে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। মঙ্গলবার। এপি

বিরাট কোহালিদের অনুশীলনে মঙ্গলবার নতুন এক অতিথিকে দেখা গেল। কী সেটা? না, গোলাপি রংয়ের এক ধরনের সফ্‌ট বল। এই বিশেষ ধরনের বল অর্ডার দিয়ে তৈরি করে আনাতে হয়েছে। যে লাল বলে টেস্ট খেলা হয় বা সাদা বলে এক দিনের ক্রিকেট, সে রকম শক্ত নয়, অনেকটা টেনিস বলের মতোই নরম। বেশি সুইং করে বলেই সেগুলো আনা হয়েছে যাতে জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রডদের জন্য তৈরি থাকা যায়।

Advertisement

জানা গেল, শিখর ধওয়নের পরিচিত এক জন এই বল নিয়ে এসেছেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এই ধরনের অনুশীলন করেছে আইপিএলে। ধওয়নের পরিচিত ইংল্যান্ড নিবাসী তরুণই তখন এই বল নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই তরুণকে দেখাও গেল ভারতীয় অনুশীলনে। কোহালি, ধওয়ন-সহ প্রায় সব ব্যাটসম্যানকেই হাত দিয়ে ছুড়ে ছুড়ে প্র্যাক্টিস দিয়ে গেলেন। হাত দিয়ে ছুড়তে হয় বলে গতি খুব একটা বেশি হয় না, কিন্তু সুইং করে। ইংল্যান্ডের পরিবেশে যে রকম বল সুইং করে, এই বিশেষ ধরনের বল হাত দিয়ে ছুড়ে নাকি তার কাছাকাছি সুইং বোলিং আনা যায়। গতি কম হলেও অসুবিধে নেই কারণ ইংল্যান্ডের পেসারদের বেশির ভাগেরই গতি কম, সুইংই তাঁদের প্রধান অস্ত্র। জানা গেল, মঙ্গলবারের অনুশীলনে বেশ উপকারই হয়েছে বলে মনে করছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরা। সেই কারণে ইংল্যান্ডে বসবাসকারী এই তরুণকে বুধবারও আসতে বলা হয়েছে।

হ্যাম্পশায়ারের মাঠে দাঁড়িয়ে এমনিতে মনে হবে, এই মাঠ হাড্ডাহাড্ডি ক্রিকেটের জায়গা নয়। এখানে স্রেফ বিনোদনই চলতে পারে। এমনই তার চারপাশের পরিবেশ। মাঠের একটা দিক দিয়ে উঠে গিয়েছে পাঁচ তারা হোটেল। একেবারে মাঠের মধ্যেই তা অবস্থিত। হোটেলের রুমের ব্যালকনিতে বসেই দিব্যি খেলা দেখা যায়। সব চেয়ে উঁচুতে রয়েছে সেই ঘরগুলো। তাই গ্যালারির জন্য ঢাকা পড়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা নেই। ক্রিকেটে বিরক্তি এসে গেলে পাশেই রয়েছে গল্ফ কোর্স। সেখানে চলে যাওয়া যেতে পারে। এ রকম একটা জায়গাতেই কি না সিরিজের সব চেয়ে ব্লকবাস্টার ম্যাচ হতে চলেছে। যদি কোহালির ভারত এখানেও জেতে ২-২ হবে। তখন আরও বেশি করে বাজতে থাকবে ডন ব্র্যাডম্যানের অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির সুর। তখন ওভালে মারমার কাটকাট ফাইনাল। আর ইংল্যান্ড জিতে গেলে এখানেই নিষ্পত্তি হয়ে গেল সিরিজ।

Advertisement

দু’দলেই উদ্বেগের কারণ রয়েছে দল নির্বাচন নিয়ে। ভারতের অনুশীলনে দেখা গেল, শুরু থেকে অশ্বিন মাঠে নেমে প়ড়েছেন। বল করলেন, ব্যাট করতেও পাঠানো হল। কিন্তু দেখে একেবারেই মনে হচ্ছে না তিনি সম্পূর্ণ ফিট। যদি সংশয় থাকে তাঁর ফিটনেস নিয়ে, ঝুঁকি নেওয়া হবে না। ভারতীয় দলে এখন যে রকম কড়াকড়ি চলছে ফিটনেস নিয়ে, তাতে মনে হয় না পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচে আধা-ফিট ক্রিকেটারকে খেলানোর ভাবনাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে।

রবীন্দ্র জাডেজাকে যে বিকল্প হিসেবে তৈরি রাখা হচ্ছে, সেটা মঙ্গলবারের অনুশীলনেও পরিষ্কার বোঝা গেল। জাডেজা বল তো করলেনই, ঘুরে ঘুরে সব ধরনের নেটে ব্যাটও করলেন। অশ্বিনকে এখনও খুব তীব্রতার সঙ্গে বল করতে দেখা যাচ্ছে না, ফিল্ডিং প্র্যাক্টিসের সময়েও কয়েক বার স্বাভাবিক মনে হল না। আজ, বৃহস্পতিবার অনুশীলনে ফিটনেস টেস্ট হওয়ার পরে দলের সেরা স্পিন অস্ত্রের ভাগ্য ঠিক হবে।

প্রথম একাদশ গড়া নিয়ে চিন্তায় থাকছে ইংল্যান্ডও। কোহালিরা অনুশীলন করে চলে যাওয়ার পরে দুপুরে মাঠে এলেন জো রুটরা। ফুটবল খেলার পরে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে দেখা গেল ‘হাডল’ করছেন তাঁরা। বক্তব্য রাখলেন অধিনায়ক রুট। সিরিজ ধরে রাখার শপথই নিশ্চয়ই নেওয়া হল। বেন স্টোকসের বাঁ হাঁটুর অবস্থা ভাল বলে জানা গেল। যদিও স্টোকস হাঁটুতে স্ট্র্যাপিং করে নামলেন। কিন্তু ক্রিস ওকসকে নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। রুটের জন্য সব চেয়ে বড় বিভ্রান্তি হচ্ছে, মইন আলিকে খেলাবেন কি খেলাবেন না। চার বছর আগে এখানে ভারতের বিরুদ্ধে ছয় উইকেট নিয়ে জিতিয়েছিলেন অফস্পিনার মইন। কাউন্টিতে তিনি ব্যাটে-বলে দুর্ধর্ষ ফর্মে আছেন। এ দিন দলের অনুশীলনে বেশ গুরুত্ব পেতে দেখা গেল তাঁকে। ট্রেন্ট ব্রিজে বুমরা, শামিদের গতি এবং বাউন্সের সামনে ভেঙে পড়া ব্যাটিং বিভাগে পরিবর্তন করবেন কি না, সেই সিদ্ধান্তও নিতে হবে রুটকে। হঠাৎই মনে হচ্ছে, ভারত অধিনায়কের চেয়ে তাঁর চাপ বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement