প্রস্তুতি: সিএবিতে শুরু সৌরভদের নির্বাচনী মহড়া। ফাইল চিত্র
সিএবি নির্বাচনে এ বারে নতুন চমক হিসেবে থাকছে ক্রিকেটারদের ভোট দানের অধিকার। লোঢা সংস্কার মেনে নতুন যে গঠনতন্ত্র হচ্ছে, তার মাধ্যমেই ক্রিকেটারদের ভোট দানের অধিকার স্বীকৃতি পেতে চলেছে। তবে শর্ত হচ্ছে, যে সব ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই অবসর নিয়ে প্রাক্তন হয়ে গিয়েছেন এবং যাঁরা ভারতের হয়ে খেলেছেন, তাঁরাই শুধু ভোট দানের অধিকার পাবেন।
এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, নিজেদের নির্ধারিত ১ অক্টোবরেই নির্বাচন করতে চায় সিএবি। যদিও কোনও পদেই ভোটাভুটি বা খুব উত্তপ্ত নির্বাচন হওয়ার পূর্বাভাস বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নেই। তবে বার্ষিক সাধারণ সভায় এ ভাবে নিয়ম মেনে বাংলার প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের উপস্থিতি এই প্রথম। আগে সিএবি নির্বাচনে ১২১টি ভোট থাকত। এ বারে বাংলা থেকে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে মোট ১৮ জন প্রাক্তন ক্রিকেটার ভোটার হচ্ছেন। তাই মোট ভোট বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৩৯। অর্থাৎ জিততে গেলে প্রার্থীকে অন্তত ৭০ ভোট নিশ্চিত করতে হবে।
এই ১৮ জনের মধ্যে অরুণ লাল, অশোক মলহোত্র, উৎপল চট্টোপাধ্যায়, শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়, প্রণব রায়দের সঙ্গে নাম রয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরও। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, কোনও ক্লাব প্রতিনিধি হয়ে নয়, সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ বার্ষিক সাধারণ সভায় আসবেন প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে। বড়িশা স্পোর্টিং থেকে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক ক্রিকেটার-বন্ধু আসতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এর মধ্যেই জল্পনা তৈরি হয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে। প্রেসিডেন্ট পদে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সচিব পদে অভিষেক ডালমিয়া নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। বাকি পদে নতুন লোক আনতে হবে, যে-হেতু লোঢা সংস্কার মেনে সরে যেতে হয়েছে বিশ্বরূপ দে, সুবীর (বাবলু) গঙ্গোপাধ্যায়দের। যুগ্ম-সচিব, কোষাধ্যক্ষ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে সৌরভদের শাসকগোষ্ঠী কাদের বসাতে চায়, তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সিএবি সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্ট সৌরভ সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঠিক করে ফেলেছেন। এ নিয়ে কোনও পক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে নারাজ শাসকগোষ্ঠী। প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করার ব্যাপারে ব্যক্তিগত সম্পর্ককে গুরুত্ব না দিয়ে বঙ্গ ক্রিকেটের উন্নতি প্রাধান্য পাওয়া উচিত বলেও দাবি উঠেছে।
সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ) চেয়েছিল, সিএবি আরও আগে নির্বাচন সেরে ফেলুক। শুক্রবারের মধ্যে সিওএ-কে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সেরে ফেলা সম্ভব নয় (যে খবর বুধবারই প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে)। নথিভূক্ত নতুন গঠনতন্ত্রও শুক্রবারের মধ্যে হাতে এসে যাবে বলে আশা করছে সিএবি। নির্বাচনী অফিসারের নাম ঘোষণা করা হতে পারে দু’এক দিনের মধ্যে। কোনও অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসারকে এই ভূমিকায় দেখা যেতে পারে।
বোর্ড সূত্রে খবর, সিওএ থেকে প্রত্যেক সংস্থাকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সত্তর বছর পেরিয়ে যাওয়া কারও ভোট দানের অধিকার থাকবে না। এই নিয়মই চূড়ান্ত এবং তা মেনেই নির্বাচন করতে হবে। ক্রিকেটারদের ভোট দানের ক্ষেত্রেও বলে দেওয়া হয়েছে সাবা করিমের মতো একাধিক রাজ্যে খেলা ক্রিকেটার যে কোনও একটি রাজ্যের নির্বাচনেই অংশ নিতে পারবেন। অরুণ, অশোক, সাবা-রা চেয়েছেন, বাংলায় ভোট দিতে। তাঁদের নাম এখানে নথিভূক্ত হয়েছে।
যে ১৮জন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার ভোট দিতে পারবেন: অরুণ লাল, অশোক মলহোত্র, সাবা করিম, উৎপল চট্টোপাধ্যায়, প্রণব রায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়, দেবাঙ্গ গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা রায়, শ্যামা শ, রুনা বসু, গার্গী বন্দ্যোপাধ্যায়, কেয়া রায়, মিঠু মুখোপাধ্যায়, দীপ দাশগুপ্ত, রোহন গাওস্কর, লোপামুদ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিয়াস সরকার।