US Open 2023

২৪০ মাস পুরুষদের গ্র্যান্ড স্ল্যাম স্পর্শ করেনি আমেরিকা! টেনিসে দাপুটে অতীত ফিরবে?

নিক বলতিয়েরি অসুস্থ হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন অতীত হয়ে গিয়েছে আমেরিকার টেনিসের সাফল্য। পরের পর বিশ্বসেরা খেলোয়াড় উপহার দেওয়া আমেরিকার টেনিসে খরা চলছে দু’দশক ধরে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৪
Share:

কোকো গফ। ছবি: টুইটার।

নিক বলতিয়েরির আফসোস কি মিটবে? উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক ঘণ্টা। ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর ৯১ বছর বয়সে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছেন বলতিয়েরি। ইউএস ওপেনে পুরুষদের সিঙ্গলসে এক জন নতুন চ্যাম্পিয়নকে দেখতে চেয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

বলতিয়েরির মতো নতুন চ্যাম্পিয়নের খোঁজে রয়েছেন আমেরিকার টেনিসপ্রেমীরাও। প্রায় দু’দশক ধরে। তাঁদের সঙ্গে বলতিয়েরির একটা পার্থক্য রয়েছে। তিনি ফ্লোরিডায় বসে চ্যাম্পিয়ন তৈরি করতেন। সেরা খেলোয়াড়কেও বাতলে দিতে পারতেন আরও উন্নতির পথ। যে উন্নতির পথ ধরে টেনিস বিশ্বকে পরের পর এক নম্বর খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে আমেরিকা।

একটা সময় ছিল, যখন আমেরিকার প্রথম সারির প্রায় সব টেনিস খেলোয়াড় চেষ্টা করতেন, বলতিয়েরির কাছে অন্তত কিছু দিন যেন অনুশীলন করা যায়। সেটা না হলেও তাঁর পরামর্শ নেওয়ার চেষ্টা করতেন। প্রায় ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত সক্রিয় ভাবে টেনিস শিখিয়েছিলেন বলতিয়েরি। অ্যান্ডি রডিক, আন্দ্রে আগাসি, পিট সাম্প্রাস, জিম কুরিয়রদের সাফল্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব ছিল তাঁর। রডিক আমেরিকার শেষ পুরুষ টেনিস খেলোয়াড়, যিনি বিশ্বের এক নম্বর হয়েছেন। যিনি ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। যিনি ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠেছেন। রডিকের আগে আমেরিকার খেলোয়াড় হিসাবে এই কীর্তি ছিল আগাসির। রডিককে হাতে ধরে ততটা শেখাননি বলতিয়েরি। মাঝেমধ্যে পরামর্শ দিতেন। ভুল শুধরে দিতেন। আগাসিকে তিনি হাতেকলমে শিখিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, টেনিসকে ভালবাসতে শিখিয়েছিলেন। কেরিয়ার স্ল্যাম জেতা আগাসি টেনিস খেলতে ভালই বাসতেন না। টেনিসপ্রেমী বাবা মাইক আগাসির চাপে শিখতে, খেলতে বাধ্য হয়েছিলেন। একটা সময় পর্যন্ত টেনিস তাঁর কাছে ছিল ‘অত্যাচার’। সিনিয়র আগাসি ইরানের হয়ে দু’টি অলিম্পিক্সে অংশ নিয়েছিলেন। ছিলেন বক্সার। পরে টেনিসের প্রেমে পড়েছিলেন। ছেলেকে টেনিস শেখাতেন নিজেই। আগাসির ইচ্ছার বিরুদ্ধে। তিনিই ছেলেকে পরে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন বলতিয়েরির অ্যাকাডেমিতে। ১০ বছর তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন আগাসি। ১৯৯২ সালে প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম (উইম্বলডন) জয়ের সময়ও তিনি বলতিয়েরির ছাত্র ছিলেন।

Advertisement

নিক বলতিয়েরি। ছবি: টুইটার।

আমেরিকার টেনিসে দ্বিতীয় কোনও বলতিয়েরি নেই। যিনি ছোটদের টেনিসকে ভালবাসতে শেখাবেন। স্বেচ্ছায় ভুলত্রুটি শুধরে দেবেন বড়দেরও। বোধহয় সে জন্যই ২০০৩ সালে রডিকের পর আমেরিকার কোনও ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন নেই। না। ভুল হল। আছেন। সেরিনা উইলিয়ামস। ২০০২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত পাঁচ বার (মোট ছ’বার) চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মহিলাদের সিঙ্গলসে। ২০১৯ সালে শেষ বার ফাইনাল খেলেছেন তিনিই। সেরিনাই আমেরিকার শেষ মহিলা খেলোয়াড় যিনি বিশ্বের এক নম্বর হয়েছেন। তবে শেষ চ্যাম্পিয়ন নন। ২০১৭ সালে শেষ বার মহিলাদের সিঙ্গলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন স্লোয়েন স্টিফেন্স। ২০১৮ সালের ফরাসি ওপেনের পর যাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমেরিকার টেনিস সুদিন পিছনে ফেলে এসেছে আগেই। সে দেশের তরুণ প্রজন্ম বাস্কেটবল, বেসবলের মতো খেলা নিয়ে বিশেষ উৎসাহী। তারা আর টেনিসকে ভালবাসছে না।

এ বারের ইউএস ওপেন কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে। পুরুষ ও মহিলা সিঙ্গলস মিলিয়ে আট জন সেমিফাইনালিস্টের তিন জন আমেরিকার। মহিলাদের সিঙ্গলসের শেষ চারে পৌঁছেছেন ম্যাডিসন কিস এবং কোকো গফ। দ্বিতীয় জন ফাইনালেও পৌঁছেছেন। পুরুষদের সিঙ্গলসের সেমিফাইনালে আমেরিকার প্রতিনিধি বেন শেল্টন। যিনি আবার অবাছাই! শেল্টন কি পারবেন ফাইনালে উঠতে? নোভাক জোকভিচকে হারাতে পারলে পারবেন। আবার অ্যারিনা সাবালেঙ্কাকে হারাতে পারলে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হবেন গফ। স্টিফেন্সের ছ’বছর পর।

বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালে তিন জন যে দেশের, সে দেশে টেনিসের দুর্দিন! তা হয়তো নয়। তবে সুদিনও নয়। একটা দীর্ঘ সময় ইউএস ওপেনের ফাইনালে শুধু আমেরিকার খেলোয়াড়দেরই দেখা যেত। তেমনই পুরুষ এবং মহিলাদের ক্রমতালিকায় এক নম্বর জায়গাও ছিল আমেরিকার দখলে। কেমন ছিল সেই দখলদারি? প্রথমে আসা যাক পুরুষদের টেনিসের কথায়। এটিপি ক্রমতালিকা শুরু হওয়ার পর প্রথম ১২ জন এক নম্বরের পাঁচ জনই আমেরিকার। ইউএস ওপেনের প্রথম ২২ বছর টানা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন আমেরিকার কোনও না কোনও খেলোয়াড়। এক বছর বাদ দিয়ে আবার টানা ২২ বছর। এমন বার বার করেছেন আমেরিকার টেনিস খেলোয়াড়েরা। আগে তো বটেই, টেনিসের ওপেন যুগেও। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত জন ম্যাকেনরো এবং জিমি কোনর্স ছাড়া কেউ জিততে পারেননি। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত খেতাব জিতেছেন সাম্প্রাস এবং আগাসি। ইউএস ওপেনে আমেরিকার একচেটিয়া দাপটের সেই শেষ। যে দাপটে ছিল সেই বলতিয়েরির ছোঁয়া। মহিলাদের টেনিসেও দাপট নেহাত কম ছিল না আমেরিকার। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত দু’সপ্তাহ বাদ দিয়ে ডব্লিউটিএ ক্রমতালিকায় এক নম্বরে ছিলেন আমেরিকার কোনও না কোনও খেলোয়াড়। মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা বা ক্রিস এভার্ট বা ট্রেসি অস্টিন। মহিলাদের প্রথম ১২ জন এক নম্বরের মধ্যে আট জন সে দেশের। আমেরিকার টেনিস খেলোয়াড়েরা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন মোট ৩৫০ বার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়েরা জিতেছেন ১৬৬ বার। তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রিটেনের খেলোয়াড়েরা জিতেছেন ৯৮ বার। অর্থাৎ, আমেরিকার টেনিস খেলোয়াড়দের দাপট ছিল সব গ্র্যান্ড স্ল্যামেই। সেখান থেকে গত ২০ বছরে আমেরিকার খেলোয়াড়েরা ইউএস ওপেন জিতেছেন পাঁচ বার। সবাই মহিলা। তার মধ্যে সেরিনা একাই চার বার।

সেরিনা উইলিয়ামস — ফাইল চিত্র।

সেই সেরিনাও টেনিসকে বিদায় জানিয়েছেন। দিদি ভিনাস উইলিয়ামস এখনও খেলছেন। তবে অতীতের ছায়া হয়ে। উইলিয়ামস বোনেদের টেনিসেও বলতিয়েরির অবদান কম নয়। এটিপি ক্রমতালিকায় প্রথম পাঁচে এখন আমেরিকার কোনও প্রতিনিধি নেই। ডব্লিউটিএ ক্রমতালিকায় প্রথম পাঁচে আছেন শুধু জেসিকা পেগুলা।

আমেরিকার টেনিসে একটা সময় সব ছিল। এখনও আছে। শুধু চ্যাম্পিয়ন নেই। সাফল্য নেই। আর নেই এক জন বলতিয়েরি। ন’মাস আগে প্রয়াত কোচের মতো অসংখ্য টেনিস কোচ রয়েছেন আমেরিকা জুড়ে। পল অ্যানাকন, ডিন গোল্ডফাইন, রিক লিচ, ব্র্যাড গিলবার্ট, স্টিভ ডেনটন, জিমি কোনর্সের মতো নাম রয়েছেন। যাঁরা এখনও নিরন্তর টেনিস খেলোয়াড় তৈরি করে চলেছেন। কিন্তু তাঁরা কেউ বলতিয়েরি নন। প্রয়াত কোচ খেলোয়াড় তৈরি করতেন না। বিশ্বাস করতেন চ্যাম্পিয়ন তৈরি করায়।

শুধু বলতিয়েরির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়েই বিশ্বের সেরা টেনিস প্রতিযোগিতা আয়োজন করা সম্ভব। কে নেই সেই তালিকায়? আগাসি, কুরিয়র, উইলিয়ামস বোনেদের সঙ্গে আছেন মনিকা সেলেস, মেরি পিয়ার্স, মারিয়া শারাপোভা, ড্যানিয়েলা হাঞ্চুকোভা, জেলেনা জাঙ্কোভিচ, নিকোলে ভ্লাডিশোভা, সাবিনা লিসিস্কি, সারা এরানি, টমি হাস, ম্যাক্স মিরনি, জেভিয়ার মালিসে, মার্টিনা হিঙ্গিস, আনা কুর্নিকোভা, মার্সেলো রিয়োস, কেই নিশিকোরির মতো নাম। শুধু এক জনের সঙ্গে সার্কিটে ঘুরতেন বলতিয়েরি। তিনি বরিস বেকার।

স্কুল পর্যায়ের পর টেনিস খেলেননি নিজে। তবু তাঁর হাত ধরে তৈরি হয়েছেন এক নম্বরেরা। কেউ কেউ এক নম্বর হওয়ার জন্য ছুটে গিয়েছেন তাঁর কাছে। আমেরিকার টেনিসের একটা বড় অংশ জুড়ে আছেন বলতিয়ারি। সেনা বাহিনীর প্রাক্তন লেফটেন্যান্টকে বাদ দিলে আমেরিকার অর্ধেক কীর্তি মুছে ফেলতে হবে।

এখনও আমেরিকার জনপ্রিয় খেলাগুলির অন্যতম টেনিস। তবু গত কয়েক বছর কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল। বলা যায় থমকে ছিল। ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিশ্বকে শাসনের প্রস্তুতি। কেমন সেই প্রস্তুতির ফল? গত ফরাসি ওপেনের মূলপর্বে খেলেছেন আমেরিকার ৩৫ জন। গত ২৮ বছরে যা কখনও হয়নি। পুরুষদের সিঙ্গলসে ১৬ জন, মহিলাদের সিঙ্গলসে ১৯ জন। ১৯৯৫ সালে ফরাসি ওপেনের সিঙ্গলসে ছিলেন আমেরিকার ৩৯ জন খেলোয়াড়। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন আগাসি আর ইউএস ওপেন জিতেছিলেন রডিক। তার পর আমেরিকার কোনও পুরুষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি। রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচের দখলে চলে গিয়েছে পুরুষদের টেনিস।

এমন দিন কিন্তু অপ্রত্যাশিত ছিল না। আমেরিকার টেনিস কর্তারা বুঝতে পেরেছিলেন পাঁচ বছরেই। ২০০৮ সালে নতুন প্রতিভা তুলে আনার উপর গুরুত্ব দেন তাঁরা। জুনিয়র খেলোয়াড়দের উন্নয়নের জন্য ২০০৭ সালে আমেরিকার টেনিস সংস্থার (ইউএসটিএ) বাজেট ছিল ১০.৪ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৮৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ২০১০ সালে সেই বাজেট বাড়িয়ে করা হয় ১৫.৬ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সারা দেশে প্রতিভাবান টেনিস খেলোয়াড়ের খোঁজ শুরু হয়। বাছাই করা খেলোয়াড়দের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন ইউএসটিএ কর্তারা। সংস্থার ফ্লোরিডা এবং ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাকাডেমি নির্দিষ্ট করা হয় বাছাই খুদেদের জন্য। সেই প্রকল্পের ফসল পেগুলা, কিস, গফ, শেল্টন, টেলর ফ্রিৎজ, ফ্রান্সিস টিয়াফো, টমি পল, সেবাস্টিয়ান কোর্ডা, ক্রিস্টোফার ইবাঙ্কস, ম্যাকেঞ্জি ম্যাকডোনাল্ড, জেজে উল্‌ফ, ব্রেন্ডন নাকাশিমা, অ্যালিসিয়া পার্কস, এমা নাভারো, পেটন স্টেয়ার্নস, ক্লারি লিউয়ের মতো খেলোয়াড়েরা। যাঁদের সকলের বয়স ১৯ থেকে ২৬-এর মধ্যে। অনেকেই এখনও তেমন পরিচিত নাম নন। যে কোনও দিন যে কোনও প্রতিযোগিতায় তাঁদের আলাদা পরিচিতি তৈরি হতে পারে।

আন্দ্রে আগাসি। ছবি: টুইটার।

ইউএসটিএ প্লেয়ার ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার মার্টিন ব্ল্যাকমন বলেছেন, ‘‘নতুন শতাব্দীতে আমরা সত্যিই ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিলাম। আমাদের সুন্দর অতীত ফিরিয়ে আনতে হলে কিছু করতেই হত। একাধিক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই চেষ্টা শুরু করা হয়েছিল। বিশ্বের সেরা কোচদের নিয়ে আসা হয়েছিল। অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। দেশের কোনও অংশ বাদ রাখিনি আমরা। ১৬ বা তার থেকে কম বয়সের প্রতিভাদের খোঁজ শুরু করা হয়। ২০১৫ সাল থেকে জুনিয়র গ্র্যান্ড স্ল্যামগুলোতে আমরা আবার দাপট দেখাতে শুরু করেছি। গত কয়েক বছরে আমাদের ছেলেমেয়েরা সব জুনিয়র গ্র্যান্ড স্ল্যামে সাফল্য পেয়েছে। এ বার সিনিয়র পর্যায়েও সেটা ধরে রাখতে হবে।’’ ব্ল্যাকমন আত্মবিশ্বাসী টেনিসপ্রেমীরা আবার আমেরিকা বনাম অবশিষ্ট বিশ্বের লড়াই দেখার সুযোগ পাবেন।

কার্লোস আলকারাজ়, ইয়ানিক সিনার, হোলগার রুন, ক্যাসপার রুড, স্টেফানো চিচিপাস, আন্দ্রে রুবলেভ, আলেকজান্ডার জেরেভ, লোরেনজ়ো মুসেট্টি, ইগা সিয়নটেক, এলিনা রাইবাকিনা, মার্কেটা ভন্ড্রোসোভাদের সঙ্গে আগামী এক দশক আমেরিকার একঝাঁক টেনিস খেলোয়াড়ের লড়াই হতে পারে। ঠিক যেমন হত গত আট-নয়ের দশকে।

বেন শেল্টন। ছবি: টুইটার।

২৪০ মাস পুরুষদের গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি স্পর্শ করার সুযোগ পায়নি আমেরিকা। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই হিসাব ৭৫ মাসের। আরও হয়তো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে ৬ ফুট ১০ ইঞ্চির জন ইসনারের মতো টেনিস খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে আমেরিকা। কিন্তু দেশের টেনিসকে প্রত্যাশিত উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারেননি তিনি। বিশ্বের প্রথম ১০-এর মধ্যে পৌঁছলেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলার সুযোগ হয়নি তাঁর। ইসনারকে হারতে হয়েছে ভারতের সোমদেব দেববর্মনের কাছেও। স্যাম ক্যুরে, মার্ডি ফিসেরাও পারেননি। কেন টেনিসের প্রতি আগ্রহ কমেছিল? আমেরিকার টেনিস বিশেষজ্ঞরা দু’টি কারণ খুঁজে পেয়েছেন। প্রথম, বিভিন্ন খেলার প্রসার। দ্বিতীয়, টেনিস থেকে সাফল্য উবে যাওয়া। রডিকও বলেছেন, ‘‘কোনও খেলায় সাফল্য না থাকলে ছোটরা সেই খেলার প্রতি আকৃষ্ট হয় না। আমাদের সেটাই হয়েছিল।’’

দেশকেও বহু সাফল্য এনে দিয়েছেন আমেরিকার টেনিস খেলোয়াড়েরা। ডেভিস কাপে সব থেকে বেশি ৩২ বার চ্যাম্পিয়ন তারা। মহিলাদের ফেডারেশন কাপেও সব থেকে বেশি ১৮ বার চ্যাম্পিয়ন আমেরিকা। ব্ল্যাকমনের আশা, অতীতের মতো তাঁদের ভবিষ্যতও দাপুটে হবে। ২০২৩ সাল আশা দেখাচ্ছে। ২০ বছর বোধহয় একটু বেশিই হয়ে গিয়েছে আমেরিকার মতো ক্রীড়া উন্নত দেশের জন্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement