সমীর। শেষরক্ষা হল না।
কাপ আর ঠোঁটের দূরত্বটা থেকেই গেল।
হংকং ওপেন সুপার সিরিজে জোড়া পদকের আশা পূরণ হল না গোপীচন্দের ছাত্র ও ছাত্রীর— সমীর বর্মা ও পিভি সিন্ধুর। দু’জনেই ফাইনালে হেরে গেলেন।
রবিবার সিন্ধু ১৫-২১, ১৭-২১ হারলেন চিনা তাইপের তাই জু ইং-এর কাছে। ৪১ মিনিটের লড়াইয়ে। পুরুষদের সিঙ্গলসে ভারতের চমক সমীর বর্মাও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। হংকংয়ের অঙ্গুস লং-এর কাছে তিন গেমের লড়াইয়ের পর সমীর হেরে যান ১৪-২১, ২১-১০, ১১-২১।
সিন্ধুকে এ দিন হারিয়ে অলিম্পিক্সে হারের বদলাও নিলেন তাই জু। সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে গেলেন ৫-৩।
তবে হারলেও নিজের পারফরম্যান্সে হতাশ নন ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের পোস্টারগার্ল। ‘‘আজ দিনটা তাই জু-র ছিল। আমি খারাপ খেলিনি। কিন্তু ও নেটে ভাল খেলছিল। কোনও ভুল করেনি। তবে নিজের পারফরম্যান্সে খুশি,’’ বলেন সিন্ধু। সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘যা হয়েছে হয়েছে। আমি চেষ্টা করব আরও ভাল প্রস্তুতি নেওয়ার। তবে এটা বলব, পরপর দুটো টুর্নামেন্টই ভাল গেল। আজ না জিততে পারায় কিছুটা হতাশ। তবে সব মিলিয়ে ভালই কেটেছে। তাই জু-কে অভিনন্দন।’’
তাই জু-র বিরুদ্ধে কী ভুল হল তাঁর, প্রশ্ন করলে সিন্ধু বলেন, ‘‘আমি ওর বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক বার খেলেছি। কোর্টে ও খুব ধূর্ত। যে রকম শট সে রকমই প্রতিপক্ষকে ধাঁধায় ফেলার ক্ষমতা। আমি এগুলোর জন্য তৈরি ছিলাম। কিন্তু দিনের শেষে এক জনই জেতে। এক জনকে হারতে হয়।’’
গত সপ্তাহেই সিন্ধু প্রথম সুপার সিরিজ জিতেছেন। চিন ওপেনে। এ দিন জিতলে পরপর দুটো সুপার সিরিজ হাতে তোলার সুযোগ থাকত। ২২ বছরের সমীরের সামনে আবার ইতিহাসের হাতছানি ছিল। দ্বিতীয় ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে হংকং ওপেনে পুরুষদের সিঙ্গলস জেতার। ১৯৮২-তে প্রকাশ পাড়ুকোনের পর আর যা কেউ পারেননি। মধ্যপ্রদেশের ছেলে সমীরের দাদা সৌরভ বর্মাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্লেয়ার। দাদার মতোই ব্যাডমিন্টনে হাতেখড়ি হওয়ার পর ২০১০-এ হায়দরাবাদে গোপীচন্দের ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে চলে এসেছিলেন সমীর। ২০১১-এ এশিয়ান ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জেতেন তিনি। হংকংয়ে ফাইনালে উঠতে অঘটন ঘটিয়েছেন বিশ্বের তিন নম্বর ডেনমার্কের ইয়ান ইয়র্গেনসেনকে হারিয়ে।
তবে ফাইনালে হারলেও বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশে উঠে আসার আত্মবিশ্বাস পেয়ে গিয়েছেন বলে দিলেন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সমীর। যাঁর এখন র্যাঙ্কিং ৪৩। তিনি বললেন, ‘‘ভাবিনি ফাইনালে উঠব। প্রথম ফাইনাল বলে একটু টেনশন ছিল। ম্যাচের আগে তাই একটু চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। তৃতীয় গেমে শেষের দিকে ক্লান্তির সমস্যাও ছিল। তবে ফাইনালে হারলেও র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশে উঠে আসার মতো আত্মবিশ্বাস পেয়ে গিয়েছি।’’