ছবি রয়টার্স।
রবিবার ভোরবেলায় ভরপুর ফুটবল-বিনোদন উপভোগ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। দিন শুরু হবে কোপা আমেরিকা ফাইনালে ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ দিয়ে। আর রাতে ঘুমোতে যাব ইউরো ফাইনালে ইংল্যান্ড- ইটালির সম্মুখসমর দেখে।
ইউরোপের ফুটবলে যদি গতি, শক্তি এবং মস্তিষ্কের প্রয়োগ থাকে, তা হলে লাতিন আমেরিকার ফুটবলে আছে শিল্প, আবেগ, হৃদয়ের ডাক আর ব্যক্তিগত দক্ষতার প্রদর্শনী। আর এই দু’য়ের মধ্যে আমাকে টানে লাতিন আমেরিকার ফুটবল।
খেলোয়াড় জীবন কেটেছে পেলেকে দেখে। কোচিং ও ফুটবল প্রশাসনে আসার সময়ে দিয়েগো মারাদোনা। আর এখন দু’চোখ ভরে দেখি লিয়োনেল মেসির ফুটবল-জাদু।
স্পেনীয় ফুটবলে বার্সেলোনা বনাম রিয়াল মাদ্রিদের ‘এল ক্লাসিকো’ আমাদের মন জয় করেছে। যদিও আমার কাছে ‘সুপার ক্লাসিকো’ (ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার ফুটবল-দ্বৈরথকে এই নামেই ডাকা হয়) রোমাঞ্চ অনেক, অনেক বেশি। কোপা ফাইনালে সে রকমই ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। যেখানে দুই দলের দুই সেনাপতি মেসি ও নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র।
দু’জনেই এখনও পর্যন্ত কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। ফলে রবিবার রিয়োর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে এই দু’জনের মধ্যে যিনি জিতবেন, তাঁর মুকুটে জুড়বে নতুন পালক।
ফুটবলে ভবিষ্যদ্বাণী বলে কিছু হয় না। আর ব্রাজিলের মতো পাঁচ বারের বিশ্বজয়ী দলের বিরুদ্ধে তা করা আরও কঠিন। তা সত্ত্বেও আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে এগিয়ে রাখছি মেসির দুরন্ত পারফরম্যান্সের জন্য। চার গোল করে ও পাঁচ গোল করিয়ে লিয়োনেল স্কালোনির দলটার হৃৎপিণ্ড তো মেসি-ই। ও খেলতে শুরু করলেই নীল-সাদা জার্সির দলটা পিয়ানোর মতো বেজে ওঠে। এটা মেসির চতুর্থ কোপা ফাইনাল। সম্ভবত শেষও। ফলে এই ফাইনাল স্মরণীয় করে রাখার জন্য মেসি মরিয়া হবেনই।
আর্জেন্টিনা ২৮ বছর কোনও আন্তর্জাতিক খেতাব জেতেনি। আর নতুন মরসুমে বার্সেলোনার সঙ্গে মেসির চুক্তি নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। ফলে মেসি বার্সেলোনা-সহ ইউরোপের ক্লাবগুলিকেও বার্তা দিতে চাইবেন, আমি এখনও ফুরিয়ে যাইনি। যদিও অতিরিক্ত মেসি-নির্ভরতাই স্কালোনির দলের অন্যতম দুর্বলতা। দলটা মাঝেমধ্যে ছন্দও হারিয়ে ফেলে। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে এই ভুল করা চলবে না। তিতের প্রশিক্ষণাধীন এই ব্রাজিলে নেমার, দানিলো, রেনান লোদির মতো বুদ্ধিমান ফুটবলারেরা আছেন, যাঁরা মুহূর্তেই অঘটন ঘটাতে পারেন।
ব্রাজিলকে জিততে গেলে দক্ষতার শীর্ষে থাকতে হবে হোল্ডিং মিডফিল্ডার কাসেমিরোকে। ওঁকেই দায়িত্ব নিতে হবে মেসিকে আটকানোর। মনে হয়, পাল্টা চাপ দিতে এই ম্যাচে আর্জেন্টিনা কোচ ব্যবহার করতে পারেন নিকো গঞ্জালেসকে। যা পরীক্ষায় ফেলতে পারে ব্রাজিল রক্ষণকেও। তিতের দলের সমস্যা অনভিজ্ঞতা। এই জায়গায় মেসি, ওটামেন্ডিরা অনেকটাই এগিয়ে। কার্ড সমস্যায় গ্যাব্রিয়েল জেসুস না থাকায় নেমারের উপরে চাপ ও দায়িত্বও দু’টোই কিন্তু বেশি থাকবে এই স্বপ্নের ফাইনালে।