কলকাতার বিরুদ্ধে ম্যাচ-জেতানো ইনিংস খেলেছেন শুভমন। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহি উড়ে আসার চার সপ্তাহ আগে থেকে নেট প্র্যাক্টিস শুরু করেছিলেন শুভমন গিল। মোহালিতেই চলে তাঁর অনুশীলন। সঙ্গী যুবরাজ সিংহ। প্রাক্তন ভারতীয় অলরাউন্ডারের সঙ্গে দীর্ঘদিন অনুশীলন করে এবং তাঁর পরামর্শ নিয়ে এ বারের আইপিএল খেলতে এসেছেন পঞ্জাবের এই তারকা। যার প্রভাব দেখা গিয়েছে মরসুমের দ্বিতীয় ম্যাচেই। সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে ৬২ বলে অপরাজিত ৭০ রান করে নাইটদের ম্যাচ জেতান তরুণ ব্যাটসম্যান।
প্রথম ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছিলেন শুভমন। যা দেখে প্রচণ্ড চটে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা লখিন্দর সিংহ। ছেলেকে ফোন করে মনে করিয়ে দেন, ‘‘যুবরাজ যা তোকে শিখিয়েছে, সে সব কি ভুলে গেলি?’’ কী শিখিয়েছিলেন যুবরাজ? রবিবার আনন্দবাজারকে ফোনে লখিন্দর বলেন, ‘‘যুবির সঙ্গেই লকডাউনে অনুশীলন করেছে শুভমন। আইপিএল খেলতে যাওয়ার আগে সব রকম পরামর্শ দিয়ে পাঠিয়েছে যুবরাজ।’’ কী বলেছিলেন? লখিন্দরের উত্তর, ‘‘নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন শুভমনের সঙ্গে। কী ভাবে ম্যাচ বার করত যুবি। রান তাড়া করার ক্ষেত্রে দু’ওভার রান কম হলে যে তৃতীয় ওভারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়, সে সব ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছিল যুবি। শুভমন আগে খুব অধৈর্য ছিল। স্কোরিং শট না পেলে বড় শট খেলতে মরিয়া হয়ে উঠত। যুবিই ওকে বুঝিয়েছে, এ ভাবে ঝুঁকি নিয়ে উইকেট দিয়ে এলে কেউ প্রতিভার দাম দেবে না। সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার হয়েই থেকে যাবে, তারকা হবে না।’’
শুভমনের বাবার কথায়, ‘‘ও কখনও আগের ইনিংসের কথা মনে রাখে না। এই ধরুন শেষ ম্যাচে ও রান পেয়েছে। তবে সেটা কিন্তু পরের ম্যাচে ওর মাথায় থাকবে না। ও জানে একটি ম্যাচে রান করে পরের ম্যাচে ব্যর্থ হলে সেই সাফল্য কেউ মনে রাখে না। ওর মধ্যে এই মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করেছে যুবরাজই।’’
দুবাই, আবু ধাবির মতো বড় মাঠে ছয় মারার জন্য প্রয়োজন শক্তির। দীর্ঘক্ষণ জিমে সময় কাটিয়ে শক্তি বাড়িয়ে মরুশহরে উড়ে গিয়েছেন শুভমন। পুল, হুক শটে আরও নিয়ন্ত্রণ রপ্ত করেছেন যুবির থেকেই। লখিন্দরের কথায়, ‘‘যুবি কোনও দিন নেটে ঢুকিয়ে বলত, আজ শুধু পুল আর হুক শট প্র্যাক্টিস করবি। সেটাই চলত, দেড়-দু’ঘণ্টা।’’
দূরারোগ্য ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো ও তার চিকিৎসার জন্য যুবির বিশেষ উদ্যোগ ‘ইউ উই ক্যান’। সেই সংস্থার লোগো ব্যাটে লাগিয়ে আইপিএল খেলছেন শুভমন। ব্যাটের লোগো থেকে কোনও অর্থ আয় হয় না শুভমনের। বরং তিনি প্রত্যেক মাসে অর্থ দান করেন যুবির সংস্থায়। শুভমনের বাবার কথায়, ‘‘এ ভাবেই গুরুদক্ষিণা দিচ্ছে শুভমন। আশা করব, এ রকমই ভাল মানুষ যেন থাকতে পারে ও।’’