লোঢা কমিশন বনাম ভারতীয় বোর্ড প্রবল দড়ি টানাটানির মধ্যে নতুন টানাপড়েন দেখা দিল। অভিমানী বোর্ড প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহর ঠিক করে ফেললেন যে, ভারতীয় বোর্ড ছেড়ে তিনি চলে যাবেন।
মনোহর নিজে মন্তব্য করতে রাজি নন। কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠমহল বলছে যে ভাবে সুপ্রিম কোর্টে বোর্ডের ভাবমূর্তি দিনের পর দিন নষ্ট হচ্ছে, যে ভাবে আদালতে হেনস্থা হতে হচ্ছে রোজ, তার পর বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ার আর ধরে রাখতে চাইছেন না মনোহর। বরং একপ্রকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, আইসিসিতে চলে যাবেন।
বলা হচ্ছে, বোর্ডে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসে শশাঙ্ক চেষ্টা করেছিলেন বোর্ড প্রশাসনে উদারীকরণ আনতে। স্বচ্ছ্বতা আনতে। সংস্কার ঘটাতে। কিন্তু তার পরেও বিচারপতি লোঢা এতটাই আক্রমণাত্মক বোর্ডের প্রতি যে শশাঙ্কের মনে হচ্ছে, তাঁর এ সবের মধ্যে থাকার আর দরকার নেই। ঘনিষ্ঠমহলে মনোহর বলেছেনও যে, আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন জমা করার শেষ দিন ৯ মে। সেখানেই চলে যাবেন। অবস্থা অনেকটা যেন বাংলা প্রবাদ ‘রইল ঝোলা, চলল ভোলা’-র মতো। এত কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে থাকার আমার দরকার নেই। আমি আইসিসিতে চললাম। ভারতীয় বোর্ড থাক পড়ে।
আর তিনি নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন নন বলে তাঁর মতো একাধিক পদে থাকবেনও না। শশাঙ্কের ঘনিষ্ঠমহল বলছে, শ্রীনিকে একসঙ্গে তিন-চারটে পদে থাকতে দেখা যেত। কিন্তু শশাঙ্ক-দর্শন বরাবর বিশ্বাস করে এসেছে এক ব্যক্তি এক পদ নীতিতে। বোর্ডে থাকলে শুধু বোর্ডে। আইসিসিতে থাকলে আইসিসিতে। আইসিসিতে থাকলে বোর্ডে কোনও অবস্থাতে নয়।
আর বোর্ড প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের কথা শুনে মৃদু ভূকম্পন দেখা দিয়েছে বোর্ডমহলে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, শশাঙ্ক যদি সব ছেড়েছুড়ে শেষ পর্যন্ত চলে যান, হাল ধরবেন কে? নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে চেয়ারে বসবেন কে? প্রেসিডেন্ট হিসেবে শশাঙ্ক এসেছিলেন নিরঙ্কুশ সমর্থন নিয়ে। আর শশাঙ্ক চলে গেলে তাঁর জায়গার বসার মতো কোনও নাম এখনও নেই ভারতীয় বোর্ডের হাতে। কোনও বিকল্পই নেই। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। সবাই এখন অপেক্ষা করছেন সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির। দেখতে চাইছেন, সেখানে কী হয়।