কারিগর: অরুণের অধীনেই বদলে যাচ্ছে বাংলা। ফাইল চিত্র
গত মরসুমে সাইরাজ বাহুতুলের সঙ্গে মেন্টর হিসেবে কাজ করা শুরু করেছিলেন অরুণ লাল। কিন্তু রঞ্জি ট্রফির প্রথম রাউন্ডেই শেষ হয়ে গিয়েছিল বাংলার যাত্রা। দীর্ঘ চার বছর ধরে বাংলাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সাইরাজ বাহুতুলেকে সরিয়ে অরুণ লালকেই কোচিংয়ের দায়িত্ব দেয় সিএবি। বদলানো হয় অধিনায়কও। মনোজ তিওয়ারির পরিবর্তে দায়িত্ব পান অভিমন্যু ঈশ্বরন।
নতুন কোচ ও অধিনায়ক নিয়ে শুরু হয় বাংলার নতুন অভিযান। মরসুম শুরু হওয়ার দু’মাস আগে কোচ জানিয়ে দেন, ইয়ো ইয়ো টেস্ট পাশ না করলে দলে জায়গা পাবেন না কেউ। ফিটনেস ট্রেনিং না করে ইয়ো ইয়ো পরীক্ষায় পাশ করা সম্ভব নয়, জানতেন প্রত্যেকে। জুলাই থেকে তাই শুরু হয় প্রাক-মরসুম শিবির। ফিজিক্যাল ট্রেনার সঞ্জীব দাসের তত্ত্বাবধানে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন বাংলার ক্রিকেটারেরা। ২৮ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেন অর্ণব নন্দী। পেশির জোর বাড়িয়ে আরও গতিময় ঈশান পোড়েল। টানা ম্যাচ খেলেও চোটমুক্ত প্রত্যেকে।
গত বছর যাঁরা মরসুম শেষ হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন, তাঁদের নিয়েই এ বারের মরসুম শুরু করে বাংলা। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি ও বিজয় হজারে ট্রফির প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়ার পরে অনেকেই মনে করেছিলেন, গত মরসুমের ছবিই ফিরতে চলেছে। কিন্তু অরুণ লাল বলে দিয়েছিলেন, ‘‘রঞ্জি ট্রফিতে এই দলই ঘুরে দাঁড়াবে।’’ কথা রেখেছেন কোচ। তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে টানা দু’ম্যাচে রাজস্থান ও পঞ্জাবকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলা।
শুক্রবার জয়ের পরে ফোনে ধরা হল অরুণ লালকে। কী করে খোলনলচে বদলে ফেললেন দলের মনোভাবের? কী করেই বা পরিবর্তন হল ফিটনেস সংস্কৃতির? আনন্দবাজারকে ব্যাখ্যা করলেন বাংলা দলের কোচ।
ফিটনেস বিপ্লব: শুরুতেই বলে দেওয়া হয়েছিল, রঞ্জি ট্রফি জেতার জন্য আগে দেশের সব চেয়ে ফিট দল হয়ে উঠতে হবে। জুলাই থেকে কঠোর পরিশ্রম শুরু করেছিল দল। এ বারই প্রথম বাংলার ক্রিকেট সংস্কৃতিতে জায়গা নিল ইয়ো ইয়ো টেস্ট।
চাপ সামলানোর ক্ষমতা: পারফর্ম করো, না হলে বাইরে বসো। অধিনায়ক হোক অথবা সহ-অধিনায়ক। সবার ক্ষেত্রে নিয়ম একই।
দলের পরিবেশ: গত বছর শুনেছিলাম দলে বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। সবাই একসঙ্গে ডিনার করত না। সিনিয়রদের সঙ্গে জুনিয়রেরা সে ভাবে কথা বলত না। বলে দিয়েছিলাম, একসঙ্গে রাত ৮টার মধ্যে ডিনার করব। যে খাবে না, পরে আর পাবে না।
সেরা আবিষ্কার শাহবাজ-আকাশ: যে ম্যাচেই বাংলা চাপে পড়েছে, দলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে শাহবাজ। ডিন্ডা বাদ পড়ার পরে বাংলার পেস বোলিং বিভাগ সামলেছে আকাশ দীপ। ওর বোলিং দেখে বোঝা যাবে না, এ বারই প্রথম রঞ্জি ট্রফি খেলছে।