Wrestling

কুস্তির ট্রায়াল নিয়ে অশান্তির আঁচ, স্বচ্ছতার দাবিতে মোদী-শাহদের চিঠি কুস্তিগিরদের

এশিয়ান গেমসের জন্য দু’পর্বে ট্রায়াল নিয়ে ক্ষুব্ধ কুস্তিগিরদের একটা বড় অংশ। তাঁদের মধ্যে আন্তর্জাতিক পদক জয়ীরাও আছেন। প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার হঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ ১৩:৫১
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: টুইটার।

এশিয়ান গেমসের ট্রায়াল যেন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়, এই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন কয়েক জন মহিলা কুস্তিগির। একই দাবিতে তাঁরা চিঠি দিয়েছেন সর্বভারতীয় অলিম্পিক সংস্থা (আইওএ) এবং স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে (সাই)। চিঠি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকেও।

Advertisement

এশিয়ান গেমস এবং বিশ্ব কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রায়ালকে কেন্দ্র করে দেশের কুস্তিগিরদের একাংশের মনে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল দেশের প্রথম সারির ছয় কুস্তিগিরকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। তাই প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আইওএ এবং সাই-কে চিঠি দিয়ে ট্রায়ালের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছেন কয়েক জন মহিলা কুস্তিগির। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন আন্তর্জাতিক পদকজয়ী একাধিক কুস্তিগির। একই দাবিতে রোহতকের স্যর ছটুরাম আখড়ার ২৪ জন মহিলা কুস্তিগির আলাদা চিঠি দিয়েছেন সাইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল সন্দীপ প্রধানকে। তাঁরা পরিষ্কার জানিয়েছেন, প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হলে মানবেন না। কেন ট্রায়ালে দুই পর্বে ট্রায়াল হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, আইওএ-এর নিয়োগ করা অ্যাডহক কমিটি জানিয়েছে, এশিয়ান গেমসের জন্য কুস্তির ট্রায়াল হবে ২২ এবং ২৩ জুলাই। কী ভাবে ট্রায়াল হবে, তা এখনও জানানো হয়নি।

এর আগে গত ১৬ জুন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগটদের বাড়তি সময়ের দেওয়ার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কুস্তি সংস্থার তরফে ভূপেন্দ্র সিংহ বাজওয়া জানিয়েছিলেন, দুই পর্বে ট্রায়াল হবে। প্রথম পর্বে সব কুস্তিগিরেরা সকলে ট্রায়াল দেবেন। দ্বিতীয় পর্বে নামবেন প্রতিবাদী ছয় কুস্তিগির। প্রথম পর্বের বিজয়ীর সঙ্গে তাঁর লড়াই হবে। যিনি জিতবেন তিনি এশিয়ান গেমসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন। ট্রায়ালের এই পদ্ধতি মেনে নিতে পারছেন না দেশের কুস্তিগিরদের একটা বড় অংশ। কেন ছ’জনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। কীসের ভিত্তিতে বজরং, সাক্ষীরা শুধু মাত্র একটি ম্যাচ খেলেই ছাড়পত্র পাবেন, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাঁদের দাবি, অনেক আগে থেকেই ট্রায়ালের কথা সবাই জানতেন। তা হলে কেন বজরং, সাক্ষীরা নিজেদের সময় মতো প্রস্তুত করেননি? আন্দোলনের সঙ্গে ট্রায়ালের সম্পর্ক নেই বলেও দাবি তাঁদের।

Advertisement

অশান্তির আঁচ পেয়ে অ্যাডহক কমিটির সদস্যেরা নতুন একটি পরিকল্পনা করেছেন। সূত্রের খবর, অলিম্পিক্স বা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছেন, এমন কুস্তিগিরদের সবাইকে প্রথম পর্বের ট্রায়ালের বাইরে রাখা হবে পারে। তা হলে বজরং, সাক্ষী, বিনেশেরা ছাড়াও কিছু কুস্তিগির সেই সুবিধা পাবেন। তাতে প্রতিবাদীদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠবে না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং ক্রীড়ামন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘তিন অলিম্পিয়ান কুস্তিগিরকে বাড়তি ট্রায়ালে ছাড় দেওয়া হলে তরুণ খেলোয়াড়দের প্রতি অবিচার হবে। আমাদের মতে, দুই পর্বে ট্রায়ালের যে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে, তা যুক্তি সঙ্গত নয়। উঠতি কুস্তিগিরদের সঙ্গে তাতে অবিচার হবে। সকলকে চার থেকে পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে। আর ছ’জন কেন একটি করে ম্যাচ খেলেই ছাড়পত্র পাওয়ার সুযোগ পাবে? যোগ্যতা যাচাইয়ের নিয়ম কেন এক হবে না?’’

এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ জয়ী মণিষা বলেছেন, ‘‘নিয়ম সবার জন্য এক হওয়া উচিত। ওরা আমাদের প্রতিযোগিতায় হারাতে পারলে এশিয়ান গেমসে যাক। তাতে আমাদেরও একটা স্বস্তি থাকবে। দু’বার আলাদা করে ট্রায়াল দেওয়ার অনেক সমস্যা আছে। ওজন বজায় রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। প্রস্তুতি ঠিক মতো নেওয়া যায় না।’’ দাবি মানা না হলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেছেন এশিয়ান জুনিয়র কুস্তিতে পদক জয়ী কুস্তিগির সারিকা। উল্লেখ্য, ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে আইওএ-কে কুস্তিগিরদের নামের চূড়ান্ত তালিকা পাঠাতে হবে এশিয়ান গেমসের আয়োজকদের কাছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement