ফাইল চিত্র।
এ বারের আইএসএলে এক সময়ে লিগের শীর্ষ স্থান থেকে সরে গিয়েছিল মুম্বই সিটি এফসি। সে সময়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল, দুর্দান্ত সূচনা করেও শেষ পর্যন্ত কি চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে মুম্বই সিটি এফসি?
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে লিগ শীর্ষে থেকে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সুযোগ পাওয়ার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ হাসি মুম্বই সিটি এফসি কোচ সের্খিয়ো লোবেরার মুখেই। রেফারি ফতোরদা স্টেডিয়ামে খেলা শেষের বাঁশি বাজাতেই মুম্বই কোচ প্রথমে খোঁজ নেন প্রথমার্ধের শেষ দিকে গুরুতর চোট পেয়ে হাসপাতালে যাওয়া তাঁর রাইট ব্যাক অমেয় রানাওয়াড়ের শারীরিক অবস্থার কথা। অমেয় স্থিতিশীল রয়েছেন জানার পরেই লোবেরা বলেন, ‘‘দারুণ লাগছে। জয়ের চেয়েও ভাল খবর, অমেয় স্থিতিশীল। ওর চিকিৎসা চলছে। একটু আগেই খবর এসেছে।’’ এর পরেই যোগ করেন, ‘‘লিগ শীর্ষে থেকে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ পাওয়ার পরে প্রথম আইএসএল চ্যাম্পিয়নের ট্রফিও জিতলাম। ছেলেদের এই পারফরম্যান্সে আমি গর্বিত। আমরা একটা পরিবারের মতো থেকেছি গত কয়েক মাসে। মাঠে তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছি আমরা। প্রথম দিন থেকেই বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিলাম। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে প্রস্তুতি, কঠিন এই লিগ। শেষ পর্যন্ত এই পরীক্ষায় সফল আমরা।’’
প্রথম বার আইএসএল খেতাব জিতে মুম্বইয়ের স্পেনীয় কোচ আরও বলেন, ‘‘এই সাফল্য উৎসর্গ করছি আমাদের পরিবার, মুম্বই সিটি এফসির পরিচালকবর্গ, সিটি ফুটবল গ্রুপ ও সমর্থকদের। তবে এই সাফল্য আমার একার নয়। এটা দলের সকলের মিলিত প্রয়াস।’’
মুম্বইয়ের জয়সূচক গোলদাতা বিপিন সিংহ সম্পর্কে কোচের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিপিন এই মরসুমে দারুণ খেলেছে। চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে ভারতীয় ফুটবলারদেরও ভাল খেলতে লাগে। বিপিন তা করে দেখিয়েছে। আজ রাতে আমাদের জয়োৎসবে যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে ও।’’
আগামী মরসুমের পরিকল্পনা জানতে চাইলে লোবেরা বলেন, ‘‘আমাদের ছেলেরা সব সময়েই সাফল্য পেতে চায়। আগামী দিনে লড়াই কঠিন হবে। তবে আমাদের প্রচেষ্টা থেমে থাকবে না। আমরা কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে ভালবাসি।’’
মুম্বই কোচ যখন এ কথা বলছেন, তখন মাঠেই বিজয়োৎসবে মেতেছেন হুগো বুমোস, বার্থেলোমিউ ওগবেচেরা। স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে বুমোস বলে যান, ‘‘স্বপ্ন সত্যি হল। চার ম্যাচ নির্বাসনের শাস্তি পেয়েছিলাম। দলের পারফরম্যান্সও সে সময়ে ভাল হয়নি। চিন্তা বেড়েছিল। সেই অবস্থা কাটিয়ে ট্রফি জয় ও লিগ শীর্ষে থাকার অনুভূতি সত্যিই দুর্দান্ত। বেশ ভাল কিছু ফুটবলার আমাদের দলে ছিল। যারা প্রত্যেকেই দারুণ মানুষও। ফলে দলের সংহতি ছিল দুরন্ত। সে কারণেই আমরা চ্যাম্পিয়ন।’’
এ দিকে, করোনা অতিমারির আতঙ্কের মধ্যেও সফল ভাবে সপ্তম আইএসএল হওয়ায় গর্বিত নীতা অম্বানী। শনিবার গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে মুম্বই সিটি এফসি বনাম এটিকে-মোহনবাগান ফাইনাল শুরু হওয়ার আগে ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (এফএসডিএল)-র চেয়ারপার্সন ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, ‘‘সপ্তম আইএসএল খেলাধুলোর শ্রেষ্ঠত্বই প্রমাণ করল। গৌরবান্বিত করল ফুটবলকে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘বিশ্ব জুড়ে চলতে থাকা এই অতিমারিতে অনিশ্চয়তার আতঙ্কের মধ্যেও আইএসএল আমাদের আনন্দ দিয়েছে। উৎসব ফিরিয়ে এনেছে জীবনে। তবে স্টেডিয়ামে ফুটবলপ্রেমীদের অভাব অনুভব করেছি।’’