সেরিনা উইলিয়ামস
তিনটে তথ্য দেওয়া যাক।
ম্যাচে নামার আগে পপ শোনেন। যার বেশির ভাগেই ড্রেক, বিয়ন্সে বা অন্য বিখ্যাত বন্ধুদের গাওয়া।
নিজের দৌড়নোর স্কিল নিয়ে প্রচুর আত্মবিশ্বাস রয়েছে। এতটাই যে নিজেই মাঝে মাঝে বলেন ‘কোনওদিন একটা স্প্রিন্ট কম্পিটিশন জিতবই জিতব’।
তাঁর ‘চিট ফু়ড’ জায়গা অনুযায়ী বদলায়। ফ্লোরিডায় থাকলে এক ব্যাগ চিপস। লস অ্যাঞ্জেলিসে ডোনাটস আর নিউ ইয়র্কে গেলে বদলে যায় ডাও-তে।
তিনি— সেরিনা উইলিয়ামস।
এ সবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে আরও একটা জিনিস যোগ হচ্ছে। তাঁর ‘রেট্রো ফ্যাশন’।
১৭ নম্বর যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নামার আগের দিনও বিন্দু মাত্র চাপে আছেন বলে মনে হয়নি। দেখে কে বলবে ওপেন যুগে মেয়েদের টেনিসে সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড গড়ার দৌড়ে নামছেন। বরং যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে এ বার কী ধরনের পোশাকে দেখা যাবে সে নিয়ে বেশ উত্তেজিত মনে হয়েছে সেরিনাকে।
এমনিতেই টেনিস সার্কিটে নিজের ফ্যাশন স্টেটমেন্টের জন্য সেরিনার প্রচুর খ্যাতি আছে। আছে নিজস্ব ফ্যাশন লাইনও। তবে এ বার তাঁর ফ্যাশনে একটা অন্য কিছু করতে চান স্টেফি গ্রাফের রেকর্ড ভাঙার টার্গেট নিয়ে নামা ৩৪ বছরের মহাতারকা।
সেটা কী?
‘‘এ বছর আমি টেনিসে ক্ল্যাসিক ব্যাপারটা ফিরিয়ে আনতে চাই,’’ বলেছেন সেরিনা। স্পনসর নাইকির সঙ্গে এই নিয়ে কথাবার্তা বলে সব চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন আগেই। সেই মতো যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে দিনের ম্যাচে তাঁর পোশাক ‘টোয়ারলিং হোয়াইট’। আর রাতে একটা ব্ল্যাক ভেরিয়েশন। যেটা পরে প্রাথম রাউন্ডে সহজেই হারালেন মাকারোভাকে। ৬-৩, ৬-৩। যাঁকে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে সেরিনার অন্যতম বড় বাধা ধরা হচ্ছিল।
নিজের খেলাকে তো আকর্ষণীয় করে তুলেছেনই। এ বার ডিজাইনার পোশাকটাকেও আকর্ষণীয় করে তুলতে ‘বোল্ড, ফেমিনিন কালার’ যোগ করা হয়েছে। সেটা কী রকম? ‘‘হিন্ট অব পিঙ্ক কালার থাকবে ড্রেসটার প্লিটসে। যাতে যখন আমি নড়াচড়া করব তখন পিঙ্ক জায়গাগুলো ভেসে ওঠে। সঙ্গে পোশাকের উপরের দিকে ক্যান্ডি কালার শেড থাকছে। ছোটবেলা থেকেই খুব পছন্দের রং। পেটাল লিপ বা কটন ক্যান্ডি নেলপলিশ তাই সব সময় পরে থাকার চেষ্টা করি,’’ বললেন সেরিনা।
তবে ভক্তদের সামনে নিজেকে ইচ্ছেমতো সাজিয়ে মেলে ধরার পাশাপাশি ফিটনেসটাও রয়েছে। মাঝে মাঝে জাঙ্ক ফুড তো চলতেই পারে। সঙ্গে নিজেকে ফিট রাখতে আর কী করেন তিনি? ‘‘দেখুন আমার কাছে সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট হল ভাল থাকা।’’ একটু থেমে যোগ করেন, ‘‘চেষ্টা করি সব সময় যতটা সম্ভব সুস্থ থাকার। আরও একটা জিনিস আমার মনে হয়। শরীর খারাপ হলে খাবার খেয়েই আবার সুস্থ হয়ে ওঠা যায়। একেবারে ঠিকঠাক খাবার খেলে।’’
সেটা কী? সেরিনার ডায়েট দেখলেই অনেকটা পরিষ্কার হবে। এত বছর সার্কিটে কী ভাবে নিজের ফিটনেস ধরে রেখেছেন সেরিনা— কৌতূহল কম নয়। তিনি নিজেই বললেন ফিটনেস রাখতে এখন যে ডায়েট মেনে চলছেন সেটা অনেকটাই ‘প্ল্যান্ট ফোকাসড।’ শাক-সব্জিই বেশি। সঙ্গে ফলের রস, প্রচুর ‘ডার্ক লিফ গ্রিন’ মশলা ছাড়া খুব হাল্কা ভাবে রান্না করা। যাতে রান্নার পর শাক-সব্জিগুলোকে খুব উজ্জ্বল লাগে। ‘‘আমাদের মতো এত বেশি পরিশ্রম করতে করতে হলে শরীরের যত্ন নিতেই হয়। মানে সময়ের সাথে সাথে ফিটনেস ঠিক রাখতে নতুন কিছু ভাবতে হয়,’’ বলছিলেন সেরিনা।
তবে ফিটনেসের কড়া শাসনের মধ্যে ছেলেমানুষিগুলো যে পুরো মাত্রায় আছে, সেটা ক্যান্ডির কথা উঠতেই বুঝিয়ে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের চ্যাম্পিয়ন। ‘‘জানেন টিনএজার যখন ছিলাম শুধু ক্যান্ডি খেতাম। এখন তো মোটে ২০-৩০টা খাই,’’ মজা করে বলেন সেরিনা। কোনটা ফেভারিট? ‘‘সোর প্যাচ ওয়াটারমেলন চিউস। পিঙ্ক পিঙ্ক যেটা। উফ! কতদিন যে খাই না,’’ কিশোরীর উচ্ছ্বলতায় বলে দিলেন সেরিনা।
২৩তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলে এত দিন কষ্ট করে চেপে রাখা এই ইচ্ছেটাও নিশ্চয়ই মেটানোর অপেক্ষায় আছেন সেরিনা।