উদ্যোগ: মহমেডান মাঠে ট্রায়ালে খুদে ফুটবলারদের সঙ্গে সুভাষ।
অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় দলে বাংলার কোনও ফুটবলারকে না দেখে হতাশ হয়েছিলেন চুনী গোস্বামী, শ্যাম থাপারা। সব কিছু ঠিক থাকলে কয়েক মাসের মধ্যেই বদলে যাবে ছবিটা। ভারতের যুব দলে ফের দেখা যাবে বাংলার ফুটবলারদের। নেপথ্যে বাংলার দুই প্রাক্তন ফুটবলার— সুভাষ চক্রবর্তী ও গৌতম দেবনাথ।
কুয়ালা লামপুরে অনূর্ধ্ব-১৬ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালীনই ভারতীয় ফুটবলের ডিরেক্টর অভিষেক যাদব বলেছিলেন, ‘‘আমি মনে করি, বাংলার ফুটবলারদের বুদ্ধি অনেক বেশি হয়। এই মুহূর্তে অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দলে বাংলার কেউ নেই ঠিকই। আশা করছি, দ্রুত জাতীয় দলে বাংলার একঝাঁক প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারকে দেখা যাবে।’’ অভিষেকের পূর্বাভাস ইতিমধ্যেই মিলতে শুরু করে দিয়েছে। গোয়ায় জাতীয় অ্যাকাডেমিতে বাংলা থেকে ছয় ফুটবলারকে ট্রায়াল দিতে পাঠিয়েছেন সুভাষ ও গৌতম। যার মধ্যে স্ট্রাইকার ও গোলরক্ষক রয়েছে এক জন করে। ডিফেন্ডার ও মিডফিল্ডার রয়েছে দু’জন করে। এরা হল সুমন নাগ, দিব্যেন্দু হালদার, বাবাই জানা, দীপু হালদার, তপন হাদার ও আকাশ ওরাঁও।
জাতীয় দলের প্রাক্তন সতীর্থ সুভাষকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত অভিষেক বলছিলেন, ‘‘সুভাষ আমাদের স্কাউটিং দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। দীর্ঘ দিন জাতীয় দলে ওর সঙ্গে খেলেছি। ওকেই বাংলা থেকে প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার তুলে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খুব ভাল কাজ করছে সুভাষ।’’
প্রাক্তন সতীর্থের প্রশংসায় অবশ্য সুভাষ উচ্ছ্বসিত নন। তাঁর মতে, বাংলার ফুটবলে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু তাদের ঠিক মতো খুঁজে বার করার পরিকাঠামো নেই। সুভাষ বলছিলেন, ‘‘সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ও আইএফএ-র যৌথ উদ্যোগে ২৪ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর, মহমেডান মাঠে অনূর্ধ্ব ১৩ ও ১৫ জাতীয় দলের জন্য ট্রায়াল হয়েছিল। বিভিন্ন অ্যাকাডেমি থেকে ফুটবলারেরা এসেছিল। কিন্তু অনেকেই জানতেই পারেনি যে ট্রায়াল হচ্ছে। এই ছবিটা বদলাতে হবে।’’
কী ভাবে? একধিক পরিকল্পনার কথা শোনালেন আশিয়ান কাপ জয়ী ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম সদস্য। বললেন, ‘‘বাংলার জেলাগুলোকে আমরা চারটি জোনে ভাগ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। শিলিগুড়িতে ট্রায়াল নেওয়া হবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর। পাশাপাশি, উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর ফুটবলারদেরও এখানে দেখতে চাই। চারটি জোন থেকে নির্বাচিত ফুটবলারদের চূড়ান্ত ট্রায়াল নেওয়া হবে কলকাতায়।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘তা ছাড়া আমরা মনে করি, অ্যাকাডেমি ও কোচিং ক্যাম্পের বাইরেও বহু প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার রয়েছে। দরকার, তাদের খুঁজে বার করে ঠিক মতো ট্রেনিং দেওয়া। এর জন্য বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে হবে।’’
দুর্গাপুজো শেষ হলেই জেলা সফরে বেরিয়ে পড়ার পরিকল্পনা রয়েছে সুভাষ ও গৌতমের। বললেন, ‘‘ইতিমধ্যেই অভিষেকের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ও খুব আগ্রহ দেখিয়েছে। জানিয়েছে, সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ও আইএফএ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সব চূড়ান্ত করে ফেলবে।’’