বাদ সৌরাশিস, প্রশ্নের মুখে রঞ্জি ভবিষ্যৎ

সাড়ে আট মাস আগে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে অবনমন বাঁচানোর রঞ্জিতে যখন ঋদ্ধিমান সাহার সঙ্গে ব্যাট করতে নেমেছিলেন সৌরাশিস লাহিড়ী, মস্তিষ্কে একটা কথাই ঘুরছিল—নিজের কেরিয়ার বাঁচাতে হলে ম্যাচে বাংলাকে বাঁচাতে হবে। ঋদ্ধির সঙ্গে সাড়ে চার ঘণ্টার তীব্র যুদ্ধের পর বাংলাকে বাঁচিয়ে শেষ পর্যন্ত ভেবেছিলেন, যাক, কেরিয়ারটা বেঁচে গেল। নতুন করে আবার সব শুরু করতে পারব আমি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩৪
Share:

সাড়ে আট মাস আগে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে অবনমন বাঁচানোর রঞ্জিতে যখন ঋদ্ধিমান সাহার সঙ্গে ব্যাট করতে নেমেছিলেন সৌরাশিস লাহিড়ী, মস্তিষ্কে একটা কথাই ঘুরছিল—নিজের কেরিয়ার বাঁচাতে হলে ম্যাচে বাংলাকে বাঁচাতে হবে। ঋদ্ধির সঙ্গে সাড়ে চার ঘণ্টার তীব্র যুদ্ধের পর বাংলাকে বাঁচিয়ে শেষ পর্যন্ত ভেবেছিলেন, যাক, কেরিয়ারটা বেঁচে গেল। নতুন করে আবার সব শুরু করতে পারব আমি।

Advertisement

সাড়ে আট মাস পর নতুন রঞ্জি মরসুম শুরু। নতুন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির নেতৃত্বে এ বার কর্নাটক ম্যাচ দিয়ে শুরু অভিযান। শুধু সৌরাশিস লাহিড়ী ভেবে পাচ্ছেন না, তিনি এর পর কী করবেন? বা তাঁর কী করা উচিত।

বাংলার অবনমন বাঁচানোর যোদ্ধাকে তো টিমেই রাখল না বাংলা!

Advertisement

দশ বছর ধরে বঙ্গ স্পিনের প্রধান মুখ থাকার পর সৌরাশিস দেখলেন, অফস্পিনার আমির গনি টিমে। কিন্তু তিনি টিমে নেই। বাংলার জার্সিতে বহু রঞ্জি ট্রফি খেলার পরেও দেখলেন, নির্বাচকদের কেউ তাঁকে ফোন করেও বলতে পারেন না যে, তুমি নেই। তোমাকে রাখতে পারছি না।

‘‘আমি এ সব নিয়ে অভিযোগ করছি না। কিন্তু গত বার মধ্যপ্রদেশ ম্যাচটার ও ভাবে বার করার পর ভেবেছিলাম যে, আরও খাটব। সেখানে পনেরো জনেও নেই, এটা শকিং। তবে আমি পালাব না। জানি যে, প্রজ্ঞান এখন আমাদের এক নম্বর স্পিনার। কিন্তু এটাও মনে করি যে, টিমের দু’নম্বর স্পিনার আমি,’’ এ দিন সন্ধেয় বলছিলেন সৌরাশিস।

কিন্তু সেটা কতটা সম্ভব? শোনা গেল, এ দিনের বৈঠকে সৌরাশিস-প্রসঙ্গে যে কথাবার্তা নির্বাচনী বৈঠকে হয়েছে তাতে তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার এ দিনের পর শেষ হয়ে গেল এমন নয়। কিন্তু প্রত্যাবর্তনের রাস্তাটা যে চরম কঠিন হতে চলেছে, তার ইঙ্গিত প্রবল ভাবে পাওয়া গেল। বৈঠকে উপস্থিতদের গরিষ্ঠের বক্তব্য পরিষ্কার— গনিরা ব্যর্থ হলে তবেই দরজা খুলতে পারে সৌরাশিসের। নইলে নয়। অথচ বাংলা প্র্যাকটিসে দিনের পর দিন তাঁকে নাকি বলা হয়েছে, তোমাকে খেললেই চলবে না। স্পিনার তৈরিও করতে হবে। আর আজ? টিমের প্রথম পছন্দ ওঝা। দ্বিতীয়, বাঁ হাতি স্পিনার প্রদীপ্ত প্রামাণিক। তিন, আমির গনি। তিনি— সৌরাশিস লাহিড়ী অনেক দূরে থাকা চার। যা শুনে ময়দানে বলাবলি চলল, সৌরাশিসের এতটা ‘শৈত্য’ বঙ্গ ক্রিকেট থেকে প্রাপ্য ছিল না। বৈঠকের আগে অন্তত একটা ফোন করা যেত। শোনা গেল ঘনিষ্ঠ মহলে সৌরাশিস বলেও ফেলেছেন যে, তাঁর কী করা উচিত নির্বাচকরা পরিষ্কার করে দিলে তাঁর সুবিধে হত। বাংলা আর না ভাবলে তিনি অন্য কিছু ভাবতে পারতেন। বাকি টিম নিয়ে খুচরো দু’একটা প্রশ্ন আছে। যেমন চার জন ওপেনার টিমে রাখার কারণ অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। কেউ কেউ আবার এটাও জুড়ে দিলেন যে চার ওপেনার নেওয়াই যখন হল, তা হলে কৌশিক ঘোষকে কেন নেওয়া হল না? যাঁরা আছেন, তাঁদের কারও কারও থেকে যথেষ্ট যোগ্য কৌশিক। বাংলার অধিনায়কত্ব পেয়ে মনোজ তিওয়ারি বলছিলেন, টিমে এ বার তিনি কোনও রকম বিতর্ক ঢুকতে দেবেন না। বললেন, ‘‘শ্রীলঙ্কা সফরে যা হয়েছে, তা হওয়া উচিত ছিল না। ম্যানেজারের জড়িয়ে গেলেন। কিন্তু ওটাই শেষ।’’ দুর্ভাগ্য মনোজের, নেতৃত্ব পাওয়ার প্রথম দিনেই নির্বাচনী বৈঠক ঘিরে এত ফুটোফাটা তৈরি হল যে, অনায়াসে বেশ কয়েকটা বিতর্ক তা দিয়ে ঢুকে পড়তে পারে!

পুরো দল: মনোজ (অধিনায়ক), নাভেদ আহমেদ, শ্রীবৎস, সুদীপ, ঋদ্ধিমান, লক্ষ্মীরতন, পঙ্কজ সাউ, দিন্দা, বীরপ্রতাপ, প্রজ্ঞান, পার্থসারথি, সৌরভ সরকার, মুকেশ কুমার, আমির গনি, অভিষেক দাস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement