— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভারতীয় কুস্তি সংস্থার নতুন কমিটি নিলম্বিত করেছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। কয়েক দিন আগে নির্বাচনের মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল সেই কমিটি। যত দিন না নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি হচ্ছে, তত দিন একটি অ্যাড-হক কমিটিকে কাজকর্ম পরিচালনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের এই নির্দেশ মানছেন না সঞ্জয় সিংহ। নির্বাচনের পরে তিনিই কুস্তি সংস্থার নতুন সভাপতি হয়েছিলেন। প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় অ্যাড-হক কমিটিকেও মানছেন না। তাঁর দাবি, তাঁরাই কুস্তি চালাবেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচিত হয়েছি। রিটার্নিং অফিসারের সই আছে সেখানে। ওরা কী ভাবে সেটা ভুলে যাচ্ছে। কোনও অ্যাড-হক কমিটি আমরা চিনি না। নিলম্বিত করার কোনও শাস্তিও মানি না।’’ সঞ্জয় আরও বলেন, ‘‘কুস্তি আমরাই চালাব। যদি রাজ্য সংস্থা দলই না পাঠায় তা হলে অ্যাড-হক কমিটি কী ভাবে জাতীয় প্রতিযোগিতা করবে। আমরা নিজেরাই খুব তাড়াতাড়ি ওই প্রতিযোগিতা করব। তার জন্য এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক হবে। দু’এক দিনের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।’’
কিন্তু সঞ্জয়ের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে তো নিলম্বিত করেছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁরা কী ভাবে যাবেন? সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছি। জানিয়েছি যে কোনও ভুল বা নিয়মের বাইরে কিছু করিনি। কেন্দ্র কী উত্তর দেয় সেই অপেক্ষায় আছি।’’
নির্বাচিত হওয়ার পরেই জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-২০ স্তরের প্রতিযোগিতার কথা ঘোষণা করেছিলেন সঞ্জয়। তিনি জানিয়েছিলেন, গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষে উত্তরপ্রদেশের গোন্ডাতে সেই প্রতিযোগিতা হবে। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের মনে হয়েছিল, কোনও পরিকল্পনা না করেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার ফলে অংশ নিতে চাওয়া কুস্তিগিরেরা নিজেদের তৈরি করার পর্যাপ্ত সময় পাবেন না।
ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সংবিধান অনুযায়ী, যুব বা সিনিয়র স্তরের কোনও প্রতিযোগিতার আয়োজন করার আগে এগজ়িকিউটিভ কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পরে প্রতিযোগিতার সূচি প্রকাশ করা হয়। প্রত্যেকটি প্রতিযোগিতার আগে কুস্তিগিরদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে হয়। সব থেকে কম ১৫ দিন সময় দিতে হয় প্রস্তুতির। সেই সব কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করেননি সঞ্জয়। নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সেই কারণে নতুন কমিটি নিলম্বিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ক্রীড়া মন্ত্রক। তবে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়নি। পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত তাকে নিলম্বিত করা হয়েছে।
তার পরেই পিটি ঊষার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা একটি অ্যাড-হক কমিটি গঠন করে। তার মাথায় রয়েছেন ভূপিন্দর সিংহ বাজওয়া (উশু)। বাকি দু’জন হলেন এমএম সোমায়া (হকি) ও মঞ্জুষা কানওয়ার (ব্যাডমিন্টন)। বিশ্ব কুস্তি সংস্থা যখন নির্বাচন না হওয়ায় ভারতীয় কুস্তি সংস্থাকে নিলম্বিত করেছিল সেই সময় যে অ্যাড-হক কমিটি তৈরি করা হয়েছিল সেখানেও এই তিন জন ছিলেন। এ বারও তাঁদের উপরেই ভরসা রাখা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পরে ঊষা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক মনে করেছে নতুন যে কমিটি তৈরি হয়েছিল, তারা নিজেদের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে। সেই কারণে সেই কমিটিকে নিলম্বিত করা হয়েছে। কিন্তু তাতে কুস্তির কাজকর্মে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য একটি অ্যাড-হক কমিটি আমরা তৈরি করেছি। আশা করছি এই কমিটি নিজেদের দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করবে।’’