ইউরোপের ক্লে কোর্ট আমার ফেভারিট নয়। গত কয়েক সপ্তাহ কাটল তাই কোর্টের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। পাশাপাশি ডাবলসের নতুন সঙ্গী ইয়ারোস্লাভা শ্বেদোভার সঙ্গে ফরাসি ওপেনের প্রস্তুতি জোরকদমে চলছে।
নতুন জুটি হিসেবে আমরা কয়েকটা জয় যেমন পেয়েছি, তেমন হারের মুখেও পড়তে হয়েছে। এই ব্যর্থতা সাফল্যের জেদটা বাড়িয়ে দিয়েছে। আরও পরিশ্রম করে আমাদের কোর্টে দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে হবেই। আমার মনে হচ্ছে জুটি হিসেবে নিজেদের শক্তিগুলো আমরা যত সময় যাচ্ছে আরও ভাল বুঝতে পারছি। যেটা ফরাসি ওপেনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে আমাদের এগিয়ে রাখতে পারে।
‘স্লাভা’র সঙ্গে আমার পরিচয় বহু দিনের। প্রায় এক দশকেরও বেশি। ২০০৭-এ ওর প্রথম ডাব্লুটিএ সিঙ্গলস খেতাব জেতার পথে ব্যাঙ্গালোর ওপেনের সেমিফাইনালে আমায় হারিয়ে দিয়েছিল ও। সে বছরই আমি সেই হারের বদলা নিয়েছিলাম উইম্বলডনে একপেশে জয়ে। আমরা ডাবলসেও একাধিক বার খেলেছি। তখন ‘স্লাভা’ আমার প্রতিপক্ষ। ২০১৫-এ চার্লসটনে গ্যারিগুয়েজের সঙ্গে জুটি বেঁধে কোয়ার্টার ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছিল স্লাভা আমাদের বিরুদ্ধে। আমার সঙ্গী ছিল মার্টিনা হিঙ্গিস। ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে আমরা জিতেছিলাম সে বার। আমরা তার পরে চার্লসটনে চ্যাম্পিয়ন হই আর ডাবলসে বিশ্বসেরা র্যাঙ্কিংয়ে পৌঁছে যাই আমি। মার্টিনা আর আমি জুটিতে শ্বেদোভা-ডেলাকুয়াকে ২০১৫ যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালেও হারিয়েছি। তবে স্লাভা আমাদের বিরুদ্ধে বদলা নিতে পেরেছিল গত বছর উইম্বলডনের কোর্য়াটার ফাইনালে। টিমিয়া বাবোসের সঙ্গে জুটিতে।
আরও পড়ুন:লক্ষ্য লা দেসিমা, নিস্পৃহ নাদাল
খুব বেশি দিনের না হলেও এর আগেও স্লাভার সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলেছি আমি। সেটা ২০১১-এ। যখন আমরা ওয়াশিংটন ডাব্লুটিএ ডাবলস খেতাব জিতেছিলাম। স্লাভার প্রিয় ঘাসের কোর্ট। উইম্বলডনে ওর ‘গোল্ডেন’ সেট জেতার রেকর্ডও রয়েছে। যে বার ও ইতালির সারা ইরানির বিরুদ্ধে জিতেছিল একটাও পয়েন্ট না হেরে। তাই আমরা স্বাভাবিক ভাবেই উইম্বলডনে আমাদের সাফল্য নিয়ে অনেক আশায় আছি। তবে পাশাপাশি কিন্তু আমরা যে ভাবে ক্লে কোর্টে কয়েকটা দুরন্ত জয় পেয়েছি সেটাও মাথায় থাকছে। আলাদা সঙ্গীকে নিয়ে আমরা দু’জনেই কিন্তু ফরাসি ওপেনের ফাইনালিস্টও। হয়তো ভাগ্যের সঙ্গ থাকলে এ বার তার পরের ধাপেও আমরা পৌঁছতে পারব রোলঁ গ্যারোজের লাল মাটিতে।
মিক্সড ডাবলসে আমি ক্রোয়েশিয়ার ইভান ডডিজের সঙ্গে জুটিটা চালিয়ে যাব। গত বছর আমরা প্রথম টুর্নামেন্টে নামি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। সেমিফাইনালে পৌঁছেছিলাম সেখানে। তার পর যে চারটে গ্র্যান্ড স্ল্যামে আমরা খেলেছি তার মধ্যে ২০১৬ ফরাসি ওপেন আর ২০১৭ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে রানার্সও হয়েছি। তাই ইভানের সঙ্গে আমার জুটিটা বেশ ভাল ছুটছে বলাই যায়। এ বার যদি আমরা একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবও জিততে পারি, তার থেকে ভাল আর কী হতে পারে।
তবে টেনিস খুব মজার খেলা। যাঁদের খেলাটা সম্পর্কে অনেক জ্ঞান রয়েছে, সত্যিই টেনিস বোঝে, তাঁরা কোনও ম্যাচের ফল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে চাইবে না। হয়তো এই অনিশ্চয়তাটাই টেনিস আর গল্ফকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাগুলোর অন্যতম করে তুলেছে।