এ রকমটা যে হবে কে ভেবেছিল!
সাইনা নেহওয়াল বনাম পি ভি সিন্ধুর দ্বৈরথ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই ফুটছিল গুয়াহাটি। দুই তারকার লড়াই দেখার আশায় নবীন চন্দ্র বরদলই স্টেডিয়াম শনিবার প্রায় ভরিয়ে ফেলেছিলেন দর্শকরা। কিন্তু টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই এল খবরটা— সাইনা খেলছেন না প্রথম টাইয়ে।
কেন খেলছেন না সাইনা? তাঁর গোড়ালিতে চোট। আওয়াধ ওয়ারিয়র্স কোচ অনুপ শ্রীধর সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহ আগেই সাইনার গোড়ালিতে চোট লেগেছিল। এখনও চোটটা পুরোপুরি সারেনি। তবে সাইনা দ্রুত সেরে উঠছে। আশা করছি ৩০ ডিসেম্বর দিল্লিতে নর্থ ইস্ট ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে সাইনা নামতে পারবে।’’
সকালে বাবা আর বোনের সঙ্গে সিন্ধু গিয়েছিলেন গুয়াহাটির বিখ্যাত কামাখ্যা মন্দিরে পূজো দিতে। তিনিও হয়তো ভাবতে পারেননি প্রথম ম্যাচে সিনিয়রের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়়তেই হবে না।
শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও ঘুণাক্ষরেও টের পাওয়া যায়নি সাইনাকে দেখে তিনি খেলবেন না। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এবং ভারতীয় ব্যাডমিন্টন সংস্থার প্রেসিডেন্ট ও রাজ্যের মন্ত্রী হেমন্তবিশ্ব শর্মা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করার সময়ও সাইনা ছিলেন। তিনি আওয়াধের ক্যাপ্টেন। তাই টস করতেও তিনি নামেন সিন্ধুর সঙ্গে।
এর পরেই আয়োজকরা জানিয়ে দেন সাইনার চোটের কথা। স্বপ্নভঙ্গ হয় গুয়াহাটির। দুই তারকার এর পরে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল অথবা ফাইনালে। কিন্তু তাও তো সম্ভাবনাই। নিশ্চিত নয়। নাটকের তখনও বাকি ছিল। টাইয়ের প্রথম ম্যাচ জমিয়ে দেন আওয়াধের ক্রিস্টিনা পেডারসন এবং তাং চুং ম্যান। চেন্নাইয়ের মিক্সড ডাবলস জুটি ক্রিস এবং গ্যাব্রিয়েলা অ্যাডককের বিরুদ্ধে পেডারসন-ম্যান জুটি জেতেন ১০-১৫, ১৫-৫, ১৫-১২। আওয়াধকে এগিয়ে দেন ১-০। পারুপাল্লি কাশ্যপ এর পরে ড্যানিয়েল ফারিদের বিরুদ্ধে আওয়াধের ‘ট্রাম্প ম্যাচ’ (জিতলে ২ পয়েন্ট, হারলে -১) সহজেই জিতে ব্যবধান করে ফেলেন ৩-০।
চেন্নাইকে শেষ ধাক্কাটা দেন কিদম্বি শ্রীকান্ত। চেন্নাই স্ম্যাশার্সের ব্রাইস লেভারডেজকে (বিশ্ব র্যাঙ্কিং ২৪) ১৫-১২, ১৫-১৩ হারিয়ে। সঙ্গে টিমের টাইয়ে জয়ও নিশ্চিত করে ফেলেন দলকে ৪-০ এগিয়ে দিয়ে। শ্রীকান্তই টাইয়ের সেরা প্লেয়ার নির্বাচিত হন।
চেন্নাই অবশ্য সান্ত্বনার জয় পায় শেষ দুটো ম্যাচে। পুরুষদের ডাবলসে ক্রিস অ্যাডকক ও লি ইয়াং তিন গেমে জেতার পরে সিন্ধু ১৯ বছর বয়সি জুনিয়র প্রতিদ্বন্দ্বী সাই উত্তেজিতা রাওকে হারান ১৫-১০, ১৫-৯। আওয়াধ ওয়ারিয়র্স শেষ পর্যন্ত টাই জিতে যায় ৪-৩।
সাইনার চোটের ধাক্কা কাটিয়ে তিনি কোর্টে নামার আগেই যে তাঁর দল চেন্নাই টাই হেরে যাবে সিন্ধুও কি ভেবেছিলেন!