স্টেইনকে মারতে ভয় পেয়ো না, টোটকা সচিনের

একজন মনে করেন, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো ভারতের পক্ষে কোনও ব্যাপারই না। অন্য জন আবার মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের সতর্ক করে দিচ্ছেন আগামী রবিবারের মহাযুদ্ধ নিয়ে। ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ নিয়ে দুই মেরুতে ভারতেরই দুই প্রাক্তন তারকা ভিভিএস লক্ষ্মণ এবং সচিন তেন্ডুলকর। সচিনের আশঙ্কা, পাকিস্তানকে দুরমুশ করার পর না অতিরিক্ত আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫৪
Share:

ওপেনিং জুটিতেই ভরসা রাখতে বলছেন সচিন।

একজন মনে করেন, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো ভারতের পক্ষে কোনও ব্যাপারই না। অন্য জন আবার মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের সতর্ক করে দিচ্ছেন আগামী রবিবারের মহাযুদ্ধ নিয়ে। ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ নিয়ে দুই মেরুতে ভারতেরই দুই প্রাক্তন তারকা ভিভিএস লক্ষ্মণ এবং সচিন তেন্ডুলকর।

Advertisement

সচিনের আশঙ্কা, পাকিস্তানকে দুরমুশ করার পর না অতিরিক্ত আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরা। তাই তিনি ধোনিদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকা মোটেও পাকিস্তানের মতো গা-ছাড়া ফিল্ডিং করবে না। তাদের ফিল্ডিং অনেক বেশি ধারালো। “ওই ম্যাচটায় সিঙ্গলস নেওয়া কিন্তু খুব সহজ হবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডিং অনেক বেশি ক্ষিপ্র। ওদের থ্রোগুলো বেশি শক্তিশালী। আউটফিল্ডেও দুর্দান্ত। পাকিস্তানি ফিল্ডাররা যেটুকু জায়গা কভার করতে পারে, তার চেয়ে অনেক বেশি পারবে,” বলেছেন সচিন।

শক্তিশালী ফিল্ডিংয়ের টোটকাও দিয়ে দিয়েছেন সচিন। বলেছেন যে, ওপেনিং পার্টনারশিপে বেশি রান তুলে রাখতে হবে ভারতকে। আর দ্রুত সিঙ্গলস নেওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া ডেল স্টেইনকে নিয়েও বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে টিম ইন্ডিয়াকে। সচিনের কথায়, “স্টেইন যে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান স্ট্রাইক বোলার, সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। আর হালফিলে আসাধারণ বল করছে স্টেইন।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “তবে সমস্যা হল, স্টেইনকে কী ভাবে খেলতে হবে সেটা আগে থেকে ঠিক করে রাখা যায় না। এ রকমও তো হতে পারে যে সে দিনটা স্টেইনের খুব ভাল গেল না। তাই সেই মুহূর্তেই ওর বিরুদ্ধে স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে হবে। তবে তার পাশাপাশি স্টেইনকে সম্মানও করতে হবে। ওর বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে তো হবেই, কিন্তু সুযোগ পেলে ওকে মারতেও যেন পিছপা না হয় ভারত।”

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ওপেনিং পার্টনারশিপটা ভাল হতে হবে, কিন্তু অন্যতম ওপেনার রোহিত শর্মা যে পাকিস্তান ম্যাচে ব্যর্থ। সচিন অবশ্য সেটা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন। বরং তিনি মনে করেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ফর্মে ফিরবেন রোহিত। অধিনায়ক ধোনির ব্যাটিং-ব্যর্থতাও ভাবাচ্ছে না সচিনকে। তিনি বলছেন, “দয়া করে রোহিতের উপর চাপ সৃষ্টি করবেন না। কোনও প্লেয়ারের মনেই নিজেকে নিয়ে সন্দেহ তৈরি করা উচিত নয়। রোহিতের তো ভাবার কিছু নেই। পরের বার ও ঠিক রান পাবে।” আর ধোনি নিয়ে সচিনের বক্তব্য, “ধোনির ফর্ম নিয়ে আমার একটুও চিন্তা নেই। কোনও ম্যাচই কারও পক্ষে নিখুঁত যায় না। পাকিস্তান ম্যাচে ভারতীয় ড্রেসিংরুম নিশ্চয়ই ভেবেছিল, আমরা তিনশো কুড়ির উপর রান করব। যাই হোক, তিনশো যথেষ্ট লড়াকু স্কোর ছিল। পাকিস্তান আর একটু ভাল খেললে ম্যাচটা ক্লোজ হয়ে যেত। আজকাল তো ২৭৫-৩০০ সাধারণ স্কোর।”

দেশের হয়ে রেকর্ড ছ’টা বিশ্বকাপ খেলেছেন সচিন। বিশ্বকাপ নিয়ে তাই তিনি বাকিদের চেয়ে একটু বেশিই জানবেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাঁর কাপ-অভিজ্ঞতা থেকে সতীর্থদের সচিনের পরামর্শ, “একটা একটা ম্যাচ ধরে এগোতে হবে ভারতকে। এখনও কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে ভাবার কোনও দরকার নেই। আর মনে রাখতে হবে, অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মতো টিমকে আমরা সমানে সমানে লড়াই দিতে পারি। পাকিস্তান ম্যাচে যা খেলেছি, তার চেয়েও ভাল খেলতে পারি আমরা। আমাদের ব্যাটিং আরও ভাল করার ক্ষমতা রাখে। আর বোলিং যেমন হচ্ছে, সে রকম চললেই হবে। অস্ট্রেলিয়ায় যে সিরিজটা খেলেছে ভারত, সেটা ওদের কাজে লাগবে। সেরা দলগুলোর বিরুদ্ধে খেললে নিজেদের ক্রিকেটটা আপনাআপনিই আরও উন্নত হয়ে যায়।”

সচিনের এক সময়কার সতীর্থ লক্ষ্মণ অবশ্য এত কিছু নিয়ে ভাবছেন না। তিনি নিশ্চিত, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেবে ভারত। বিশ্বকাপে যে তাদের এক বারও হারানো যায়নি, সেই রেকর্ডটা মাথায় রেখেই। লক্ষ্মণ বলছেন, “অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ভারত খুব ভাল পারফর্ম করেনি। কিন্তু ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সাম্প্রতিক ফর্ম আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটা দেখে যা বুঝলাম, তাতে আশা করাই যায়। পাকিস্তান ম্যাচে বোঝা গেল যে, অস্ট্রেলিয়ায় আড়াই মাস কাটিয়ে ওখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার দ্রুত, বাউন্সি উইকেটের সঙ্গে নিজেদের খেলাটাকেও মানিয়ে নিয়েছে।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “ডেল স্টেইন, মর্নি মর্কেল বা ইমরান তাহিরের বিরুদ্ধে ব্যাট করাটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু বিশ্বের যে কোনও বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে ভাল খেলার মতো গভীরতা আর প্রতিভা আছে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে।”

লক্ষ্মণ মনে করেন, পাকিস্তানকে হারানোর আত্মবিশ্বাসটা চাগিয়ে দেবে ভারতীয় বোলারদের। “দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্দান্ত ব্যাটসম্যানদের বল করার সময় যেটা কাজে লাগবে,” বলছেন তিনি। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ হারের ০-৩ রেকর্ড (১৯৯২, ১৯৯৯, ২০১১) নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “এই ভারতীয় দলের অনেকেই আগের বিশ্বকাপের ম্যাচে ছিল না। তাই ও সব রেকর্ড নিয়ে ভেবে কোনও লাভ নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement