সচিন ও ধোনি। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’-এর পরামর্শে ধোনি আগে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। —ফাইল চিত্র।
সচিন তেন্ডুলকরের একটা ‘মাস্টারস্ট্রোক’ ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের ছবিটা বদলে দিয়েছিল। ফর্মে থাকা যুবরাজ সিংহের জায়গায় ‘মাস্টার ব্লাস্টার’-এর পরামর্শেই ফাইনালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ব্যাটিং অর্ডারে নিজেকে তুলে এনেছিলেন।
আর তার পরের ঘটনা তো ইতিহাস হয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে। ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ হাতে তুলেছিলেন ধোনি।
শ্রীলঙ্কার ২৭৫ রান তাড়া করতে নেমে এক সময়ে তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে ধোনির ভারত। তখন ভারত অধিনায়ককে উপরের দিকে ব্যাট করতে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন সচিনই। সেই সময়ে ক্রিজে ছিলেন বিরাট কোহালি ও গৌতম গম্ভীর। অর্থাৎ এক জন বাঁ হাতি, আর এক জন ডান হাতি।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটে ধৈর্য পেয়েছি দাবা থেকে, বলছেন প্রাক্তন জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন এই লেগস্পিনার
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গে সচিন বলেন, ‘‘এখন যদি বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান (গম্ভীর) আউট হয়ে যায়, তা হলে আর এক জন বাঁ হাতির ব্যাট করতে নামা উচিত। আর যদি ডান হাতি (কোহালি) আউট হয়, তা হলে এক জন ডান হাতি (ধোনি) ব্যাটসম্যানকে নামতে হবে।’’
ভারতের দুই ওপেনার সচিন ও বীরু ফিরে যাওয়ার পরে ইনিংস গোছানোর কাজ শুরু করেছিলেন গম্ভীর ও কোহালি। খেলা দেখতে দেখতেই সচিনের মাথায় আসে এই পরিকল্পনা। সঙ্গে সঙ্গেই তা সহবাগের মাধ্যমে ধোনির কাছে পৌঁছে দেন সচিন। তিনি বলছিলেন, ‘‘গৌতম দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিল। ধোনির মতো কেউ এক জন স্ট্রাইক রোটেট খুব ভাল করতে পারবে বলে আমার মনে হয়েছিল। সেই কারণেই বীরুকে বলেছিলাম, ওভারের মাঝখানে তুই কেবল এই কথাটা বাইরে গিয়ে এমএস-কে বলে আয়। আর পরের ওভার শুরু হওয়ার আগেই ফিরে আয়। আমি এখান থেকে কোথাও নড়ব না।’’
সংস্কারের বশেই সে দিন সচিন নিজের জায়গা ছেড়ে ওঠেননি। এ দিকে ফাইনালের আগে পর্যন্ত ধোনির ব্যাটে রান ছিল না। অন্য দিকে যুবরাজ দুর্দান্ত ফর্মে ব্যাট করছিলেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কা যে হেতু দুই অফ স্পিনারকে দিয়ে তখন বল করাচ্ছিল, তাই সচিনের মনে হয়েছিল বাঁ হাতি-ডান হাতি কম্বিনেশন চালিয়ে যাওয়া উচিত। বিশ্বকাপ ফাইনালের স্মৃতি রোমন্থন করে সচিন বলে চলেন, ‘‘আমি ধোনিকে সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে দেখার কথাই বলেছিলাম। ধোনি সবটা শুনে গ্যারি-র কাছে যায়। পরে আমরা চার জন মিলে পরামর্শ করি। গ্যারিও আমার প্রস্তাবে সায় দেয়। এমএস-ও রাজি হয়ে যায়।’’
আরও পড়ুন: এত বাজি কেনা হল কখন! প্রশ্ন বিস্মিত অশ্বিনের
কোহালি ফিরে যাওয়ার পরে গম্ভীর ও ধোনি ভারতকে জয়ের রাস্তায় নিয়ে যান। গম্ভীর ৯৭ রানে আউট হন। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে ধোনির ব্যাট কথা না বললেও ফাইনালে তাঁর ৯১ রান ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিত করে।