পর্যবেক্ষণ: সচিনের চোখে ধরা পড়েছে জিমির কৌশল। ফাইল চিত্র
বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা এক ব্যাটসম্যানের থেকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পেলেন জেমস অ্যান্ডারসন। কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকর জানিয়ে দিলেন, রিভার্স সুইংয়ের সেরা শিল্পীদের তালিকায় উপরের দিকেই থাকবেন অ্যান্ডারসন। সচিনকে বিস্মিত করেছে অ্যান্ডারসনের বিশেষ রিভার্স সুইং। সচিন যার নাম দিয়েছেন, ‘রিভার্স-রিভার্স সুইং’। অর্থাৎ, উল্টো রিভার্স সুইং।
কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার অ্যাপে ভিডিয়ো চ্যাটে সচিন ব্যাখ্যা করেছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কেন অ্যান্ডারসন বড় ভূমিকা নিতে পারেন। সচিন বলেছেন, ‘‘নতুন বলে অ্যান্ডারসন একেবারেই ব্যকরণ মেনে আউটসুইং করাত। ইনসুইং করানোর সময় সামান্য কব্জির স্থান পরিবর্তন করে বল ভিতরের দিকে আনত। কিন্তু রিভার্স সুইংয়ের ক্ষেত্রে অ্যান্ডারসনই একমাত্র যে সেটাও উল্টো করাতে পারত।’’ কী করে? নিজেই হাতে একটি বল তুলে নিয়ে ব্যাখ্যা করলেন সচিন। বলছিলেন, ‘‘আউটসুইং বোলার যখন রিভার্স সুইং করায়, বলের চকচকে দিক থাকে ভিতরে। শাইনের সঙ্গে ভিতরে আসে বল। ইনসুইং বোলারের রিভার্স সুইংয়ের ক্ষেত্রে শাইন থাকে বাইরে। অ্যান্ডারসন চকচকে ও ভারী দিক বাইরে রেখে কব্জি রাখত ইনসুইং ছাড়ার মতো। ব্যাটসম্যান ভাবত, বল ভিতরের দিকে আসবে। ইনসুইংয়ের সিম থাকার জন্য পিচের চার ভাগের তিন ভাগ ভিতরের দিকে আসার পরে দিক পরিবর্তন করে বাইরের দিকে যেত বল।’’ যোগ করেন, ‘‘ততক্ষণে ব্যাটসম্যান ইনসুইং খেলার জন্য তৈরি। কিন্তু ব্যাটের সামনে থেকে বাইরে বেরিয়ে যেত বল। অ্যান্ডারসনের বিরুদ্ধেই প্রথম এই অভিজ্ঞতা হয় আমার। তাই নাম দিয়েছি, রিভার্স-রিভার্স সুইং।’’
কী করে এ ধরনের বিস্ময়কর সুইং করাতেন অ্যান্ডারসন? বেশ কয়েক বার তাঁর শিকার হয়েছেন সচিন। কিংবদন্তি যদিও জানিয়ে দিলেন, বলের দু’দিকে ভারসাম্যের ব্যবধানে এ ধরনের সুইং হয়। চকচকে ও ভারী দিকেই সুইং করে পুরনো বল। সিম তখন শুধুই ধোঁয়াশা হিসেবে কাজ করে। তাই পুরনো বলে সিমের পরিবর্তে চকচকে দিক অনুমান করে ব্যাট করার পরামর্শ দিলেন সচিন।
‘মাস্টার ব্লাস্টার’ উপলব্ধি করেছেন, অ্যান্ডারসনের সঙ্গে স্টুয়ার্ট ব্রডও এই কৌশল রপ্ত করেন। কিন্তু অ্যান্ডারসন এই কৌশলের আবিষ্কর্তা। ‘‘ব্যাটসম্যান হিসেবে পুরনো বলের মোকাবিলা করার সময় বলের চকচকে দিক দেখেই খেলতে হয়। উপলব্ধি করি, ব্রডও এই কৌশল রপ্ত করে সময়ের সঙ্গে। কিন্তু অ্যান্ডারসন অনেক আগে এই কৌশল রপ্ত করে। ওকে বরাবর আমি বেশি নম্বর দিই। রিভার্স সুইং শিল্পের অন্যতম সেরা উদাহারণ ও,’’ বলে দিলেন সচিন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বর্তমান অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের প্রশংসাও করেন সচিন। তাঁর মতে, বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার রসদ আছে হোল্ডারের মধ্যে। বল হাতে ছয় উইকেট নিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন। এ বার ব্যাট হাতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেন কি না দেখার। কিংবদন্তির কথায়, ‘‘সব চেয়ে কম প্রচার পাওয়া অলরাউন্ডারের নাম হোল্ডার। সবাই হয়তো গ্যাব্রিয়েল আর রোচের উইকেট পাওয়ার অপেক্ষায় থাকবে। স্কোরবোর্ড দেখলে মনে পড়বে হোল্ডারও তিন উইকেট নিয়ে গেল। ব্যাট হাতেও গুরুত্বপূর্ণ ৫০-৫৫ রান করে যাবে। নিঃশব্দে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের মধ্যে।’’