ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।—ছবি এএফপি
পর্তুগিজ টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো জানালেন, ২০১৮ সালটা তাঁর জীবনের সব চেয়ে কঠিন সময় গিয়েছে। গত বছরই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন এক মার্কিন মডেল ক্যাথরিন মায়োরগা। ২০০৯ সালে রোনাল্ডো নাকি তাঁকে লাস ভেগাসে হোটেলের ঘরে ধর্ষণ করেন। জুন মাসে নেভাদার আদালতে অবশ্য প্রমাণের অভাবে রোনাল্ডোকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়। যদিও পর্তুগিজ তারকা পরে স্বীকার করে নেন, ওই মহিলাকে প্রচুর টাকা দিয়েছিলেন এই বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে।
সাক্ষাৎকারে রোনাল্ডো বলেছেন, ‘‘মানুষ যখন আপনার সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তখন খুব খারাপ লাগে। বেশি খারাপ লাগে কারণ আমার একটা বড় পরিবার, স্ত্রী (স্ত্রী বলতে তিনি বান্ধবীকে জর্জিনা রদ্রিগেসকে বুঝিয়েছেন) এবং সব বোঝে এমন বুদ্ধিমান এক ছেলে রয়েছে।’’ জুভেন্তাসের মহাতারকা যোগ করেছেন, ‘‘এটা এমনই একটা ব্যাপার যা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলা অস্বস্তিকর। কিন্তু এত কিছুর পরেও আরও একবার প্রমাণ হয়েছে, আমি পুরোপুরি নির্দোষ। তবে এটা ঘটনা যে, গত বছরটা আমার জীবনে সব চেয়ে খারাপ কেটেছে।’’
এই সাক্ষাৎকারেই রোনাল্ডো ইঙ্গিত দিয়েছেন, পরের বছর ফুটবলকে তিনি চিরবিদায় জানাতে পারেন। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে গত মরসুমে জুভেন্তাসে সই করেন তিনি। চৌত্রিশ বছরের রোনাল্ডো নতুন ক্লাবে ৪৩ ম্যাচে ২৮টি গোলও করেছেন। জুভেন্তাসকে আর একবার সেরি আ জেতাতে তাঁর অবদান অনেকটাই। অবসর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, ‘‘আসলে এটা নিয়ে আমি ভাবছিই না। হয়তো পরের মরসুমেই খেলা ছেড়ে দেব। কিন্তু এটাও ঘটনা যে, আমার যা ক্ষমতা তাতে ৪০-৪১ বছর পর্যন্ত খেলে যেতে পারি। ’’
এত বৈভবের পরেও রোনাল্ডো ভোলেননি অতীতকে। বলেছেন, ‘‘বছরে অনেক বার লিসবনে যাই। কখনও কখনও ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়রও আমার সঙ্গে আসে। গত বছর আমি ওকে দেখাতে চেয়েছিলাম কোথায় আমি বড় হয়েছি। আমি, পাইসাও (রোনাল্ডোর ছোটবেলার বন্ধু) আর ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়র সেই ঘরটায় যাই, যেখানে ওর সঙ্গে থাকতাম।’’ যোগ করেন, ‘‘আমার ছেলে সেখানে গিয়ে বলল, ‘বাবা, সত্যিই তুমি এখানে থাকতে?’ ও বিশ্বাসই করতে চাইছিল না। ও সব কিছু এখন কত সহজে পেয়ে যায়! আরামের জীবন, দারুণ সব বাড়ি আর গাড়ি, যে ভাবে সাজগোজ করে, জামাকাপড় পরে— সবই ভাবে আকাশ থেকে পড়ছে।’’ রোনাল্ডো জানিয়েছেন, তিনি চেষ্টা করেন ছেলেকে বোঝাতে যে, কঠোর পরিশ্রম করেই একমাত্র এত আরামের জীবন উপভোগ করা যায়।