বয়স যত বাড়ছে ততই বিধ্বংসী হচ্ছেন ফেডেরার
টেনিস ছাড়ার পরে তিনি আদর্শ স্বামী ও বাবা হতে চান।
গত বারের উইম্বলডনে মারিন চিলিচের বিরুদ্ধে সেই রুদ্ধশ্বাস পাঁচ সেটের লড়াই আজও মনে আছে তাঁর।
পরের মাসেই ছত্রিশে পড়তে চলেছেন তিনি। কিন্তু থামার কোনও নাম নেই। বয়স যত বাড়ছে ততই তিনি বিধ্বংসী হচ্ছেন।
তিনি— রজার ফেডেরার। রূপকথার ১৯ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম ও তাঁর মধ্যে এখন দাঁড়িয়ে শুধু মারিন চিলিচ। একটাও সেট না হারিয়ে ফেডেরার প্রমাণ করেছেন কেন তিনি বিশ্বের সেরা টেনিস তারকাদের মধ্যে একজন। ফাইনালের আগে ফে়ডেরার বলছেন, ‘‘আমার লক্ষ্যই ছিল উইম্বলডন ফাইনাল ওঠা।’’
আরও পড়ুন: আমি তৈরি, হুঙ্কার চিলিচের
ক্লে কোর্ট মরসুমে বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্তেই কি এত ভাল খেলতে পারছেন কিংবদন্তি? ‘‘ঘাসের কোর্টে ভাল খেলার জন্যই আমি বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। শারীরিক দিক দিয়ে ভাল অবস্থায় থাকতে চেয়েছিলাম,’’ বলছেন ফে়ডেরার।
বছরের প্রথম দু’তিন মাসে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন ফেডেরার। অস্ট্রেলীয় ওপেন ফাইনালে রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে আঠারোতম গ্র্যান্ড স্ল্যামও জিতেছিলেন সুইস তারকা। যা নিয়ে বলছেন, ‘‘বছরের প্রথম দু’তিন মাস আমার কাছে স্বপ্নের মতোই ছিল। আমার লক্ষ্য ছিল উইম্বলডনের আগে নিজেকে পুরোপুরি ফিট রাখা। ভাল লাগছে ভেবে সেটা কাজে এসেছে।’’
এক বছর আগে অবশ্য ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। উইম্বলডনের ফাইনালে উঠতে না পেরে ছ’মাস বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ফেডেরার। এ বছরে আবার সেই পুরনো মেজাজেই ছুটছে সুইস তারকার জয়রথ। একের পর এক সোনার পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে ফেডেরার প্রমাণ করেছেন, বয়স যত বাড়ছে তিনি তত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন। ফেডেরারের দাবি, ‘‘গত বছর ক্লে কোর্ট মরসুমে খুব কষ্ট হয়েছিল খেলতে। কারণ, হাঁটুর সমস্যায় ঘাসের কোর্টেও সেরাটা দিতে পারিনি। এ বছর আবার স্বাভাবিক খেলাটাই খেলছি।’’
ব্যক্তিগত রেকর্ডের নিরিখে মারিন চিলিচের বিরুদ্ধে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয় ফেডেরার। কিন্তু টেনিস কিংবদন্তি মনে করিয়ে দিতে চাইছেন চিলিচ বিশ্বের সেরা প্রতিভাদের মধ্যে একজন। ‘‘খুব বেশি ম্যাচ চিলিচের বিরুদ্ধে খেলিনি। কিন্তু এটুকু বলতে পারি ওর সঙ্গে খেলা খুব কঠিন। গত বছর ভাগ্যক্রমে আমি কোয়ার্টার ফাইনালে জিতেছিলাম। এ বার ফাইনালে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলব। চিলিচকে বেশি পয়েন্ট দেওয়া চলবে না,’’ বলছেন ফেডেরার।
উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টই তাঁর উত্থানের পিছনে অন্যতম কারণ, সেটাই স্বীকার করছেন ফেডেরার। রবিবার ঐতিহ্যের গ্র্যান্ড স্ল্যামে নিজের ১০২তম ম্যাচে নামতে চলেছেন ফেড-এক্স। ‘‘উইম্বলডনে ইতিহাস গড়তে দারুণ লাগে। দারুণ লাগে এখানে খেলতে। উইম্বলডনে আমার সব স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এ বার আট নম্বর খেতাবটা চাই। আশা করছি আরও একটা ভাল পারফরম্যান্স দেব রবিবার,’’ বলছেন ফেডেরার। কোর্টে একের পর এক কীর্তি গড়া ছাড়াও কোর্টের বাইরে আদর্শ স্বামী ও বাবা হতে চান ফেডেরার। টেনিস পরবর্তী জীবন নিয়ে ফেডেরারের ভবিষ্যদ্বাণী, ‘‘টেনিসের পরেও জীবন চলতে থাকবে। আমি আদর্শ বাবা আর স্বামী হতে চাই।’’