ফাইল চিত্র
১৯৯৩ সালে যেখানে বল বয় ছিলেন, ২৬ বছর পরে ঠিক সেখানেই ১০ নম্বর ট্রফি জিতলেন রজার ফেডেরার। বাসেলে সহজেই সুইস মহাতারকা রবিবার ফাইনালে স্ট্রেট সেটে হারালেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স ডিমিনিয়রকে। ফল ফেডেরারের পক্ষে ৬-২, ৬-২। ফাইনালে জেতার পাশাপাশি এই প্রতিযোগিতায় টানা ২৪টি ম্যাচে অপরাজিত থাকার নজিরও গড়লেন তিনি। শুধু তাই নয়, টানা ১৩ নম্বর ফাইনালে খেললেন তিনি সুইস ইন্ডোরে। যা ফেডেরারের খেলোয়াড় জীবনের ১০৩ নম্বর ট্রফিও।
এর আগে জুনে হ্যাল ওপেনে দশ নম্বর এটিপি খেতাব জিতেছিলেন তিনি। তার পরে আরও একটি প্রিয় ইভেন্টে তিনি ১০টি ট্রফি পেলেন। ফাইনালে আগাগোড়াই অপ্রতিরোধ্য লাগছিল ২০ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিককে। ম্যাচ পয়েন্টে প্রতিপক্ষের ফোরহ্যান্ড বাইরে পড়তেই দু’হাত আকাশে তুলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় সুইস মহাতারকাকে। স্টেডিয়ামের দর্শকরাও তখন উচ্ছ্বসিত। হবেন না-ই বা কেন, ১৯ বছর বয়েসে যে প্রতিযোগিতায় প্রথম নামেন রজার, সেখানে প্রায় দু’দশক তিনি অপ্রতিরোধ্য থাকার দুরন্ত নজির গড়ে দেখালেন। জয়ের পরে কথা বলতে গিয়ে আবেগরুদ্ধ হয়ে পড়েন সুইস মহাতারকা। তিনি বলেন, ‘‘অ্যালেক্সের জন্যও দারুণ গিয়েছে এই প্রতিযোগিতাটা। আমার মনে হয় ফাইনালে হারলেও ও খুব একটা অখুশি হবে না। আমার জন্য নিজের শহরে ১০ নম্বর ট্রফি জয়ের জন্য এর চেয়ে ভাল মুহূর্ত আর হয় না।’’
টেনিসে একটি প্রতিযোগিতা সর্বাধিক জয়ের ব্যাপারে সব চেয়ে এগিয়ে রাফায়েল নাদাল এবং মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। ১২ বার নাদাল জিতেছেন ফরাসি ওপেন। মার্টিনা ১২ বার জিতেছেন শিকাগো ওপেন। পাশাপাশি মন্টে কার্লো এবং বার্সেলোনা ওপেন ট্রফিও ১১ বার করে জিতেছেন স্প্যানিশ তারকা। একই ভাবে মার্টিনা ১১ বার জিতেছিলেন ইস্টবোর্ন ওপেন। ঠিক এর পরেই আছেন ফেডেরার। হ্যাল ওপেনের পরে এ বার বাসেলে ১০ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে।
গত মাসেই ফেডেরার জানিয়েছিলেন, হৃদয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে আগামী বছরের টোকিয়ো অলিম্পিক্সে অংশ নেবেন। তার আগে বছরের শেষ প্রান্তে পৌঁছে এই ট্রফি জয় কি তাঁকে মানসিক ভাবে আরও চাঙ্গা করে দিয়েছে? কুড়িটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক বলেছেন, ‘‘আমি বরাবর উপভোগ করেছি েটনিস। সেই মানসিকতা আগের মতোই রয়েছে। তবে আজকের ফাইনালে খেলা হয়েছে অত্যন্ত দ্রুত লয়ে। সেটা আমার কাছে নতুন একটা অভিজ্ঞতা।’’ সেখানেই না থেমে রজার আরও যোগ করেছেন, ‘‘প্রতিপক্ষ হিসেবে ডিমিনিয়র ছিল খুবই আক্রমণাত্মক। প্রথম সেটের পাঁচ গেম পর্যন্ত ও কিন্তু পাল্লা দিয়ে লড়াই করেছে। কয়েকটা র্যালি তো খুব চিত্তাকর্ষক ছিল। তবে নিজের প্রতি পূর্ণ আস্থা ছিল। ফলে ম্যাচটা ধরে নিতে তেমন কোনও সমস্যা হয়নি।’’
আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ার প্রসঙ্গে ফেডেরার বলেছেন, ‘‘আসলে আমি কোনও সময় ভাবিনি দশবার এখানে চ্যাম্পিয়ন হতে পারি। পরিচিত পরিবেশে খেলার মধ্যে বিশেষ একটা তৃপ্তি থাকে। আশা করছি, আগামী বছর আবার ফিরে আসব।’’