রবি ফাওলার। ফাইল চিত্র।
আইএসএলের প্রথম ডার্বিতে কি প্রধান আকর্ষণ হতে চলেছে আক্রমণ বনাম রক্ষণের লড়াই?
লাল-হলুদ শিবিরের কোচ লিভারপুল কিংবদন্তি রবি ফাওলার বিশ্বাস করেন আক্রমণাত্মক ফুটবলে। তাঁর দর্শন হচ্ছে, শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের রক্ষণের উপরে চাপ সৃষ্টি করে যাওয়া। যাতে তারা পাল্টা আক্রমণে উঠতে না পারে। অনুশীলনের প্রথম দিন থেকেই এই বিষয়ে বাড়তি জোর দিচ্ছেন তিনি। তার আভাস কেরল ব্লাস্টার্স এফসির বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচেই পাওয়া গিয়েছিল। ৩-১ জিতেছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। জোড়া গোল করেছিলেন নরউইচ সিটির হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা অ্যান্টনি পিলকিংটন। একটি গোল করেন গোপী সিংহ।
এসসি ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ এভার্টন ও ম্যাঞ্চেস্টার সিটির প্রাক্তন মিডফিল্ডার অ্যান্টনি গ্রান্ট। তার চেয়েও বড় পরিচয়, ফাওলারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তিনি। দু’জনেরই জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা লিভারপুলে। ১৯৯৩ সালে ফাওলার যোগ দেন লিভারপুলে। এভার্টনে সই করেন অ্যান্টনি। এক ক্লাবে একসঙ্গে না খেললেও দু’জনের বন্ধুত্বে কখনও ছেদ পড়েনি। অ্যান্টনি বলছেন, ‘‘রবির বিশেষত্ব হচ্ছে, ও অসম্ভব নমনীয়। কোনও বিশেষ ছকের প্রতি কখনও নির্ভর করে না। প্রতিপক্ষ অনুযায়ী রণনীতি তৈরি করে। ফুটবলজীবনে নিজেও খুব আক্রমণাত্মক ছিল। কোচিং করাতে এসেও নিজেকে বদলায়নি।’’ যোগ করলেন, ‘‘অনুশীলনে কখনও আমরা চার ডিফেন্ডারে খেলছি। কখনও আবার মাঝমাঠে ফুটবলারের সংখ্যা বাড়িয়ে তিন ডিফেন্ডারে খেলছি। তবে ছক যা-ই হোক না কেন, শুরু থেকেই গোলের জন্য ঝাঁপানো হচ্ছে আমাদের মন্ত্র। রবি সব সময়ই চায়, বল যেন ওর ফুটবলারদের দখলেই থাকে।’’ এর পরেই অ্যান্টনি মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘টানা ছ’বছর এভার্টনে থাকার সময় রবির বিরুদ্ধে কখনও জিততে পারিনি।’’
এটিকে-মোহনবাগানের স্পেনীয় কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের আবার রণনীতি হতে পারে রক্ষণ মজবুত করে গোলের জন্য ঝাঁপানো। এই কারণেই এ বার তিরি, সন্দেশ জিঙ্ঘান, শুভাশিস বসুকে নিয়েছেন তিনি। ম্যাচ প্র্যাক্টিসে তিরি ও সন্দেশকে একসঙ্গে খেলাচ্ছেন। কখনও আবার পরীক্ষা করে নিচ্ছেন প্রতিশ্রুতিমান সুমিত রাঠিকে। আর এক তারকা প্রবীর দাসকে রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি আক্রমণ তৈরির বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছেন স্পেনীয় কোচ।
রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসের মতো দুরন্ত ছন্দে থাকা স্ট্রাইকার থাকতে রক্ষণ সংগঠনে এত জোর কেন দিচ্ছেন হাবাস? তিরি, সন্দেশ ও শুভাশিস এ মরসুমে দলে যোগ দিয়েছেন। হাবাস মনে করেন, বাকি ডিফেন্ডারদের সঙ্গে বোঝাপড়া গড়ে উঠতে একটু সময় লাগবেই এই তিন জনের। তাই অনুশীলনে বাড়তি জোর দিচ্ছেন রক্ষণ সংগঠনের উপরে। এখানেই শেষ নয়। আইএসএল শুরু হওয়ার আগে প্রস্তুতি কেমন হয়েছে দেখে নেওয়ার জন্য সব দলই ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলছে। ব্যতিক্রম এটিকে-মোহনবাগান কোচ। রণকৌশল ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় হাবাস বাতিল করে দিয়েছেন প্র্যাক্টিস ম্যাচ!
লাল-হলুদ শিবিরে অবশ্য এত কড়াকড়ি নেই। শনিবার রাতে নৈশভোজের আগে পালন করা হল অ্যান্টনির জন্মদিন। আজ, রবিবার ফুটবলারদের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে ফের শুরু হয়ে যাবে আইএসএলের প্রস্তুতি।