রিচার্ড বেনো : ১৯৩০-২০১৫
টেস্ট ৬৩, রান ২২০১, সেঞ্চুরি ৩, সর্বোচ্চ ১২২, উইকেট ২৪৮।
ত্বকের ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই চলছিল গত নভেম্বর থেকে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা আর জিততে পারলেন না। চুরাশি বছর বয়সে চিরনিদ্রায় চলে গেলেন ‘ক্রিকেটের কণ্ঠস্বর’ রিচি বেনো।
লেগ স্পিনের অন্যতম পথিকৃৎ, অস্ট্রেলীয় ক্যাপ্টেন, কিংবদন্তি অলরাউন্ডার, কিংবদন্তি ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার। ক্রিকেট শব্দটার সঙ্গেই যেন সমার্থক ছিলেন বেনো।
ক্রিকেটার হিসাবে বেনোই প্রথম টেস্ট ক্রিকেটে ২০০০ রান ও ২০০ উইকেটের ডাবল করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৩টি টেস্ট খেলেন। রান ২২০১, উইকেট ২৪৮, সেরা ইনিংস ১২২। ২৮টি টেস্ট খেলেছেন ক্যাপ্টেন হিসাবে। তবে ১৯৬৪ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরই সম্ভবত তাঁর জীবনের আরও বর্ণময় অধ্যায়ের শুরু। যখন ক্রীড়া সাংবাদিক ও ধারাভাষ্যকার হিসাবে শুরু করেন নিজের দ্বিতীয় ইনিংস।
ধারাভাষ্যকার বেনো নিজস্ব কথা বলার ভঙ্গী, রসবোধ এবং ক্রিকেট প্রজ্ঞায় ছিলেন ক্রিকেট রসিকের প্রাণের মানুষ। কমেন্ট্রি বক্স থেকে সরাসরি ক্রিকেট প্রেমীর ঘরে ঘরে তাঁর পরিচিত ছবিটা পৌঁছে যাওয়া অবশ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ২০০৫ অ্যাসেজের পর। সরে এসেছিলেন প্রত্যক্ষ ধারাভাষ্যদান থেকে। তবে চ্যানেল নাইনের হয়ে কাজ করে যান ২০১৩ পর্যন্ত।
গত নভেম্বরে জানান ত্বকের ক্যানসারের জন্য রেডিয়েশন নিতে হচ্ছে। ২০১৩-এ এক ভয়াবহ পথদুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। ক্যানসারের হাত থেকে রক্ষা পেলেন না। তবে শেষটা এল পরম শান্তিতে। নিজের বিছানায় ঘুমের মধ্যেই চলে গেলেন চির বিদায় জানিয়ে।
বেনোর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ অস্ট্রেলিয়া। শোকস্তব্ধ গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রজন্ম বড় হয়েছে ওই গলাটা শুনে। মহান প্লেয়ার, মহান ক্যাপ্টেন। মাঠের বাইরেও সেই নেতৃত্বটা দিয়ে গিয়েছেন। আমাদের শিখিয়েছিলেন জেতার মানসিকতা কেমন হওয়া উচিত।’’
অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট বলেন, ‘‘আমরা শুধু ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নকেই হারালাম না। হারালাম এ দেশের সেরা আইকনকে।’’ বেনোর শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে, বলে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। অর্ধনমিত থাকবে অস্ট্রেলীয় পতাকা।