১২০ পয়েন্ট নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষে ভারত। দুই ম্যাচের সিরিজে দুটোই জিতে পুরো পয়েন্ট তুলে নিল তাঁরা। এই জয়ের পিছনে কার অবদান সব চেয়ে বেশি? কোন কোন জায়গায় নজর দিতে হবে পুনরায় দায়িত্ব পাওয়া কোচ রবি শাস্ত্রীকে? দেখে নেওয়া যাক।
প্রথম টেস্টে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি হয়েছিল অ্যান্টিগায়। সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৫ রানের মধ্যে তিন উইকেট পড়ে গিয়েছিল ভারতের। সেখান থেকে ভারতকে উদ্ধার করেন লোকেশ রাহুল ও অজিঙ্ক রাহানে। শেষের দিকে রবীন্দ্র জাডেজা ও ইশান্ত শর্মার লড়াই ভারতকে সাহায্য করে তিনশোর কাছাকাছি স্কোরকে পৌঁছে দিতে।
ব্যাটের পর বল হাতেও ক্যারিবিয়ানদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ান ইশান্ত। পাঁচ উইকেট তুলে তিনি বুঝিয়ে দেন কতটা উদগ্রীব হয়ে ছিলেন তিনি ভারতের জার্সি গায়ে নামার জন্য।
প্রথম ইনিংসে রাহানে যেখানে থেমে গিয়েছিলেন, সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। প্রথম ইনিংসে অল্পের জন্য শতরান হাত ছাড়া হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে সেই ভুল হয়নি। যদিও এবার নার্ভাস নাইন্টির শিকার হন হনুমা বিহারী। পন্থ আউট হয়ে ফিরলে তাঁর শতরানের জন্য খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিরাট। কিন্তু তিনি পারলেন না। যদিও ততক্ষণে ক্যারিবিয়ানদের সামনে ৪১৯ রানের বিশাল টার্গেট।
টি-২০, একদিনের সিরিজে বিশ্রাম পাওয়া বুমরা যে কতটা তরতাজা হয়ে টেস্টে ফিরেছেন তা বোঝা গেল দ্বিতীয় ইনিংসে। আট ওভার বল করে সাত রান দিয়ে তিনি তুলে নেন পাঁচ উইকেট, সঙ্গে আবার চারটি মেডেন। একাই যেন ধ্বংস করে দিলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং-কে।
প্রথম ম্যাচে সহজ জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে দুই দল মুখোমুখি হল কিংস্টনে। এই ম্যাচেও টস হেরে ব্যাট করতে নামে বিরাট বাহিনী। আগের ম্যাচে ব্যর্থ মায়াঙ্ক এই ম্যাচে বিরাটের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৬৯ রানের এক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। আর গত ম্যাচে সেঞ্চুরি হারানো হনুমা বিহারী কঠিন মানসিকতার পরিচয় দেন এই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে।
এই সিরিজের সেরা প্রাপ্তি অবশ্যই ব্যাটসম্যান ইশান্ত শর্মা। জীবনের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি পেয়ে যান তিনি। তাঁর খেলার মধ্যে ছিল পরিণত মানসিকতা। ভারতের ইনিংস চারশো পেরোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তিনি।
স্মরণীয় হয়ে থাকবে বুমরার প্রথম হ্যাটট্রিক। ছয় উইকেট নিয়ে তিনি একাই গুঁড়িয়ে দেন হোল্ডারদের। দিনে দিনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন বুমরা। এখন শুধু তাঁর ইয়র্কার নয়, ব্যাটসম্যানদের জন্য থাকছে বিষাক্ত ইনসুইং এবং আউটসুইং।
ফলো-অন করানোর সুযোগ থাকলেও রানের টার্গেট আরও বাড়িয়ে নিতে মাঠে নামেন বিরাটরা। শুরুতেই মাত্র ৫৭ রানে চার উইকেট হারায় তারা। এরপর আবার সেই রাহানে এবং বিহারীর চওড়া ব্যাট ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ৪৬৮ রানের টার্গেট রাখে।
রাহানের দুরন্ত ফর্ম, হনুমা বিহারীর পরিণত ক্রিকেট, আরও ভয়ঙ্কর বুমরা, ব্যাটে বলে দুই বিভাগেই দারুণ ইশান্তরা বুঝতেই দিলেন না কোহালি, পুজারাদের রান না পাওয়া।
যদিও চিন্তার কারণ হয়ে রইল ঋষভ পন্থ। ব্যাট হাতে তিনি শুধু যে ব্যর্থ তাই নয়, দুশ্চিন্তায় রাখছে তাঁর অপরিণত খেলা। বড় শট খেলার ঝোঁক বিপদ ডেকে আনছে দেখেও নিজেকে পাল্টানোর চেষ্টা করছেন না তিনি। বেঞ্চে বসে রয়েছেন অভিজ্ঞ ঋদ্ধি। ভবিষ্যতের জন্য পন্থকে তৈরি করার ভাবনা থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সিরিজে কিন্তু চিন্তায় রাখবে তাঁর ফর্ম।