প্রথম দিন ইশান্ত-শামি-বুমরাদের আগুন ঝরানো স্পেল কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিল ব্রিটিশ সিংহের বুকে। কিন্তু, ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা যে কাজটা শুরু করলেন, তাকেই চূড়ান্ত রূপ দিলেন মইন আলিরা। শুধু ম্যাচ নয়, সিরিজও হারলেন কোহালিরা। দেখে নেওয়া যাক ভারতের হারের কয়েকটি কারণ।
প্রথম ইনিংসে শুরুটা ভালই করেছিলেন ভারতীয় বোলাররা। এক সময় মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড বুঝি একশো রানের গণ্ডি টপকাতে পারবে না। তখনই রুখে দাঁড়ান স্যাম কারেন। ইংল্যান্ডের টেলএন্ডারদের দ্রুত ফেরত না পাঠানোর মাশুল দিতে হল ভারতকে।
কিছু ভদ্রস্থ স্কোর হওয়াতেই যেন বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে যান ইংল্যান্ডের বোলাররা। অন্য দিকে, ফের ব্যর্থ হলেন দুই ভারতীয় ওপেনার।
অধিনায়ক বিরোট কোহালি আর চেতেশ্বর পূজারা ছাড়া আর কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানই প্রথম ইনিংসে প্রায় কিছুই করতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত পূজারার শতরানে ভর করে সামান্য লিডও পেয়ে যায় ভারত। যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় ছিল খুবই সামান্য।
ভারতীয় পেস বোলিংয়ের সর্বকালের অন্যতম সেরা প্রদর্শনী ছিল সাউদাম্পটনের প্রথম ইনিংস। কিন্তু, শামি বাদে বাকি বোলারদের সেই দাপট দ্বিতীয় ইনিংসে অনেকটাই কম ছিল। ভারতীয় বোলারদের দুর্বলতাকে কাজে লাগালেন রুট-কারেনরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে তিনশোর কাছাকাছি রান তুলে ফেলে ইংল্যান্ড। সাউদাম্পটনের এই পিচে আড়াশোর কাছাকাছি রান তোলা চতুর্থ ইনিংসে মোটেই সহজ ছিল না। সঙ্গে উল্টো দিকে মইন আলিদের মতো বোলারদের সামলানোও সহজ ছিল না।
দু-এক জন ছাড়া কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানই ফর্মের ধারেকাছে নেই গোটা সিরিজে। দ্বিতীয় ইনিংসে কিছুটা লড়াই করলেন বিরাট-রাহানে। কিন্তু, তা যথেষ্ট ছিল না। একের পর এক ভারতীয ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া লেগে থাকল গোটা পর্বে।
বর্তমান ভারতীয় দলটির দুই সমস্যা খুবই জটিল হয়ে উঠছে। দলটি বড্ড বেশি বিরাট কোহালি নির্ভর। আর টেস্টে যাকে রাহুল দ্রাবিড়ের বিকল্প ভাবা হচ্ছিল, সেই চেতেশ্বর পূজারার ধারাবাহিকতার অভাব। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা পূজারা দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন মাত্র পাঁচ রান। যা বুঝিয়ে দিল তিনি এখনও দ্য ওয়াল হয়ে উঠতে পারেননি।
ব্যাট হাতে একেবারে ব্যর্থ হার্দিক পাণ্ড্য এবং ঋষভ পন্থ। লোয়ার মিডলে এই দুই ব্যাটসম্যানের নাগাড়ে ব্যর্থ হওয়া চাপে ফেলেছে গোটা দলকেই।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় চতুর্থ টেস্ট হারল ভারত। একই সঙ্গে বিদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ হারের কলঙ্কজনক রেকর্ড থেকেও মুক্তি পেল না কোহালির টিম ইন্ডিয়া।