India Vs Australia

কুলদীপের ম্যাজিক ওভার না রাহুলদের ব্যাটিং, ভারতের অজি বধের আসল কারণ কী

সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে শুক্রবার নাগপুরে নেমেছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ছয় উইকেটে তুলেছিল ৩৪০ রান। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয় ৩০৪ রানে। বিরাট কোহালির দল জিতে যায় ৩৬ রানে। যদিও জয় সহজে আসেনি। একসময় সহজ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া করা আতঙ্কের শিরশিরানি বইয়ে দিয়েছিল ভারতীয় শিবিরে। কেমন করে এল জয়, মোড় ঘুরল কী ভাবে, দেখে নেওয়া যাক।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ১১:৪১
Share:
০১ ১৫

সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে শুক্রবার নাগপুরে নেমেছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ছয় উইকেটে তুলেছিল ৩৪০ রান। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয় ৩০৪ রানে। বিরাট কোহালির দল জিতে যায় ৩৬ রানে। যদিও জয় সহজে আসেনি। একসময় সহজ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া করা আতঙ্কের শিরশিরানি বইয়ে দিয়েছিল ভারতীয় শিবিরে। কেমন করে এল জয়, মোড় ঘুরল কী ভাবে, দেখে নেওয়া যাক।

০২ ১৫

৮২ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চকে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। যে দু’জন মুম্বইয়ে প্রথম একদিনের ম্যাচে দশ উইকেটে জিতিয়েছিলেন দলকে। সেই ধাক্কা সামলে এর পর ম্যাচ ধরে ফেলেন স্টিভ স্মিথ ও মার্নাস লাবুশানে। দু’জনে তৃতীয় উইকেটে ৯৬ রান যোগ করে চাপে ফেলে দেন ভারতকে।

Advertisement
০৩ ১৫

লাবুশানের এটাই ছিল একদিনের ক্রিকেটে প্রথম ইনিংস। আরব সাগরের পারে তাঁর অভিষেক ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। শুক্রবার প্রথম ইনিংসেই জাত চেনালেন। টেস্ট ক্রিকেটে যে ছন্দে ছিলেন, সেই দাপটেই টানতে থাকলেন তিনি (৪৭ বলে ৪৬)। তাই, ৩০.৫ ওভারে রবীন্দ্র জাডেজার বলে মহম্মদ শামিকে ক্যাচ দিয়ে লাবুশানের উইকেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

০৪ ১৫

লাবুশানে ফিরলেও ক্রিজে ছিলেন স্মিথ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে এসেছিলেন ব্যাট হাতে। সেই থেকে দায়িত্ব নিয়ে এগোচ্ছিলেন। তাঁক দেখাচ্ছিল স্বচ্ছন্দ। পৌঁছে গিয়েছিলেন সেঞ্চুরির দোরগোড়াতেও। ভারতীয় দল জানত, জিততে হলে ফেরাতেই হবে স্মিথকে। কারণ, একাই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা তিনি ধরেন।

০৫ ১৫

আর এই প্রেক্ষাপটেই ৩৮ ওভারে কুলদীপ যাদবের জোড়া আঘাত হানা ম্যাচের মোড় ঘোরানো ওভার হয়ে উঠছে। অনেকে এই ওভারকে ম্যাজিক ওভার বলছেন। দ্বিতীয় বলে অ্যালেক্স ক্যারেকে ক্যাচ তোলালেন এক্সট্রা কভারে। তিন বল পরে মন্থর ডেলিভারিতে প্লেড-অন হয়ে গেলেন স্মিথ। শট খেলতে গিয়ে স্মিথ স্টাম্পে টেনে আনলেন বল। ১০২ বলে ৯৮ রানে ফিরলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম উইকেট পড়ল ২২১ রানে। আর সেখানেই ঘুরল ম্যাচ।

০৬ ১৫

স্মিথ ফিরতেই অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনায় কার্যত দাঁড়ি পড়ে গিয়েছিল। তবু ক্রিকেট তো! অঘটন ঘটতেই পারত। বিশেষ করে ক্রিজে যখন অ্যাশটন টার্নার নামে একজন ছিলেন। যিনি গত বছর মোহালিতে এই রকমই কঠিন রান তাড়াকে অবিশ্বাস্য ভাবে সহজ করে তুলেছিলেন। হারিয়েছিলেন ভারতকে। ফলে, আশঙ্কা ছিলই।

০৭ ১৫

৪৪তম ওভারের প্রথম বলেই মহম্মদ শামির ইয়র্কারে টার্নারের বোল্ড হওয়া তাই স্বস্তি আনল। ২৫৯ রানে পড়ল ষষ্ঠ উইকেট। পরের উইকেট এল সঙ্গে সঙ্গে। শামির দ্বিতীয় বলে একই ভাবে ইয়র্কারে বোল্ড হলেন প্যাট কামিন্স। খেলা ওখানেই কার্যত শেষ। তবে তিন উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার হলেও ৭৭ রান দিলেন শামি।

০৮ ১৫

ওয়াংখেড়েতে প্রথম একদিনের ম্যাচে ভারতীয় পেস বোলিংকে সাদামাটা দেখিয়েছিল। এ দিন কিন্তু ছন্দে দেখাল বুমরাদের। পেসাররা প্রথম দিকে লেংথ বল করলেও স্লগে সবাই প্রায় নিয়ম করে ইয়র্কার ফেলতে থাকলেন। জশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি, নবদীপ সাইনি— তিন পেসারই ছিলেন নিশানায় অভ্রান্ত। ফলে অজি ব্যাটসম্যানদের কাজ কঠিন হয়েছিল।

০৯ ১৫

প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে এ দিন বুমরা শুরু থেকেই ছিলেন ছন্দে। ফিঞ্চকে বার বার বিব্রত করেছিলেন। পর পর মেডেনও নিয়েছিলেন প্রথম পাওয়ারপ্লে-তে। জাম্পাকে ফিরিয়ে তিনিই ম্যাচে দাঁড়ি ফেলেন ৪৯.১ ওভারে। তবে এক উইকেটের জন্য নয়, ৯.১ ওভারে তাঁর মাত্র ৩২ রান খরচ করাই মনে থাকবে ক্রিকেটপ্রেমীদের।

১০ ১৫

সাইনির কেরিয়ারে শুক্রবার ছিল দ্বিতীয় ওয়ানডে। এ দিন তাঁর দ্বিতীয় ওভারে স্টিভ স্মিথ তিন বার বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছিলেন বল। সেই চাপ কাটিয়ে উঠে দারুণ ভাবে পরের দিকে বল করলেন সাইনি। ৬২ রান দিয়ে নিলেন দুই উইকেট। ম্যাচের পরে তাঁর প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত শোনাল বিশেষজ্ঞদের।

১১ ১৫

ভারতের দুই স্পিনার রবীন্দ্র জাডেজা ও কুলদীপ যাদব প্রথম একদিনের ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারেননি। রাজকোটে ঘরের মাঠে জাডেজা কিন্তু রান আটকানোর পাশাপাশি দুই উইকেটও নিলেন। এবং দুটোই গুরুত্বপূর্ণ শিকার। প্রথমে ফিঞ্চকে ফেরালেন, তার পর লাবুশানেকে। শিশির না পড়ায় সুবিধা কাজে লাগালেন তিনি।

১২ ১৫

জাডেজার প্রথম উইকেটের ক্ষেত্রে অবশ্য কৃতিত্ব দাবি করতেই পারেন লোকেশ রাহুল। উইকেটকিপারের ভূমিকাতেও স্বচ্ছন্দ দেখাল তাঁকে। অতীতে আর এক কর্নাটকি পাঁচ নম্বরে নামতেন এবং উইকেটকিপিং করতেন। সেই রাহুল দ্রাবিড়ের মতোই লোকেশ রাহুলকে দেখা গেল দ্বৈত ভূমিকায় সমান পারদর্শিতার সঙ্গে।

১৩ ১৫

তার আগে ব্যাট হাতেও ম্যাচের মোড় ঘোরানো ইনিংস খেলেছেন লোকেশ রাহুল। সহজাত ওপেনার তিনি। ওপেনিংয়ে জায়গা না হওয়ায় মুম্বইয়ে নেমেছিলেন তিনে। আর রাজকোটে এলেন পাঁচে। এবং দেখালেন পরের দিকে বড় শট খেলে রানের গতি বাড়ানোর ক্ষমতাও তাঁর রয়েছে। যা ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে।

১৪ ১৫

শিখর ধওয়ন মুম্বইয়ে প্রচুর ডট বল খেলেছিলেন। যা নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। রাজকোটে কিন্তু শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন তিনি। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে বোলারদের শাসন করতেই চাইছেন, শাসিত হতে নয়। সেঞ্চুরি নিশ্চিত ছিল তাঁর। কিন্তু ৯০ বলে ৯৬ রানের ইনিংস ব্যক্তিগত কীর্তির চেয়ে দলকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন তিনি।

১৫ ১৫

এবং বিরাট কোহালি। চার নম্বরে নয়, নেমেছিলেন নিজের জায়গা তিন নম্বরে। খেললেন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে। সচল রাখলেন স্কোরবোর্ড। প্রথমে ধওয়নের সঙ্গে ১০৩ রানের জুটি। তার পর রাহুলের সঙ্গে ৭৮ রানের জুটি। যা ভরসা জোগাল ইনিংসে। ফের জাম্পার শিকার হলেও ফিরলেন ছয় মারতে গিয়ে, রিলে ক্যাচের সুবাদে। ৭৬ বলে ৭৮ রানের ইনিংস থাকল ঝকঝকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement