Ravi Shastri

কোহালি আগ্রাসী, রাহানে ধুরন্ধর, শাস্ত্রীয় মতে সেরা প্রত্যাবর্তন

বক্সিং ডে টেস্টে ভারতীয় দলের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে হেড কোচ রবি শাস্ত্রী ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে যা বললেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:১৭
Share:

বাহবা: অভিষেক টেস্টে নজর কেড়েছেন। অপরাজিত শুভমন গিলকে অভিনন্দন হেড কোচ শাস্ত্রীর। গেটি ইমেজেস

অ্যাডিলেডে ৩৬ রানে অলআউট হয়ে যাওয়া থেকে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়ায় গত ৫০ বছরে টেস্টে ০-১ হয়ে যাওয়ার পরে তৃতীয় দল হিসেবে এ ভাবে উঠে দাঁড়ানো। বক্সিং ডে টেস্টে ভারতীয় দলের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে হেড কোচ রবি শাস্ত্রী ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে যা বললেন।

Advertisement

ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স: আমার মনে হয় এই জয় ভারতীয় ক্রিকেটেই শুধু নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম দুরন্ত প্রত্যাবর্তন হিসেবে লেখা থাকবে। ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার তিন দিন পরে উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা লড়াই করার জন্য তৈরি হওয়াটা দারুণ ব্যাপার। এর জন্য সব কৃতিত্ব দলের ক্রিকেটারদের।

ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই: অ্যাডিলেডে আমাদের খেলার অনেক ইতিবাচক দিক ছিল। কিন্তু দিনের শেষে কি ফল হল, সেটাই সবাই দেখে। দ্বিতীয় ইনিংসে এক ঘণ্টায় আমরা ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছিলাম। বিপর্যস্ত হওয়া মানে বিপর্যস্ত হওয়া। এর পরে আর কিছু করার থাকে না উঠে দাঁড়িয়ে আবার লড়াই করার জন্য তৈরি হওয়া ছাড়া। যেটা আমরা এই টেস্টে করে দেখিয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে জয়, বিশেষ করে ওদের দেশে, এখানে এক দিন, দু’দিন নয় পাঁচ দিনই ভাল খেলতে হয় ওদের হারাতে।

Advertisement

চতুর্থ দিনের ভাবনা: আমরা জোর দিয়েছিলাম নিখুঁত থাকা, সঙ্গে ধৈর্য রাখার উপরে। এমনকি যদি ওরা একটা সেশন বা তার বেশি ব্যাট করে, তার পরেও। যদি প্রয়োজন হয় ১০০ থেকে ১৫০ রান তাড়া করতে প্রস্তুত থাক। এমন ভাবে তৈরি থাকতে হবে যে আমাদের আর চার উইকেট নয়, ১০ উইকেট তুলতে হবে। এ রকমই ভাবনা ছিল।

রাহানের ব্যাটিং: এ রকম বড় মঞ্চে অধিনায়কত্ব করতে নামা, চার নম্বরে ব্যাট করা, যখন ও ব্যাট করতে নামল আমাদের ৬০ রানে দুই উইকেট চলে গিয়েছিল। এর পরে ছ’ঘণ্টা ব্যাট করেছে। তাও সে দিন সম্ভবত ব্যাটিং করাটা সব চেয়ে কঠিন ছিল। মেঘলা আবহাওয়া ছিল। গোটা দিন সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। এর মধ্যেও ছ’ঘণ্টা ব্যাট করেছে। অবিশ্বাস্য একাগ্রতা। আমার মনে হয় ওর ইনিংসটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।

বিরাট ও রাহানের অধিনায়কত্ব: বিরাট খেলাটা সম্পর্কে যেমন আবেগপ্রবণ, সে রকম মাঠেও ওর নেতৃত্বে আগ্রাসী চেহারাটা ফুটে ওঠে। রাহানে অধিনায়ক হিসেবে ধুরন্ধর। দু’জনেই খেলাটা খুব ভাল বোঝে। বিরাট এমন একজন যে মুখের উপরে জবাব দিয়ে দেবে। রাহানে সেখানে খুব শীতল মস্তিষ্কের, গোছানো প্রকৃতির। আমার মনে হয় মাঠে ওর এই শান্ত থাকার ব্যাপারটা অভিষেক টেস্টে যারা নেমেছিল তাদেরও সাহায্য করেছে। বোলারদের সাহায্য করেছে। ওর এই ঠান্ডা মাথায় সব কিছু সামলানোটার একটা প্রভাব ছিল। উমেশের চোট পাওয়ার পরেও রাহানে দারুণ ভাবে সব সামলেছে।

অভিষেক টেস্টে সিরাজ, গিল: দু’জন অভিষেক টেস্টে নামলেও ওদের পরিণতবোধ ও শৃঙ্খলা দারুণ লেগেছে। গত তির-চার বছর ধরে এই ধরনের ক্রিকেটটাই আমরা খেলে আসছি। মঙ্গলবার সিরাজ দুরন্ত ছিল। হয়তো ওর বোলিং পরিসংখ্যান দেখলে সেটা বোঝা যাবে না। কিন্তু যে ভাবে ও লম্বা স্পেলগুলো করে গিয়েছে, প্রথম টেস্টে নেমেও পরিণত মানসিকতা দেখিয়েছে, উমেশ বোলিং করতে না পারার পরে সেই চাপটা সামলেছে, তা এক কথায় অসাধারণ। শুভমনের ব্যাটিংয়েও যে বিচক্ষণতা ছিল, সেটা দারুণ লাগল। যে মানসিকতা ও দেখিয়েছে তাঁর প্রশংসা করতেই হবে। শুভমনও প্রথম টেস্ট খেলতে নামলেও ওকে খুব পরিশীলিত, শান্ত দেখিয়েছে। শট মারতে ভয় পায়নি। যেটা দারুণ ব্যাপার। এমনকী দ্বিতীয় ইনিংসেও ও নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেছে। যা দলের দিকে থেকে খুব ভাল।

জাডেজাকে নিয়ে: জাডেজা খাঁটি অলরাউন্ডার। ও ছ’নম্বরে ব্যাট করতে নামতে পারে, প্রয়োজন হলে পাঁচ নম্বরেও পারে। এই কারণেই দলে ও আরও ভারসাম্য এনেছে। দেশের বাইরে খেলতে গেলে অনেক সময় এক জন বোলারের চোট লাগার সম্ভাবনা থাকে। যেমন উমেশের সঙ্গে হল। কিন্তু জাডেজা দলে থাকলে জোরে বোলাররাও কিছুটা সময় পায়। তখন জাড্ডু ও অশ্বিন বোলিংয়ের দায়িত্ব নিতে পারে।

উইকেটকিপার ঋষভ: আমার মনে হয় ঋষভ খুব ভাল খেলেছে। যে কেউ ভুল করতেই পারে। যে কোনও ব্যাটসম্যানের ভুল হতে পারে। কিন্তু ও শৃঙ্খলা দেখিয়েছে, রান করেছে, ওর পাল্টা আক্রমণের ক্ষমতা রয়েছে, সঙ্গে নিজের শটগুলো খেলে ম্যাচ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এটা দলের জন্য খুব ইতিবাচক একটা দিক। হয়তো ও ২৯ রান করেছে। কিন্তু ওটা ২৯ রানের চেয়েও বেশি দামি ছিল।

রোহিতের যোগ দেওয়া নিয়ে: আমরা পাঁচ বোলারেই খেলব। রোহিত দলের সঙ্গে বুধবার যোগ দিচ্ছে। ওর সঙ্গে কথা বলে দেখতে হবে শারীরিক ভাবে ও এখন কোন জায়গায় আছে। কারণ ওকে এতটা সময় নিভৃতবাসে থাকতে হয়েছে। দেখতে হবে ও নিজে কী মনে করছে। তার পরে সিদ্ধান্ত নেব আমরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement