রাঠৌরের দিকে তাকিয়ে ভারতীয় ক্রীড়া মহল। ফাইল চিত্র
হাঁটু ও শিরদাঁড়ায় অস্ত্রোপচার করানোর পরেও আথেন্স অলিম্পিক্স থেকে শুটিং-এর ডাবল ট্র্যাপ ইভেন্টে রুপো জিতে ফিরেছিলেন তিনি। ফলে ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া জগতের সুবিধা-অসুবিধা জানেন তিনি।
আথেন্স থেকে রুপো জয়ের তেরো বছর পর রবিবার সেই রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী হয়ে জানিয়ে দিলেন, ‘‘ক্রীড়াবিদদের জন্য সেরা পরিকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা প্রদান করাই প্রথম লক্ষ্য।’’ সঙ্গে এটাও বলতে ভোলেননি, ‘‘স্কুল, কলেজের সঙ্গে যুবসমাজকে শিক্ষিত এবং ব্যক্তিত্বপূর্ণ করার অন্যতম জায়গা খেলার মাঠ।’’
তেরো বছর আগে গ্রিসের রাজধানীতে রাজ্যবর্ধনের সঙ্গে জীবনের শেষ অলিম্পিক্সে গিয়েছিলেন প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় ধনরাজ পিল্লাই। ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে রাজ্যবর্ধনের এই ইচ্ছা, আনন্দবাজার-এর কাছ থেকে জেনে প্রাক্তন হকি অধিনায়ক ধনরাজের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যাক, এত দিনে দেশের এমন একজন ক্রীড়ামন্ত্রী হলেন, যিনি সর্বোচ্চ স্তরে খেলেছেন। জানেন খেলোয়াড়দের ঘাম, রক্তের দাম।’’
প্রাক্তন এই হকি তারকা আরও বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর শিক্ষা, অনুশাসন রয়েছে রাজ্যবর্ধনের। আশা রাখি, ওর থেকে নতুন কিছু পাবে দেশের ক্রীড়া-প্রতিভাগুলো। শহরের সঙ্গে গ্রামেও মিলবে খেলাধূলার আধুনিক পরিকাঠামো।’’
আর এক অলিম্পিয়ান প্রাক্তন ফুটবলার চুনী গোস্বামীও বলছেন, ‘‘নিজে পদকজয়ী অলিম্পিয়ান হওয়ায় রাজ্যবর্ধন ক্রীড়া জগতের অন্ধকার দিকগুলো কী তা জানেন। ফলে খেলার মাঠে কেন সাফল্য মিলছে না তা খুব সহজেই ধরতে পারবেন রাজ্যবর্ধন। ’’
কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী এ দিন আরও বলেছেন, ‘‘গ্রাম স্তর কিংবা অলিম্পিক্স সব স্তরেই পদক জিততে হবে-এ রকম মানসিকতার প্রসার চাই ক্রীড়াবিদদের মধ্যে। সেই ভাবেই কাজ শুরু করতে চাই। আর ক্রীড়াবিদদের মানসিক প্রস্তুতি থাকুক, যে কোনও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মাঠে নেমে উৎকর্ষতা বাড়াতে হবে।’’
দায়িত্ব নেওয়ার দিনেই ক্রীড়ামন্ত্রীর এই মন্তব্য জেনে অভিভূত জাতীয় রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারাও। এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, ‘‘রাজ্যবর্ধনের নিয়োগে দেশের খেলাধূলা গুরুত্ব পাবে গোটা দেশে।’’ একদা রাজ্যবর্ধনের সতীর্থ বেজিং অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী শুটার অভিনব বিন্দ্রা নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী নিয়োগের খবর পেয়েই উচ্ছ্বসিত। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যবর্ধন রাঠৌর দেশের ক্রীড়ামন্ত্রী এটা জেনে দারুণ লাগছে।’’
লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জয়ী শুটার গগন নারাং টুইট করেন, ‘রাঠৌর তোমার ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্তি নতুন আশা জাগাচ্ছে। কারণ এক দিন তুমিও খেলোয়াড় ছিলে। তাই জানো কী কী প্রতিকূলতার মোকাবিলা একজন খেলোয়াড়কে করতে হয়। শুভেচ্ছা রইল’।
লন্ডন অলিম্পিক্সে বক্সিং-এ ব্রোঞ্জজয়ী দেশের প্রথম মহিলা বক্সার মেরি কমও নবনিযুক্ত ক্রীড়ামন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন, ‘নতুন দায়িত্বেও আপনি সফল হবেন। এই শুভেচ্ছা রইল’। জোড়া অলিম্পিক্স থেকে কুস্তিতে দেশের হয়ে পদক জয়ী সুশীলকুমারও টুইট করেন শুভেচ্ছা জানিয়ে। বেজিং অলিম্পিক্সে পদকজয়ী বক্সার বিজেন্দ্র সিংহ-র টুইটারে প্রতিক্রিয়া, ‘ভারতীয় খেলাধূলার জগতে আপনার রেকর্ড সবার জানা। সেনাকর্মী, অলিম্পিক্সে পদকজয়ী রাঠৌরজি এ বার আপনি ক্রীড়ামন্ত্রী। শুভেচ্ছা রইল’।
অলিম্পিয়ান জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকারও টুইট করেছেন, ‘আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা রাঠৌর স্যার’। রাজীব খেলরত্ন জয়ী প্যারালিম্পিয়ান দেবেন্দ্র ঝাঝরিয়াও রাজ্যবর্ধনের ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়ার খবর শুনে টুইট করেন, ‘অনেক শুভেচ্ছা রাঠৌরজি। খেলার জগতে উৎকর্ষ বাড়বে এই আশা নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম’।