—ফাইল চিত্র।
রজার ফেডেরার নেই এ বারের টুর্নামেন্টে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে ‘ফেডেরার’কে ফিরিয়ে আনলেন তাঁরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী! রজারের মতো অবিকল দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে রিটার্ন মারলেন রাফা নাদাল। নাদালের এই শটকে নৈশালোকের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়াম বলছে রাফার ‘টুইনার’ লব। দু’দিন আগে যিনি ছাদ ঢাকা আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস এবং ম্যাচ দু’টোতেই প্রথম শট মারার নজির গড়ায় বলা হচ্ছিল, রাফার ‘ডাবল রুফ’ শট।
‘ডাবল রুফ’ থেকে ‘টুইনার’-এ পাল্টে যাওয়া নাদাল গত রাতে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ৪৭ নম্বর রুশ আন্দ্রেই কুজনেৎসভকে ৬-১, ৬-৪, ৬-২ হারিয়ে ২০১৩-র পরে প্রথম বার যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের শেষ ষোলোয় ওঠার পথে ফে়ডেরারসুলভ শটটা মারেন। জয়ের কাছাকাছি এসে পড়া স্প্যানিশ সুপারস্টার বেসলাইনের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন কুজনেৎসভের একটা লব ফেরাতে। নাদাল তখন নেটের দিকে পিছন ফেরা। সেই অবস্থায় দু’পায়ের ফাঁকে র্যাকেটটা এনে বল লব করে দেন। সেই লব করতে গিয়ে নাদালের হাত থেক র্যাকেটও মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু অনবদ্য ফিটনেসের পরিচয় রেখে পর মুহূর্তে সেটা তুলে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীর পরের রিটার্ন ফেরাতে তৈরি হয়ে যান তিনি। শেষমেশ নাদাল-ই ওই পয়েন্টটা জেতেন। আর তার পর চোদ্দো গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়নও উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়ে প্রচণ্ড গর্জন করতে করতে প্রথমে মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশে ছুড়লেন, পর মুহূর্তে দু’হাত পাখির ডানার মতো দু’পাশে ছড়িয়ে দিলেন, সবশেষে নিজের বুকে ঘুষি মারলেন!
ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে স্বভাবতই ওই শট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আর নাদাল হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘ওই রকম শট আপনি কখনও প্র্যাকটিস করতে পারবেন না!’’ আরও মজার ব্যাপার হল, যে দিন ফেডেরারকে মনে করালেন নাদাল, সে দিনই স্বয়ং ফেডেরার আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একঝাঁক ছবি পোস্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি আপাতত টেনিসের থেকে বহু দূরে। সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যামের মাaলিক সুইৎজারল্যান্ডে ‘জাঙ্গল সাফারি’তে ব্যস্ত যে এখন!
এ দিকে, যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নাদালের সবচেয়ে বড় কাঁটা শেষ ষোলোয় পৌঁছে গিয়েছেন কার্যত মাত্র একটা ম্যাচ খেলে। তিনি জকোভিচ, প্রথম রাউন্ড জেতার পরে দ্বিতীয় রাউন্ডে কোর্টে না নেমেই ওয়াকওভার পেয়ে যান আহত ভ্যাসেলির বিরুদ্ধে। তৃতীয় রাউন্ড উতরোতেও মাত্র ৩১ মিনিট লেগেছে জকোভিচের। কারণ, বিপক্ষ মিখায়েল ইউজনি প্রথম সেটে ২-৪ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় চোটের জন্য ম্যাচ ছেড়ে দেন। জকোভিচ নিজেও বলেছেন, ‘‘গ্র্যান্ড স্ল্যামে আমার এমন অভিজ্ঞতা জীবনে কখনও হয়নি!’’ অভাবিত ঘটনার মধ্যেই ২০১৪-র চ্যাম্পিয়ন মারিন চিলিচকে দ্বিতীয় রাউন্ডে হারিয়ে দেন স্থানীয় মার্কিন জ্যাক সোক। আর মহম্মদ আলির মতো মুখের সঙ্গা তৃতীয় রাউন্ডে জেতার পরে আলির মতোই বক্সিং ‘পোজ’ দিয়ে জয়োৎসব পালন করেন কোর্টেই। দিনটা ভারতীয়দের কাছে ভাল-মন্দের। লিয়েন্ডারের পরে বোপান্নাও ডাবলস থেকে বিদায় নিয়েছেন। তবে মিক্স়ড ডাবলসে প্রথম রাউন্ডে জেতেন শীর্ষ বাছাই সানিয়া মির্জা। ক্রোট সঙ্গী ইভন ডডিগকে নিয়ে।