বিধ্বংসী। কথা ছিল সাইনা বনাম সিন্ধুর লড়াইয়ের। কিন্তু হল না। প্রিমিয়ার ব্যাডমিন্টন লিগে সাইনার জায়গায় শেষ মুহূর্তে নামেন ঋতুপর্ণা দাস। জুনিয়র প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে অবশ্য মেজাজেই পাওয়া গেল পিভি সিন্ধুকে। সিন্ধু দাঁড়াতেই দেননি ঋতুপর্ণাকে। জিতলেন ১১-৪, ১১-৬। বুধবার বেঙ্গালুরুতে। ছবি: পিবিএল
তাঁদের দু’জনের কোর্টের শত্রুতা নিয়ে ব্যাডমিন্টন বিশ্বে এখন সবচেয়ে আলোড়ন। অলিম্পিক্সের পর থেকে পিভি সিন্ধু বনাম ক্যারোলিনা মারিন মানেই জিভে জল আনা যুদ্ধের স্বাদ।
সিন্ধুকে কোর্টে দেখলেই কি তেতে যান মারিন?
স্প্যানিশ তারকা বলছেন, ‘‘সিন্ধু খুব শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। ওর বিরুদ্ধে তাই সেরাটা নিংড়ে দিতে হয়।’’
সিন্ধু-মারিন লড়াইটা আরও জমে উঠেছে প্রিমিয়ার ব্যাডমিন্টন লিগে। এর মধ্যেই পিবিএলে এক বার মারিনের কাছে হেরেছেন সিন্ধু। বুধবার অবশ্য পিবিএলে সাইনা বনাম সিন্ধু আগ্রহ তুঙ্গে ছিল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হল না। আওয়ধি ওয়ারিয়র্স সাইনার বদলে শেষ মুহূর্তে ঋতুপর্ণা দাসকে নামানোয়। এমনিতেই সাইনা চোট সারিয়ে ছন্দে আসার পথে রয়েছেন। তাই ইতিমধ্যে সেমিফাইনােল উঠে যাওয়ায় বুধবার সাইনাকে নামানোর ঝুঁকি নেয়নি তাঁর ফ্র্যাঞ্চাইজি। সিন্ধু যে ম্যাচে সহজেই জিতলেন ১১-৪, ১১-৬। যে জয়ের পর চেন্নাই স্ম্যার্শার্স ৪-৩ হারাল সাইনাদের আওয়াধি ওয়ারিয়র্সকে।
এ বার যাবতীয় আগ্রহ সিন্ধু, মারিন আর সাইনার ফের মুখোমুখি হওয়া নিয়ে।
তার আগে পিবিএলে প্রথম বার আসার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বললেন বুধবার মারিন। সিন্ধুকে নিয়ে অলিম্পিক্সের পর ভারতে যে রকম মাতামাতি হয়েছে সেটা অবাক করেছে অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়নকে। ‘‘শুনলাম সিন্ধু প্রচুর টাকা পেয়েছে অলিম্পিক্সের পর। আমিও কিছু অর্থ পেয়েছি স্প্যানিশ সরকারের থেকে। তবে সিন্ধুর তুলনায় সেটা হয়তো ১০-১৫ শতাংশ,’’ বলেন মারিন।
রিওতে রুপো জেতার পর দেশে সিন্ধুর অর্থপ্রাপ্তির পরিমাণটা ঠিক কত?
শোনা যায় নগদ অর্থের দিক থেকে সিন্ধু সব মিলিয়ে পেয়েছেন প্রায় ১৩ কোটি টাকা। সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ আর তেলঙ্গানা সরকার তাঁকে জমি উপহার দেওয়া, হায়দরাবাদ ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের বিলাসবহুল গাড়ি উপহার তো আছেই। পাশাপাশি এনডোর্সমেন্ট থেকে সিন্ধু নাকি পেয়েছেন প্রায় ৫০ কোটি টাকা। তুলনায় সোনাজয়ী মারিনের প্রাপ্তি স্প্যানিশ সরকারের থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা আর্থিক পুরস্কার। স্প্যানিশ তারকা তাই সিন্ধুর অর্থপ্রাপ্তির বহর দেখে আশ্চর্য হয়ে গেছেন।
তবে সিন্ধুর ব্যাপারটা ভারতে ব্যাডমিন্টন কতটা জনপ্রিয় সেটা বুঝিয়ে দিচ্ছে মারিনকে। তিনি বলেন, ‘‘এতেই বোঝা যাচ্ছে ভারতে ব্যাডমিন্টন বিরাট জনপ্রিয়। স্পেনে কিন্তু ব্যাপারটা সে রকম নয়। ওখানে কিছু কিছু অঞ্চলে ব্যাডমিন্টনের জনপ্রিয়তা আছে। তাও সেটা বিরাট কিছু নয়। তাই ব্যাডমিন্টনের ব্যবসায়িক সাফল্যের দিক থেকে ভারত মডেল হতে পারে বলে আমার মনে হয়।’’
শুধু সিন্ধু নন, সাইনা নেহওয়ালের প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ মারিন। বিশেষ করে ব্যাডমিন্টন বিশ্বে তিনি সিন্ধু আর সাইনা যে ভাবে চিনা দাপট ভেঙে দিয়েছেন সেটা নিয়ে একটা প্রছন্ন গর্ব উঠে এল তাঁর কথায়। বললেন, ‘‘আমি, সিন্ধু আর সাইনা ব্যাডমিন্টনে চিনের প্রাচীরটা ভেঙে দিয়েছি। চিনা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে খেলাটা সব সময়ই কঠিন। চিনের প্লেয়ার যে রকম প্রচুর। কোর্টে ব্যাডমিন্টনটাও সে রকম পর্যায়ের খেলে। আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জটা তাই সোজা ছিল না।’’