আত্মবিশ্বাসী: টোকিয়োয় পদক জয়ে বড় ভরসা সিন্ধু। ফাইল চিত্র।
যোগ্যতা অর্জনের পরেও টোকিয়ো অলিম্পিক্সে যেতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। এ বার সেই অলিম্পিক্সই দিন কয়েক দূরে দাঁড়িয়ে। তাই কোর্টে নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন ব্যাডমিন্টনে ভারতের পদক-সম্ভাবনা সেই পি ভি সিন্ধু।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্যিক সংস্থা ব্রিজস্টোনের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে এক ভিডিয়ো-আলোচনায় হাজির হয়ে রিয়ো অলিম্পিক্সে রূপোজয়ী এই তারকা বলেই দিলেন, ‘‘এক সময় ভাবছিলাম, টোকিয়ো অলিম্পিক্সে যেতে পারব কি না। শেষ পর্যন্ত অলিম্পিক্স হচ্ছে সমস্ত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেই। তাই এ বার গেমসে কোর্টে নেমে নিজের সেরাটা দেওয়ার পালা। আশা করি, যে ভাবে ইতিবাচক মেজাজে প্রস্তুতি নিয়েছি। তাতে পদক নিয়েই ফিরতে পারব।’’
সিন্ধুর মতে, অলিম্পিক্স এই গ্রহের সেরা ক্রীড়া-প্রতিযোগিতা। সেখানে নিজের সেরা ছন্দে খেলার জন্য তাঁর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। তাঁর কথায়, ‘‘অলিম্পিক্স মানে নিজের স্বপ্নকে তাড়া করা। গোটা দেশ পাশে রয়েছে। টোকিয়োয় প্রত্যাশার চাপের চেয়েও মনের মধ্যে থাকবে নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা। এটা আমার দ্বিতীয় অলিম্পিক্স। তাই জানা আছে, এই বিশাল প্রতিযোগিতার আবহ।’’ যোগ করেছেন, ‘‘গত বছর অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ার পরে সাময়িক ভাবে খারাপ লেগেছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ওটা আশীর্বাদ হিসেবেই এসেছিল। অতিমারির এই সময়ে গত কয়েক মাসে অনেক কিছু শিখেছি। নিজেকে আরও নিখুঁত ভাবে তৈরি করেছি। পরিশ্রমে কোনও খামতি রাখিনি।’’ মানসিক অবসাদ যাতে না আসে সিন্ধু তার জন্য প্রস্তুতিতেই ডুবিয়ে রেখেছিলেন নিজেকে। উদ্দেশ্য, নেতিবাচক চিন্তা প্রবেশ করতে না দেওয়া। বলছেন, ‘‘যাবতীয় সুরক্ষা বিধি কঠোর ভাবে মেনেছি। প্রতিষেধক নিয়েছি। ফলে শারীরিক ভাবেও সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’’
রিয়োতে ব্যাডমিন্টনের ফাইনালে গ্যালারিতে জাতীয় পতাকা হাতে ভারতীয় সমর্থকেরা এসেছিলেন। করোনা সংক্রমণের বিশ্বজুড়ে দাপটের কারণে এ বার টোকিয়োর গ্যালারিতে বিদেশি দর্শকদের প্রবেশাধিকার নেই। সিন্ধুর কথায়, ‘‘অবশ্যই এটা একটা বড় ধাক্কা। এটা ঠিক যে কোর্টে প্রশিক্ষকের নির্দেশ আর ম্যাচ ছাড়া বাকি কিছুই মাথায় থাকে না। কিন্তু প্রতি গেমের পরে দর্শকেরা যে ভাবে উৎসাহ দেন, তা নিজের মধ্যে জয়ের তাগিদ তৈরি করে। কিন্তু কিছু তো করারও নেই। সবই তো খেলোয়াড়দের সুরক্ষার কথা ভেবে। আশা করি, ভক্তেরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে, গণমাধ্যমে পাশে থেকে সমর্থন করবেন।’’
দর্শকদের এই অভাব পূরণের জন্য হায়দরাবাদে গাচ্চিবৌলি স্টেডিয়ামে রোজ একা অনুশীলন করে নিজেকে তৈরি করেছেন সিন্ধু। তাঁর কথায়, ‘‘দর্শকহীন স্টেডিয়ামের জন্য ওই প্রস্তুতি নিয়েছি। এ ছাড়াও মনকে একাগ্র রাখতে ধ্যান করেছি নিয়মিত। এগুলো কাজে লাগবে।’’ ২৫ জুলাই অলিম্পিক্সে প্রথম ম্যাচ সিন্ধুর। বিপক্ষ ইজরায়েলের পলিকারপোভা সেনিয়া। সিন্ধু বলেছেন,‘‘বাছাই পর্বের প্রতিযোগিতা না হতে পারায় অনেকেই অলিম্পিক্সে এ বার যেতে পারছেন না। অথচ এখানেই সবাই যেতে চায়। কিন্তু কিছু তো করার নেই।’’
ভারতের সঙ্গে জাপানের আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাসে পার্থক্য রয়েছে। যদিও তা নিয়ে ভাবতে নারাজ সিন্ধু। বলছেন, ‘‘আমার শহর হায়দরাবাদের মতো টোকিয়োতেও এখন গরম চলছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গত কয়েক বছরে খেলার সুবাদে ভিন্ন আবহাওয়া ও খাদ্যাভ্যাসে আমি রপ্ত। অসুবিধা হবে না।’’