খেতাব জয়ের পরে সিন্ধু। ছবি: এএফপি।
গত দু’টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতার কাছাকাছি এসেও সোনা জিততে পারেননি পিভি সিন্ধু। রুপো জিতে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তাঁকে।
রবিবার বাসেলে সিন্ধু জবাব দিলেন সেই সব সমালোচকদের, যাঁরা সোনা হাতছাড়া করার পরে সিন্ধুকে ক্ষতবিক্ষত করেছিলেন। তাঁর মানসিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। সমালোচকদের নখ-দাঁতে রক্তাক্ত হয়েছিলেন সিন্ধু। কিন্তু, সেই সব সমালোচকদের উদ্দেশে সেই সময়ে একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি।
রবিবার ঝড়ের বেগে সোনা জেতার পরে ব্যাডমিন্টন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশনের ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্ষোভ উগরে দেন রিও অলিম্পিক্সের রুপো জয়ী। সিন্ধু বলেন, ‘‘আমাকে নিয়ে যাঁরা প্রশ্নের পর প্রশ্ন তুলেছিলেন, সোনা জিতে তাঁদেরকেই উত্তর দিলাম। র্যাকেটের মাধ্যমে আমি জবাব দিতে চেয়েছিলাম। এর বেশি কিছু চাইনি। সেটাই হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: শুভেচ্ছায় ভাসলেন সিন্ধু, ‘তুমি অনুপ্রেরণা’ বললেন প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন: রেকর্ডের অপর নাম! বিধ্বংসী সিন্ধুর এই কীর্তিগুলো মনে পড়ে?
সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য সিন্ধু নিজেকে কঠিন অনুশীলনে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। নিজের খেলার টেকনিক বদলে ফেলেছিলেন। ফিটনেসের দিকেও নজর দিয়েছিলেন। সিন্ধু বলেন, ‘‘প্রথম বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পরে আমার সমালোচনা করা হয়েছিল। আমার খুব খারাপ লেগেছিল। গত বছরও আমাকে সমালোচিত হতে হয়েছিল। সেই সব শুনে আমার খুব রাগ হয়েছিল। খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। মনে মনে নিজেকে প্রশ্ন করতাম, সিন্ধু, তুমি এই একটা ম্যাচ জিততে পার না কেন? ফাইনালের আগে নিজেকে বলছিলাম, নিজের সহজাত খেলাটা খেলতে হবে।’’ ওকুহারার বিরুদ্ধে সিন্ধু আগ্রাসী ব্যাডমিন্টন খেলেন। পুলেল্লা গোপীচন্দের ছাত্রীকে আর থামানো যায়নি।
রিও অলিম্পিক্সে স্পেনের ক্যারোলিনা মারিনের কাছে হারতে হয়েছিল সিন্ধুকে। সেই বারের অলিম্পিক্সের পর থেকেই হায়দরাবাদি তারকাকে নিয়ে দেশবাসীর প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। সিন্ধু বলছেন, ‘‘সবাই আমার কাছ থেকে এই জয়টাই চাইছিলেন। রিও অলিম্পিক্স থেকে রুপো জেতার পরে আমাকে নিয়ে প্রত্যাশার পারদ চড়তে শুরু করে দিয়েছিল। টুর্নামেন্টে খেলতে নামার আগে সবাই চাইতেন আমি সোনা জিতি।’’
এই প্রত্যাশার চাপ কীভাবে তিনি কাটিয়ে উঠবেন, তা নিয়ে ভাবতেন সিন্ধু। চাপ বাড়ত তাঁর উপরে। সিন্ধু বলেন, ‘‘আমি স্থির করে নিয়েছিলাম একশো শতাংশ দিলে ম্যাচ জিতবই। অন্যদের কথা ভাবার দরকার নেই। কারণ অন্যদের কথা ভাবতে বসলে আমার উপরে চাপ বাড়ত।’’ চাপ বাড়লে নিজের সহজাত খেলাটা খেলতে পারতেন না সিন্ধু। বাসেলে জেতার পরে ইতিমধ্যেই সবাই প্রশ্ন করতে শুরু করে দিয়েছেন, ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিক্সে সোনা জিতবেন তো? সিন্ধু বলছেন, ‘‘অলিম্পিক্সের খুব বেশি দেরি নেই। তবে ধাপে ধাপে এগোতে হবে। আমি এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের জয়টাই উপভোগ করতে চাই। বেশি কিছু ভাবতে চাই না।’’
সিন্ধু পুরোদস্তুর পারফরমার। পারফরমারদের সমালোচনা করতে নেই।