কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের এফআইআরের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে কুস্তি কর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে। তদন্তের গতি নিয়ে খুশি নন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগটরা। দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা।
শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন প্রতিবাদী কুস্তিগিরেরা। সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে শাহের বাসভবনে শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক হয়েছে।
শনিবার রাত ১১টার সময় শাহের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয় প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের। বজরং, সাক্ষী-সহ চার জন কুস্তিগির শাহের বাসভবনে গিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের বক্তব্য মন দিয়ে শুনেছেন। তদন্তের গতি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাক্ষীরা। কুস্তিগিরদের আশ্বস্ত করে শাহ বলেছেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে।’’ এর আগে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর আশ্বাস দিয়ে বজরং, সাক্ষীদের বলেছিলেন, ‘‘সব অভিযোগের তদন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে।’’ শাহের আশ্বাস নিয়ে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। তিনি বলেছেন, ‘‘অমিত শাহ কুস্তিগিরদের সঙ্গে দেখা করেছেন। কুস্তিগিরেরা সমস্যা সমাধানের আশায় রয়েছেন। আমার অনুমান, কোনও গ্রেফতার হবে না। দুর্বল একটা চার্জশিট দেওয়া হবে। ব্রিজভূষণ জামিন পেয়ে যাবেন। তার পর তাঁরা বলবেন, বিষয়টি এখন বিচারাধীন।’’
ক্রীড়ামন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও কেন্দ্র বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করায় আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়েছিলেন কুস্তিগিরেরা। বজরং, সাক্ষী, বিনেশরা হরিদ্বারে গিয়েছিলেন গঙ্গায় পদক ভাসিয়ে দেওয়ার জন্য। যদিও ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েতের হস্তক্ষেপে তাঁরা গঙ্গায় পদক ভাসাননি। কেন্দ্রকে ৯ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন টিকায়েত। তার মধ্যে অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ গ্রেফতার না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৃষক নেতা। প্রথম থেকেই কুস্তিগিরদের পাশে রয়েছেন পঞ্জাব, হরিয়ানার খাপ পঞ্চায়েত এবং কৃষক সংগঠনগুলির নেতারা।
নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিন উত্তেজনার পর দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। নতুন করে কোথাও ধর্না শুরু করেননি বজরং, সাক্ষীরা। তাঁরা আপাতত ভারতীয় রেলের দফতরে নিজেদের কাজে যোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তদন্তের গতিপ্রকৃতি এবং কেন্দ্রের ভূমিকার দিকে লক্ষ রাখছেন। তাঁদের অভিযোগ, নানা অছিলায় বিভিন্ন সময় মহিলা খেলোয়াড়দের হেনস্থা করেছেন ব্রিজভূষণ। তাঁর বিরুদ্ধে দু’টি এফআইআর করা হয়েছে। কুস্তি কর্তাকে গ্রেফতার করার দাবি করেছেন তাঁরা।
কুস্তি কর্তা অবশ্য প্রথম থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাল্টা শক্তি প্রদর্শনে আগামী ১১ জুন নিজের লোকসভা কেন্দ্র উত্তরপ্রদেশের কর্নেলগঞ্জে একটি পদযাত্রা করবেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তিকে সামনে রেখে পদাযাত্রার কথা বলা হলেও ছ’বারের বিজেপি সাংসদ আসলে নিজের শক্তি এবং তাঁর প্রতি সমর্থনের নজির তুলে ধরতে চান। এর আগে ৫ জুন অযোধ্যায় পদযাত্রা করার কথা বলেছিলেন ব্রিজভূষণ। জেলা প্রশাসনের অনুমতি পাননি তিনি।