টি টোয়েন্টি সিরিজ দাপটে জিতেছে বিরাট কোহালির ভারত। ওয়ানডে সিরিজ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কি প্রতিশোধ নিতে পারবে? তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের বল গড়াচ্ছে আজ থেকে। প্রথম ম্যাচ চেন্নাইয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম এগারো কী হতে চলেছে, দেখে নেওয়া যাক।
রোহিত শর্মা: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচে শুরু থেকেই ঝড় তুলেছিলেন রোহিত শর্মা। ওয়াংখেড়েতে ৩৪ বলে ৭১ রানের বিধ্বংসী খেলেছিলেন ‘হিটম্যান’। ছন্দে থাকা রোহিত সব সময়েই বিপক্ষের কাছে ভয়ের কারণ। কিন্তু চেন্নাইয়ে রোহিত ক্রিজে সেট হয়েও ৩৬ রানে ফিরে গিয়েছিলেন।
লোকেশ রাহুল: টি টোয়েন্টি সিরিজে একটি ম্যাচে স্রেফ রানই পাননি লোকেশ রাহুল। সিরিজের প্রথম ও তৃতীয় টি টোয়েন্টিতে দলের ভরসা হয়ে উঠেছিলেন এই ওপেনার। মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচে তো রাহুল অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছিলেন। কিন্তু প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে রাহুল শুরুতেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন। করেন মোটে ছয়।
বিরাট কোহালি (অধিনায়ক): টি টোয়েন্টি সিরিজেই বিরাট কোহালি বুঝিয়ে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলারদের কাছে তিনি দুঃস্বপ্ন। হায়দরাবাদের প্রথম টি টোয়েন্টি এবং মুম্বইয়ের সিরিজ নির্ণায়ক ম্যাচে ‘কিং কোহালি’কে থামাতে পারেননি ক্যারিবিয়ানরা। তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজে কোহালি ও কেসরিক উইলিয়ামসের টক্কর ছিল দেখার মতো। কিন্তু চেন্নাইয়ে প্রথম একদিনের ম্যাচে মন্থর উইকেটের জন্য ভুগতে হয়েছিল কোহালিকে। তিনি বোল্ড হন মাত্র চার রানে।
শ্রেয়াস আইয়ার: দেশের প্রাক্তন প্রধান কোচ অনিল কুম্বলে জানিয়েছিলে যে শ্রেয়াস আইয়ারকে চার নম্বরে দেখতে চান তিনি। আর চেন্নাইয়ে চার নম্বরে নেমে শ্রেয়াস আইয়ার নির্ভরতা দিয়েওছিলেন দলকে। কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে টেনেছিলেন তিনি। কিন্তু বড় ইনিংস চাই তাঁর ব্যাটে।
ঋষভ পন্থ: আরও একটা সিরিজে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছেন দিল্লির উইকেটকিপার। টি টোয়েন্টি সিরিজে দলের প্রয়োজনে রান করতে পারেননি পন্থ। তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছিল সমালোচনা। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে কিন্তু জ্বলে উঠেছেন তিনি। দায়িত্ব নিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করেছেন দলকে। তাঁকেও এ বার বড় রান করতে হবে।
শিবম দুবে: হার্দিক পাণ্ড্য নেই। ফলে সুযোগ পেয়েছেন মুম্বইয়ের আক্রমণাত্মক অলরাউন্ডার শিবম দুবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সদ্য সমাপ্ত টি টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠেছিলেন শিবম দুবে। ওয়ানডে সিরিজে ব্যাটে-বলে তাঁর কাছ থেকে দাপুটে পারফরম্যান্স চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
রবীন্দ্র জাডেজা: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রামে ছিলেন। কিন্তু টেস্টে দারুণ ফর্মে ছিলেন তিনি। ব্যাট হাতেও ভরসা। ফিল্ডিংয়ে তিনি আবার বিশ্বের সেরাদের মধ্যেই পড়েন। জাডেজা দলে থাকলে কোহালির হাতে বিকল্প বাড়ে। কিন্তু চেন্নাইয়ে তাঁর বোলিং কাজে আসেনি।
দীপক চাহার: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ টি-টোয়েন্টিতে সাত রানে ছয় উইকেট নিয়েছিলেন। করেছিলেন হ্যাটট্রিক। সেই পারফরম্যান্সের জন্যই ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে ডাক পেয়েছেন চাহার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি সিরিজে যদিও সে ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি চহার। চেন্নাইয়ে চাহার অবশ্য বাকিদের তুলনায় ভাল বল করেছেন।
মহম্মদ শামি: ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে সিরিজ নির্ণায়ক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলেছিলেন। কেন তাঁকে সবাই প্রশংসা করে, সেটা বুঝিয়ে দেন ওয়াংখেড়েতে অনুষ্ঠিত সেই ম্য়াচে। কিন্তু চিপকে শামিকে আগুনে ফর্মে পাওয়া যায়নি। আজ তাঁকে পুরনো মেজাজে দেখতে চাইছে দল।
কুলদীপ যাদব: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে খারাপ বল করেননি চায়নাম্যান। রান কম দিয়েছেন। তবে উইকেট পাননি। কিন্তু তাঁর কাছে উইকেটই চাইছে দল। মাঝের ওভারগুলোয়া বিপক্ষ ইনিংসে চাপ বাড়াতে উইকেট নিতেই হবে কুলদীপকে।
যুজবেন্দ্র চহাল: কুলদীপকে পাশে পেলে চহাল হয়ে ওঠেন ভয়ঙ্কর। ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে চহালকে খেলানো হয়নি। বিশাখাপত্তনমে তাঁকে খেলানোর দাবি তাই জোরাল। আর ‘কুল-চা’ জুটি ছন্দে থাকলে মাঝের ওভারগুলোয় চাপ বাড়ে বিপক্ষের উপর।