পৃথ্বী শ। ছবি এএফপি
বৃহস্পতিবার টিভিতে চোখ রেখেছিলেন গোটা মহল্লার সকলেই। রাজকোটে তাঁদের পাড়ার ছেলে পৃথ্বী শ-র টেস্ট অভিষেক দেখবেন বলে। কিন্তু পাড়ার ছেলে যে প্রথম টেস্টেই ১৩৪ রান করে আলোড়ন ফেলে দেবেন, ভাবতে পারেননি কেউ।
মুম্বইয়ে জন্ম হলেও বিহারের গয়ার মানপুরের শিবচরণ লেনের বাসিন্দা সাউ পরিবারের সন্তান পৃথ্বী। সেখানেই কাপড়ের দোকান রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন তারকার দাদু অশোক শ-র। তাঁর একমাত্র ছেলে পঙ্কজ শ-ও কাপড়ের ব্যবসা করতে নব্বইয়ের দশকে গয়া ছেড়ে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন। মুম্বইয়ের বিরার এলাকায় তাঁর ব্যবসা। সেখানেই ১৯৯৯ সালে জন্ম পৃথ্বীর। চার বছর বয়সে মা মারা যায় তাঁর। তারপর থেকে ছেলেকে একাই মানুষ করেছেন পঙ্কজ। বছরে এক বার ছেলেকে নিয়ে গয়াতে মা-বাবার কাছে আসতেন তিনি। পঙ্কজের বাবা অশোকবাবু এবং মা রামদুলারিদেবী এখনও গয়াতেই থাকেন।
আনন্দবাজারের সাংবাদিকের ফোন পেয়ে আপ্লুত ষাটোর্ধ্ব অশোকবাবু বলছিলেন, ‘‘আমাদের পরিবারের নাম উজ্জ্বল করেছে পৃথ্বী। শৈশবে মাকে হারানো ছেলেটার জন্য সে ভাবে আমি কিছুই করতে পারিনি। এটা ভেবে খুব কষ্ট হয়।’’ তিনি জানিয়েছেন, গত বছরই হার্টের অস্ত্রোপচারের জন্য মুম্বই গিয়েছিলেন। সে সময়ে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক হয়েছিলেন পৃথ্বী। অশোকবাবু বলছিলেন, ‘‘আমার কাছে এসে পৃথ্বী বলল, দাদাজি আশীর্বাদ করো যাতে আরও উন্নতি করতে পারি।’’ জানালেন, তিন বছর বয়সে তিনিই ব্যাট-বল কিনে দিয়েছিলেন পৃথ্বীকে।
বৃহস্পতিবার রাজকোটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পৃথ্বীর শতরানের পরেই পড়শিদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন অশোকবাবু। তারপরে গোটা মহল্লাই জুটে যায় তাঁর দোকানের সামনে। ব্যান্ডপার্টি ভাড়া করে শুরু হয় নাচগানও। স্থানীয় বাসিন্দা মণীশ কুমার বলছিলেন, ‘‘পৃথ্বীকে দু-এক বার দেখেছি। কম কথা বলত। পাড়ার ছেলে ভারতীয় ক্রিকেটের তারকা হয়ে উঠেছে, ভাবতেই ভাল লাগছে।’’